মির্জা ফখরুল : বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গণবিরোধী

আগের সংবাদ

সতর্ক-সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি : আমানত সুদের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার > নীতি সুদহার বাড়ল > রেপো সুদহার বেড়েছে ২৫ বেসিস পয়েন্ট

পরের সংবাদ

অনুসন্ধানী শিশু…

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শিশুদের মনে যত অনুসন্ধানী প্রশ্ন বাড়বে, কৌতুহলী হবে, সে ততটাই বেশি শিখতে পারবে। আপনার শিশুকে শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করতে হলে তার কৌতুহলের ব্যাপারগুলোকে খুব ভালোভাবে প্রতিপালন করতে হবে। বলা যায় ‘ কৌতুহল’ বা ঈঁৎরড়ংরঃু এর শক্তি হচ্ছে যে এটি আপনার শিশুকে অসংখ্য সমস্যা সমাধানের পথে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে, চিন্তা এবং মতপ্রকাশের শক্তিকে উন্নত করে। আপনার শিশু যখন সচেতন হয়ে তার আশেপাশে পরিবেশ উপলব্ধি করে , তখন সে পৃথিবীর সবচেয়ে সৃজনশীল মানুষদের একজনে পরিণত হয়ে উঠতে পারে। এবার জেনে নিন আপনার শিশুর মধ্যে কৌতুহল বাড়ানোর জন্য যা যা করণীয়।

বাচ্চার আগ্রহকে সমর্থন করুন
একসময় হয়তো সে অনেক বড় কিছুই করে ফেলবে। তাই তাদের নির্দিষ্ট গন্ডিতে আবদ্ধ না রেখে মুক্ত করে দিন জ্ঞানের সমুদ্রে। মনে রাখবেন ছোট বাচ্চারা সবকিছু থেকেই শেখে। তার যেসব বিষয়ে আগ্রহ সেগুলোকে প্রাধান্য দিন। সে যদি ছড়া পছন্দ করে, তাকে প্রতিদিন ছড়া শেখান। তার যদি আঁকাআঁকির দিকে ঝোক থাকে, তাহলে তাকে আঁকাআঁকিই করতে দিন। সেই সম্পর্কিত বিভিন্ন বই কিনে দিন। আপনি যেভাবে গড়ে তুলতে চান সেভাবে না গিয়ে, সে যেভাবে গড়ে উঠছে সেভাবে গড়ে উঠতে দিন।

প্রশ্ন করতে শেখান
বাইরে হাঁটতে নিয়ে যান। আকাশ দেখান, গাছপালা দেখান। এগুলো নিয়ে কথা বলুন। “বলোতো আকাশটা কতো বড় ?” “বলোতো গাছের পাতাগুলো কেনো সবুজ হয়?” এভাবে প্রশ্ন করার মাধ্যমে আপনার বাচ্চার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ের আগ্রহ গড়ে তুলুন এবং তাকে প্রশ্ন করতে শেখান।

লাইব্রেরির সাহায্য নিন
বাচ্চাদের নিয়ে করা গবেষণাগুলোতে উঠে আসে যে, রকেট সাইন্স হোক বা কমিক বই হোক, যেটাই পড়ুক না কেন, তারা যদি তাদের আগ্রহ নিয়ে থাকে তাহলেই তাদের কৌতুহল এবং চিন্তাধারার উন্নতি সাধন ঘটে। তাই বলা যায়, বিভিন্ন ধরণের কৌতুহল মেটানোর এবং নতুন কৌতুহল সৃষ্টি করার জানালা হচ্ছে বই। আপনার বাচ্চাকে তার বয়স উপযোগী লাইব্রেরিতে নিয়ে যান। তাকে সেখানে মুক্তভাবে বই পছন্দ করতে দিন। এরপরে দুজনে মিলে একসাথে সেই বইটি পড়ুন।

প্রয়োজন কৌতুহলোদ্দীপক পরিবেশ
বাচ্চারা যতটুকুসময় চলাফেরা করে তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ সময় কোন কিছুর দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আশেপাশের জিনিসগুলো নিয়ে তারা সবসময়ই কৌতুহলী থাকে। দেয়ালে লাগানো ছবি বা পরিবারের দৈনন্দিন কার্যক্রম সবসময়ই তাদের আকর্ষণ করে। তাই আপনার সন্তানের জ্ঞানলাভের জন্য তাকে নিরাপদ খেলনা এবং পরিবেশ দিন। কিছুদিন পরপর অবশ্যই তাকে বিভিন্ন রকম নতুন নতুন খেলনা কিনে দিবেন।

নিরুৎসাহিত নয়
সবসময়য় এটা খেয়াল রাখার চেষ্টা করবেন, কোনো জিনিসটি আপনার সন্তানের আকর্ষণ কাড়ছে, কোন জিনিসটি সে শেখার চেষ্টা করছে । এরপরে সেটা শেখার জন্য একটি নিরাপদ, অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দিন। যেমন, আপনার সন্তান যদি প্রায়ই জানালা দিয়ে বাড়ি নির্মানের কাজগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখে, তাহলে তাকে নিরুৎসাহিত না করে এর কাছাকাছি কোনো একটি বিকল্প ব্যবস্থা করে দিন। এক্ষেত্রে আপনি লেগো খেলনাগুলো দিয়ে কিভাবে বাড়ি বানাতে হয় সেগুলো শেখাতে পারেন। অথবা শক্ত কাগজের বিভিন্ন পাজেল পাওয়া যায় যেগুলো সঠিকভাবে জায়গামতো বসিয়ে বাড়ি/গাড়ি নির্মাণ করা যায়, সেগুলো দিতে পারেন তাকে। এভাবে তাদের আগ্রহগুলোকে নিরুৎসাহিত না করে বিকল্প পথ খুঁজে দিন। এতে করে তাদের মধ্যে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়বে, সৃজনশীল কাজ এবং বিভিন্ন কাজের গ্রহনযোগ্য সমাধানের পথগুলো শিখতে পারবে।

সৃজনশীল কার্যক্রমে সুযোগ করে দিন
কিছু কিছু খেলনা থাকে যেগুলো একেকটি নির্দিষ্ট উপায়ে ব্যবহারের জন্য বানানো হয়ে থাকে। এছাড়া আরো কিছু খেলনা থাকে যেমন, বক্স, ব্লকস, পানি, বালু, হাড়ি-পাতিল এবং বিভিন্ন কারুশিল্প যেগুলোর কোনো নির্দিষ্ট ব্যবহার থাকেনা, বাচ্চারা তাদের কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই জিনিসগুলো দিয়ে খেলা করে। এই ধরণের খেলনাগুলো দিয়ে খেলার সুযোগ করে দিন তাদেরকে। কিভাবে খেলতে হবে এ ব্যাপারে আপনি তাদের কিছুই জানাবেন না, তারা কল্পনাশক্তিকে ব্যবহার করে এগুলো দিয়ে খেলা করবে।
এছাড়াও আরো হাজারো উপায় আছে আপনার বাচ্চার মধ্যে কৌতুহল তৈরি করার। যদি আপনারা তার পাশে থাকেন এবং সমর্থন দিয়ে যান তাকে।

জিজ্ঞাসাগুলোর সরল উত্তর দিন
প্রশ্ন করা বাচ্চাদের স্বভাব। একটু পরপরই তারা আশেপাশে যা দেখে তা নিয়েই প্রশ্ন করতে থাকে। বয়স ভেদে এসকল প্রশ্নের উত্তরগুলো বিভিন্ন রকম হয়। তাদের বোঝার ক্ষমতা অনুযায়ী প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন। এমন কোনো উত্তর দিবেন না যা তাদের কাছে অপরিষ্কার থেকে যায় বা যেটা দ্বারা তারা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয়না। বাচ্চারা কখনো কোনো প্রশ্ন করলে প্রথমে তাদের মতামত জিজ্ঞেস করবেন। এরপরে সেটার রেশ ধরে আপনি আপনার উত্তরটি দিন আড্ডা দেয়ার মত করে।

অতিরিক্ত শাসন নয়
আপনার সন্তানকে তার কাজগুলো মুক্তভাবে করতে দিন। কি করতে হবে, কি করতে হবেনা- এগুলো সবসময় বলে বেড়াবেন না। যেমন, “এই স্থানটুকু লাল রং করো”, “খেলনাগুলোকে এভাবে সাজাও” এই ধরনের নির্দেশনাগুলো সবসময় দেয়া থেকে বিরত থাকুন। তাকে নিজে থেকে চিন্তা করে জিনিসগুলো বের করতে দিন। ভরসা রাখুন, প্রায় সময়ই আপনি তার কাজ দেখে অবাক হয়ে যাবেন। আপনার বাচ্চা কি করছে তা সবসময় মেপে দেখার অভ্যাসটাকে বাদ দেয়াও একটি ভালো দিক। আপনি তার কাজটিকে মাপকাঠি না করে বরং তাকে ব্যাখ্যা করতে দিন আপনার কাছে।

মডেল : সাফিয়া

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়