হাইকোর্টে বিএনপি নেতা খোকন ও মিলনের জামিন

আগের সংবাদ

ভোটের আগাম প্রচারে আ.লীগ : সভা-সমাবেশে উন্নয়ন তুলে ধরে নৌকায় ভোট চাওয়া হচ্ছে

পরের সংবাদ

স্থাপনা নির্মাণ ও নদী দখল : চলনবিল এখন মরা বিল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : মানুষের প্রয়োজনে উন্নয়নের ধাক্কায় এক সময়ের প্রমত্ত চলনবিলের চলন থেমে গেছে। খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত হয়ে এখন মরা বিলে পরিণত হয়েছে। ফলে হারিয়ে গেছে চলনবিলের ঐতিহ্য সুস্বাদু নানা প্রজাতির মাছ, পাখিসহ পরিবেশ বান্ধব জলজ প্রাণী আর উদ্ভিদ। জীববৈচিত্র্যের ঘটেছে অপমৃত্যু।
মূলত পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া ও বড়াইগ্রাম, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়ার আংশিক উপজেলাসহ আটটি থানাব্যাপী চলনবিলের অবস্থান। বর্তমান চলনবিলের আয়তন প্রায় ৮০০ বর্গমাইল। চলনবিলের বুক চিরে আন্তর্জাতিক, জাতীয় এবং স্থানীয় অনেক নদ-নদী, জোলা, খাল, খাড়ি প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদ-নদী, জোলা, খাল দিয়ে উজান থেকে বিপুল জলরাশি প্রবাহিত হয়ে চলনবিলের প্রাণ সঞ্চালন করে আসছে। ওইসব নদ-নদীগুলো হলো বড়াল, গুমানী, চিকনাই, আত্রাই, নন্দকুঁজা, নারোদ নদ, মরা আত্রাই, বেশানী, ভাদাই (ভাষানী), করতোয়া, ফুলজোড়, তুলশী, চেঁচুয়া, বানগঙ্গা, গুড়, বারনই, মির্জামামুদ, গোহাল, বিলসূর্য, কুমারডাঙ্গা। চলনবিলের প্রাণদায়িনী এসব গুরুত্বপূর্র্ণ নদ-নদী খাল, জোলার উপর এখন অপরিকল্পিতভাবে স্লুুইসগেট, রাবারড্যাম্প, ব্রিজ, কালভার্ট, বাঁধ, পাকা সড়ক গুচ্ছগ্রাম, আদর্শগ্রাম, আশ্রয়ণ, আবাসনসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রভাবশালী ভূমি খেকোরা অবৈধভাবে নদনদীগুলো দখল করে রেখেছে। এসব কারণে ৮০ ভাগ নাব্য হারিয়ে নদ-নদীগুলো মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমেও ২০ ভাগেরও কম পানি প্রবাহিত হয়। যার ফলে এখন আষাঢ় মাসেও চলনবিলে পানি থাকে না। চলনবিল অঞ্চলের নদ-নদীর মাঝে এখন আবাদ করা হচ্ছে নানা ফসল। চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ চলছে জোরেশোরে। এছাড়া চলনবিলের বুকের ওপর দিয়ে জাতীয় ও আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সড়ক-মহাসড়ক, বাঁধ নির্মাণ করে চলমান চলনবিলকে বহু খণ্ডে বিভক্ত করা হয়েছে। মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় চাঁচকৈড় খলিফাপাড়া থেকে আত্রাই মান্দা পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, নাটোর-সিংড়া-বগুড়া মহাসড়ক, বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক, বওসার হিজলতলা ঘাট থেকে তাড়াশ-বিনসারা নিমাইচড়া নামের বন্যনিয়ন্ত্রণ বাঁধ, তাড়াশ-বারুহাস সড়ক, তাড়াশ-সগুনা সড়ক, খুবজিপুর-বিলশা সড়ক এবং ছাইকোলা চাটমোহর বাঁধ চলনবিলকে খণ্ড খণ্ড করে অস্তিত্ব বিলীন করে ফেলেছে। চারঘাটে বড়ালের মুখে, আটঘড়িয়া বড়াল ও নন্দকুঁজা নদীর উপর ৩টি স্লুইসগেট নির্মাণ করে নদী দুইটিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমান জানান, চলনবিল রক্ষায় তাদের বেশ কয়েকটি দাবি রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে চলনবিলকে রক্ষা করতে হলে চারঘাটের বড়ালের মুখে এবং আটঘড়িয়ার বড়াল এবং নন্দকুঁজা নদীর উপর নির্মিত অপ্রশস্ত স্লুইসগেট তিনটি অপসারণ করতে হবে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। নদীর সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি স্থাপন করতে হবে। বড়াল, নন্দকুঁজা, আত্রাই, গুমানীসহ চলনবিলের বুক চিরে প্রবাহিত সকল নদ-নদী খাল পুনঃখনন করে নব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। সর্বোপরি চলনবিলে যাতে বাধাহীনভাবে পানি প্রবেশ করতে পারে সে বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়