নিউমার্কেটে সংঘর্ষ : তিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পেছাল

আগের সংবাদ

নামমাত্র প্রস্তুতিতে পাঠদান : বই পায়নি অনেক শিক্ষার্থী > বই, সহায়িকা ছাড়াই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ > নোট-গাইড ছাপার তোড়জোড়

পরের সংবাদ

৩ কারণে হত্যা : রূপনগরে গৃহবধূ খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর রূপনগরে মায়া (৩৭) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- শিপন (৪৫) ও মো. আসাদুল ইসলাম (৩৫)। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও রক্তমাখা জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়। গত রবিবার গৃহবধূর ভাই মো. আওলাদ হোসেন বাদী হয়ে রূপনগর থানায় মামলা করলে ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্ষণের পর হত্যা, অর্থের লোভ ও টাইলসের কাজ না পাওয়ার ক্ষোভ- এই তিন কারণে ওই গৃহবধূ খুন হয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা পুলিশের।
এদিকে আদালত সূত্রে জানা গেছে, খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে গতকাল আদালতে হাজির করে রূপনগর থানা পুলিশ। এরপর আসামি শিপনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রূপনগর থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে আরেক আসামি আসাদুল ইসলাম স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম জবানবন্দি নেয়া শেষে তাকে কারাগারে পাঠান। আদালতে রূপনগর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা নৃপেন কুমার এ তথ্য জানান।
এর আগে গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন মোল্লার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে তিনি বলেন, আসামিরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তবে প্রকৃত কারণ কী তারা এখনো স্বীকার করেনি।
হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে ডিসি বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন দিক আমরা খতিয়ে দেখছি। আসামি দুজনের একজন ভুক্তভোগীর বাড়িতে থাকতেন। অন্য আসামি থাকতেন পাশের অপর একটি বাড়িতে।
ভুক্তভোগীর বাসায় তাদের আসা-যাওয়া ছিল। শিপন ভুক্তভোগীর ভাড়াটিয়া ছিলেন। তার বাসায় আসামি শিপনের আসা-যাওয়া ছিল। নিহতকে তারা মামি বলে ডাকতেন। আসামিরা ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর বাসায় গিয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, চুরি-ডাকাতির উদ্দেশ্যে তারা বাসায় গিয়েছিলেন কিনা বা আগে থেকে শত্রæতা ছিল কিনা এসব বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখছি। তিন তলার ভাড়াটিয়া শিপন টাইলস মিস্ত্রি ঠিক করে দিয়েছিলেন।
ভুক্তভোগী মায়া তাদের মিস্ত্রিকে কাজ না দিয়ে অন্য মিস্ত্রি ঠিক করেছিলেন। এটাও হত্যাকাণ্ডের কারণ হতে পারে। সব বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখছি। ডিসি জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
তারা কী উদ্দেশ্যে গিয়েছে আমরা এখনই বলব না। তারা খুনের কথা স্বীকার করেছে। খুনে ব্যবহৃত চাকু ও রক্তমাখা জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী যেহেতু নারী, একজন মহিলা পুলিশ অফিসার পা থেকে মাথা পর্যন্ত সুরতহাল করেছেন।
এ বিষয়ে কিছু যদি থাকে মেডিকেল রিপোর্টে আসবে। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসামিরা ধরা পড়েছে, তবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা এখনই আমরা বলতে চাচ্ছি না। তবে খুনের নেপথ্যে তিনটি মোটিভ হতে পারে। নিহত মায়ার ভাড়াটিয়ারা জানতেন তার স্বামী বিদেশ থেকে টাকা পাঠায়।
এছাড়া আরেকটা মোটিভ হতে পারে টাইলস মিস্ত্রি ঠিক করে দেয়ার পরও অন্য মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করান। অন্য মিস্ত্রিরা কেমন কাজ করেছে দেখার কথা বলে আসামিরা মায়ার বাসায় প্রবেশ করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডে দুজনই জড়িত।
তিনি আরো বলেন, ভুক্তভোগীর বাসার চালের বস্তায় টাকা ছিল। টাকা আসামিরা খুঁজে পায়নি। তারা কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে বাসায় প্রবেশ করেছে কিনা সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত সাড়ে ৩টায় রূপনগর ট ব্লকের ৩ নম্বর রোডের ৩৬ নম্বর বাসা থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়