আরো এক মামলায় রফিকুল মাদানীর বিচার শুরু

আগের সংবাদ

নাশকতার শঙ্কায় সতর্ক আ.লীগ : ষড়যন্ত্র ঠেকাতে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ ক্ষমতাসীন দলের, ‘পাল্টা কর্মসূচি’তে অস্বস্তি বিএনপির

পরের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান : ব্যাগ কাঁধে ঘুরে ও ফোনেই চলছে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা > তালিকাভুক্ত ২৩৫টি হলেও হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৫টি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ অফিসে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ৫টি মানি এক্সচেঞ্জের মধ্যে ৩টির কার্যালয় থাকলেও বাকি দুটি প্রতারণামূলক বা ফেরারি। অল্প সময়ে অল্প পুঁজিতে বেশি আয়ের আশায় তারা কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে অবৈধভাবে দেশি-বিদেশি মুদ্রা বেচাকেনা করছে। সিআইডি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ২৩৫টি হলেও অনুমতি ছাড়াই ব্যবসা করছে হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আবু তালহা ওরফে তাহারত ইসলাম তোহা, আছাদুল শেখ, হাছান মোল্যা, আব্দুল কুদ্দুস, হাসনাত এ চৌধুরী, শামসুল হুদা চৌধুরী ওরফে রিপন, সুমন মিয়া, তপন কুমার দাস, আব্দুল কুদ্দুস, কামরুজ্জামান রাসেল, মনিরুজ্জামান, নেওয়াজ বিশ্বাস, আবুল হাসনাত ও শাহজাহান সরকার।
এই গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ টিমের তথ্য ও সহযোগিতায় রাজধানীর গুলশান-১, মোহাম্মদপুর, রিং রোড, উত্তরার আশকোনা, এবি মার্কেট, চায়না মার্কেটে একযোগে ৫ জন বিশেষ পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ৫টি প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকায় অবৈধ। অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রাসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। গুলশানের জে এম সি এইচ প্রাইভেট লিমিটেড, মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের আলম এন্ড ব্রাদার্স ও উত্তরার আশকোনা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের তৈমুর মানি এক্সচেঞ্জের কার্যালয় পাওয়া গেলেও বাকি দুটি ফেরারি প্রতিষ্ঠান। তাদের কোনো কার্যালয় নেই। আভিযানে ১ কোটি ১১ লাখ ১৯ হাজার ৮২৬ টাকা সমমূল্যের ১৯টি দেশের বৈদেশিক মুদ্রাসহ মোট ১ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৬ টাকা জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০-৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল। এভাবে মাসে ২২ বা ২৪ কর্মদিবসে আরো কী পরিমাণ তারা ক্রয়-বিক্রয় করছেন- এর ধারণা করা যায়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ অনুযায়ী মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। বাংলাদেশে আরো ১ হাজারের বেশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
সিআইডি প্রধান বলেন, আমাদের অভিযানের কারণে অনেক অবৈধ প্রতিষ্ঠান অফিস গুটিয়ে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ঘুরে ঘুরে, ফোনে ফোনে যোগাযোগ করে ব্যবসা করছে। যার যেখানে যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা দরকার সেখানে পৌঁছে দিচ্ছে। বিনিময়ে ডলার বা অন্য বিদেশি মুদ্রার ন্যায্যমূল্যের তুলনায় বেশি টাকা নিচ্ছে।
অতিরিক্ত আইজিপি সাধারণ মানুষের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যখন কোনো কাজে, চিকিৎসা বিদেশে যাচ্ছেন তার আগে কিছু প্রক্রিয়া আছে। ভিসা পাওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংকে সেটি দেখালে বিদেশি মুদ্রা পাবেন ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তা দিতে বাধ্য। তাহলে কেন তারা অবৈধভাবে ১০০ টাকার ডলার ১১৫ বা ১২০ টাকায় কিনবেন! এটা অন্যায় ও অবৈধ। আমরা এই অবৈধ কাজকে উৎসাহিত করতে পারি না। লাগবেই যখন তখন বৈধভাবে নেব, ব্যাংক কিংবা বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থেকে নেব। তাহলে ফুলে-ফেঁপে ওঠা এসা অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।
ফোনে-ফোনে যোগাযোগ করলেই যদি একজন টাকা, বিদেশি মুদ্রা বা ডলার পেয়ে যায়, তাহলে সে কেন ব্যাংকে যাবে? যদিও প্রক্রিয়াটা অবৈধ। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের সেবার মান নিয়েও প্রশ্ন আছে। সেই সেবা বাড়ানোর কোনো তাগিদ আপনারা দিচ্ছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা প্রবাসী তারা দেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বাসায় বসেই টাকা পাঠায়। এক্ষেত্রে সময় বাঁচে ও কোনো হ্যারাসমেন্ট বা বাড়তি কোনো ভাড়া লাগে না। দেশের মানুষ ঘরে বসে টাকা পেয়ে যায়। তবে এটা অবৈধ। আমাদের দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে।
অবৈধভাবে মানি এক্সচেঞ্জ গজিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর কোনো গাফিলতি রয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মাদ আলী মিয়া বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। তবে আমাদের দেশের স্বার্থে কষ্ট করতে হবে। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার মতে, কোনো অবৈধ পথ বেছে নেয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য যে কোনো ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা যদি হুন্ডি কিংবা অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে জড়ানোর তথ্য মেলে তবে তাকেও ছাড় দেয়া হবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়