ইউনেসকোর প্রতিবেদন : দেশে শিক্ষা ব্যয়ের ৭১ ভাগ বহন করে পরিবার

আগের সংবাদ

তীব্র শীতে জবুথবু জনজীবন

পরের সংবাদ

চিরনিদ্রায় শায়িত পেলে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে গত বৃহস্পতিবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ফুটবল কিংবদন্তি পেলে। এরপর তার ইচ্ছানুযায়ী যাবতীয় কার্যক্রম শেষে গত মঙ্গলবার সান্তোসে ১৪তলা বিশিষ্ট বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু সমাধিস্থল মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকায় চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাকে। এর আগে পেলের প্রিয় ক্লাব সান্তোসের মাঠে ২৪ ঘণ্টার জন্য রাখা হয় যেখানে ফুটবল স¤্রাটকে সাধারণ মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানান।
হাসপাতালে থাকা অবস্থাতেই পেলে তার শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। তার ইচ্ছানুযায়ী প্রথমে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সাও পাওলো রাজ্যের ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে। এর আগে আইন রীতি অনুযায়ী, সমাহিতের জন্য মরদেহ প্রস্তুত করা হয় আলবার্ট আইনস্টাইন স্টেডিয়াম। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় সান্তোস প্রাঙ্গণে।
স্টেডিয়ামের মাঝমাঠে তাকে শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষ। ২০ লাখের বেশি লোক তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানায় সেখানে। সেখানে তাকে রাখা হয় ২৪ ঘণ্টা। এরপর পেলের মরদেহ নিয়ে শেষযাত্রা হয় সান্তোসের রাস্তায়। কফিন বহন করে নিয়ে যাওয়া হয় কেলেস্তের সড়ক দিয়ে, যেখানে পেলের মা থাকেন। শতবর্ষী মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মঙ্গলবার পেলেকে মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকাতে আনা হয়। তারপর নবনির্বাচিত ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা ডা সিলভাও তাকে সম্মান জানান। সর্বশেষ নেকরোপোল একিউমেনিকাতে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ৯ম তলায় সমাহিত করা হয় তাকে।
পেলেকে দাফন করা হয় সান্তোসে যেখানে তিনি বেড়ে উঠেছেন। হয়েছেন ফুটবলের রাজা। যারা সান্তোসের ভক্ত নন, তারাও এসেছিলেন ব্রাজিলিয়ান লিজেন্ডকে শ্রদ্ধা জানাতে। পেলের শবদেহ রাস্তায় বের করা হলে লাখ লাখ মানুষ দূর থেকে তার জন্য হাত তুলে প্রার্থনা করতে থাকেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার পর শুরু হয় তার অন্তিমযাত্রা। সান্তোসের সবুজ গালিচায় দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শুরু হয় পেলের শবযাত্রা। পেলের কফিনের সামনে ও পেছনে ছিল পুলিশের গাড়ি ও মোটরসাইকেল। সান্তোসের স্টেডিয়াম ভিলা বেলমিরো থেকে সমাধিস্থল মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকার পর্যন্ত পুরো রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। পেলেকে যারা শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন সবার চোখেই ছিল অশ্রæ। তাদের মধ্যে ছিলেন এমন অনেক অল্পবয়সি ভক্ত- যারা জীবনে পেলেকে দেখেননি রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে আছেন হাজার হাজার ভক্ত-অনুরাগী। তার শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন ফিফা প্রেসিডেন্ট। সবাই শেষবারের মতো বিদায় জানান ফুটবলের রাজাকে। ভিলা বেলমিরো থেকে শবযাত্রা ক্যানাল-৬ সড়ক দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পেলের মায়ের কাছে।
শেষবারের মতো ছেলেকে দেখেন এবং বিদায় জানান তার শয্যাশায়ী মা সেলেস্তে আরানতেস। মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পেলের মরদেহ যায় সবচেয়ে উঁচু সমাধিস্থল মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকায়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে সেখানেই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে পেলেকে সমাহিত করা হয়।
পেলের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন শার বেশ কয়েকজন সতীর্থ। ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের ক্লোদোয়ালদো তাভারেজ দি সান্তানা ছিলেন তাদের অন্যতম। তবে তোস্তাও, জার্জিনহো, রবার্তো রিভেলিনো, অলিভিয়েরা নুনেস ও উইলসন পিয়াজ্জাদের অনুপস্থিতি সমালোচনার ঝড় তুলেছে। এবারের কাতার বিশ্বকাপ খেলা ব্রাজিলের কোনো খেলোয়াড়ই পেলের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন না। অনুপস্থিত ছিলেন ২০০২ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যরাও। কাফু, রোনালদো নাজারিওদের মতো তারকারা কেন ছিলেন না। ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কেবল মাউরো সিলভা।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন পেলে। এরপর চিকিৎসা নিয়েছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। তবে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বেশি অসুস্থ হওয়ায় সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এরপর সেখানেই ছিলেন এক মাসের মতো। হাসপাতালে থেকেই উপভোগ করেন কাতার বিশ্বকাপ। মেডিকেল সেন্টার জানিয়েছিল ক্যান্সারের কারণে বেশ কিছু অর্গ্যান কাজ করছিল না তার। এক মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে গত ২৯ ডিসেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কিংবদন্তি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়