৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সংসদ অধিবেশন

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জ অনেক, প্রত্যয়ী আ.লীগ : অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা > সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরা ও অপপ্রচারের জবাব দেয়া

পরের সংবাদ

সেমিনারে বিএসইসি কমিশনার : অনলাইনভিত্তিক বিনিয়োগ শিক্ষা এখন সময়ের দাবি > ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০২৩

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিনিয়োগ শিক্ষাকে অর্থায়ন শিক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন- এই শিক্ষার চাহিদা এবং ধরন বয়স ও সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হচ্ছে। সশরীরে উপস্থিত হয়ে এই শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ কমে আসছে। তাই এই শিক্ষাকে হাইব্রিড পদ্ধতিতে নিয়ে যাওয়া বেশ জরুরি। ফিজিক্যাল শিক্ষার পাশাপাশি অনলাইনভিত্তিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। গতকাল অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০২৩ এর ‘বিনিয়োগ শিক্ষা ও পুঁজিবাজার’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সেমিনারে সেশন চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটের (বিএএসএম) মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. এম সাদেকুল ইসলাম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএএসএমের ফ্যাকাল্টি রিজভী আহমেদ। এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, গ্রিন ডেল্টা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াফী শফিক মিনহাজ খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।
সেমিনারে বিএসইসি কমিশনার বলেন, বিশ্লেষণ ও জেনে বুঝে বিনিয়োগ করতে চাইলে আর্থিক তথ্য জানা বেশ জরুরি। তাই সাধারণ তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে এখনো বেশ কিছু ঘাটতি আছে। এমনকি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটেও প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য পাওয়া যায় না। সেখানে তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানির সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য আপলোড করা নেই।
মূল প্রবন্ধে বিএএসএমের ফ্যাকাল্টি রিজভী আহমেদ বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষা নিয়ে যারা চিন্তা করেছে তারাই লাভবান হয়েছে। অতীতের পুঁজিবাজার ধসের মূল কারণ ছিল বিনিয়োগ শিক্ষার অভাব। মূল্যস্ফীতিসহ অন্যান্য বিষয়ের প্রভাব পুঁজিবাজারে কীভাবে পড়ে সেটাও জানতে হবে। বিনিয়োগ শিক্ষার অনেক উপকারিতা রয়েছে। মূল্যস্ফীতি হলে পুঁজিবাজারে কী ধরনের প্রভাব পড়ে এ বিষয়ে জানতে হবে। বিনিয়োগ শিক্ষা নিয়ে জানাশোনা লোকজনই পুঁজিবাজারে আসে। যেসব দেশের মানুষ গণিতে ভালো তারা বিনিয়োগ শিক্ষা বেশি বোঝে। জমানো সব টাকা দিয়ে শেয়ার কেনা উচিত না। প্রতি মাসে অল্প করে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা উচিত। এভাবে বিনিয়োগ করলে শিক্ষা পুঁজিবাজারে কাজে লাগানো যাবে।
প্যানেল আলোচনায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম বলেন, দুঃখজনকভাবে লক্ষ করছি, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। তাদের দায়িত্ব ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের গাইড করা, সচেতন করা। কিন্তু তারা তা তো করছেই না বরং ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর মতোই আচরণ করছে।
তিনি আরো বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষার ধারণা থাকলে নিজেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা সম্ভব। আর যদি কেউ রিস্ক নিতে না চায় তাহলে মিউচুয়াল ফান্ড বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারে। এছাড়া কিছু না বুঝলে তখন কোনো প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেয়া যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষার অভাব সবখানে আছে। আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান অনেক বেশি হয়, একইভাবে আবার সূচকের পতন হয়। মার্জিন লোন নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়। এছাড়া শেয়ারের দাম ওঠানামা করার জন্য সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন দায়ী না। দেশের এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো যেন টাকা নিয়ে পালাতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পুঁজিবাজারের স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ এসব কোম্পানিতে শেয়ার কারসাজির পরিমাণ বেশি হয়।
ওয়াফী শফিক মিনহাজ খান বলেন, এই খাত ¯্রােতের সঙ্গে চলছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে মিউচুয়াল ফান্ডের অনেক জনপ্রিয়তা। সেই তুলনায় আমরা এগোতে পারিনি। আমরা সবাই একসঙ্গে মিলে ইন্টারেস্টিং পদ্ধতিতে বিনিয়োগ শিক্ষা দিতে পারলে অনেক ভালো হবে। অন্য মানুষের কথা শুনেই বিনিয়োগ করা উচিত না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ ছিল। শেয়ার কারসাজির সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও জড়িত থাকেন। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ শিক্ষা থাকাটা খুবই দরকার। এক্ষেত্রে বর্তমানে বিএসইসি বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
এরপরেও অনলাইন মিডিয়াগুলোতে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি সপ্তাহে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেতে পারে। এছাড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা একসঙ্গে মিলে কাজ করলে এসব সমস্যার সমাধান হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়