প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা

আগের সংবাদ

গুচ্ছের ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়নি : অনিশ্চয়তায় ২১ হাজার শিক্ষার্থী

পরের সংবাদ

ঢাকা-বরিশাল রুট : জোয়ার ভাটায় নির্ভর করে নৌ চলাচল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : মেঘনা নদীতে তেলবাহী জাহাজ ‘সাগর নন্দিনী-২’ নিমজ্জিত হওয়ার পর নৌ সেক্টরে চরম শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বরিশাল-ঢাকা নৌপথের একাধিকস্থানে পানি কমে যাওয়া এবং ডুবোচরের সৃষ্টি হওয়ায় যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চলমান শীত মৌসুমে ঘণ কুয়াশায় একাধিক চ্যানেলে অসংখ্য মালবাহী জাহাজ আটকে থাকছে। এসব জাহাজের সঙ্গে যাত্রীবাহী জাহাজের সংঘর্ষও হয়েছে। লঞ্চের মাস্টাররা অভিযোগ করেন, ড্রেজিং বিভাগ খননের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে ঢাকা-বরিশাল নৌপথ অনেকাংশে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্র মতে, গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা-বরিশাল নৌপথের হিজলা-বাবুগঞ্জ চ্যানেলে একটি মালবাহী জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লাগে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি সুন্দরবন-১৬। এতে দুটি নৌযানেরই সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সুন্দরবন-১৬ লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, হিজলা-বাবুগঞ্জ চ্যানেলটির দেড় কিলোমিটার পথে দীর্ঘদিন ধরে পানি কমে গেছে। শেষ ভাটায় এখানে দুই মিটারের বেশি পানি থাকে না। যে কারণে প্রায় প্রতিদিনই এ স্থানে ৮-১০টি পণ্যবাহী জাহাজ আটকে থাকে।
মজিবর রহমান আরো বলেন, শুস্ক মৌসুমে পরিস্থিতি এমনই জটিল যে সাগর নন্দিনী জাহাজ ডোবার মতো আরো বড়ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর বরিশালের ড্রেজিং বিভাগ সভা করে খননের প্রতিশ্রæতি দিলেও অদ্যবর্ধি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যে কারণে প্রতিদিন লঞ্চ থামিয়ে জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে নৌপথ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমভি পারাবাত-১২ লঞ্চের মাস্টার শামীম আহমেদ বলেন, ঢাকা-বরিশাল নৌপথের চাঁদপুর অংশের মেঘনার হিজলা-বাবুগঞ্জ চ্যানেলের দেড় কিলোমিটার, শেওড়া এলাকার এক কিলোমিটার এবং বরিশাল অংশের নলবুনিয়া-বামনির চরের এক কিলোমিটার এলাকায় এখন লঞ্চ চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
নৌযান শ্রমিক ইউনিয়নের বরিশাল বিভাগীয় সভাপতি মো. হাসেম মাস্টার বলেন, ড্রেজিং বিভাগ প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে খনন করলেও তা কাজে আসছে না। ঢাকা-বরিশাল নৌপথ সংরক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে সরু হয়ে আসছে।
ড্রেজিং বিভাগ পরিকল্পিতভাবে খনন করলে এমনটা হত না। তিনি আরো বলেন, চলতি মৌসুমে এ নৌপথের বিভিন্নস্থানে পানি কমে যাওয়ায় লঞ্চ ও পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। যদিও চলতি মাসে এক সভায় ড্রেজিং বিভাগ এ নৌপথটি দ্রুত খননের প্রতিশ্রতি দিলেও এখন তা আলোর মুখ দেখেনি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের চাঁদপুরের উপপরিচালক বাকির হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে আমি কয়েকবার ড্রেজিং বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। তারা এ চ্যানেলটি খনন করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, লঞ্চ মাস্টাররা এ বিষয়ে অনেকটা বাড়িয়ে বলছেন। তারা বরিশাল বন্দরে খনন শুরু করেছেন। আরো ড্রেজার (খননযন্ত্র) আসছে। ঢাকা-বরিশাল নৌপথে এখনো খনন শুরু হয়নি। ড্রেজিং বিভাগের সার্ভে অনুযায়ী চলতি মৌসুমেই গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো খনন করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়