আইনমন্ত্রী : মানবাধিকারের উন্নতি হওয়ায় র‌্যাব নতুন নিষেধাজ্ঞায় পড়েনি

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাসী-জঙ্গি একাকার : স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর যোগসাজস, দুর্গম হওয়ায় অভিযান চালানো কঠিন

পরের সংবাদ

মেহেরপুরে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ, ১ মাসে ১৩ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মেহেরপুর প্রতিনিধি : বৈরী আবহাওয়ায় মেহেরপুরে ডায়রিয়া, জ¦র ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, গত ১ মাসে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মেহেরপুর জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ জন শিশু ও বৃদ্ধ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে মেহেরপুর সদরে ৫৩ জন, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৯ জন ও মুজিবনগরে ৬ জন ভর্তি রয়েছে। একই সময়ে বহিঃবিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছে আরো প্রায় ৪০০ জন। এদের বেশির ভাগই শিশু। ভর্তিকৃত শিশুদের বেশির ভাগেরই বয়স পাঁচ বছরের নিচে। গত কয়েকদিন ধরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যায় আবু জায়েদ নামে ২ বছর বয়সের এক শিশু মেহেরপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। আবু জায়েদ গাংনীর ভাটপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।
মৃত আবু জায়েদের মা তামান্না খাতুন জানান, এক সপ্তাহ আগে বমি ও ডায়রিয়া হওয়ায় তার ছেলেকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তিন দিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠলে আবু জায়েদকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। এরপর বাড়িতে যায় সে। গত শুক্রবার রাত থেকে আবারো তার ডায়রিয়া, বমি ও জ্বর শুরু হয়। শনিবার সকালে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাকে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ঠাণ্ডাজনিত রোগীর চাপে হাসপাতালের ওয়ার্ডে জায়গা নেই। রোগীদের ঠাঁই হয়েছে মেঝেতে। এদের চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। শিশু রোগীদের চিৎকারে হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। রোগীদের স্বজনরা জানান, হাসপাতাল থেকে খাবার স্যালাইন দেয়া হলেও বাইরে থেকে কলেরার স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
কর্তব্যরত নার্সরা জানান, ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। খাবার স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। কলেরার স্যালাইন সরবরাহ না থাকায় রোগীর স্বজনদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন, ‘বর্তমানে ইনফ্লুয়েঞ্জা, ব্রঙ্কিওলাইটিস, সাইনোসাইটিস, একিউট ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। আমাদের হাসপাতালে বেডের সমস্যা আছে। অনেকেই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে চিকিৎসার কোনো ঘাটতি নেই। পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। নতুন ভবনে শিফট হলে বেডের সমস্যাটি আর থাকবে না।’ মেহেরপুর সিভিল সার্জন জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী জানান, ঠাণ্ডাজনিত রোগীর চাপ বেড়েছে। গত ১ মাসে জেলায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা অধিকাংশই বয়োবৃদ্ধ। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন ও কলেরা স্যালাইন রয়েছে। তবে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কলেরা স্যালাইন নেই। সেটার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়