বোটানিক্যাল গার্ডেনে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বামীর স্বীকারোক্তি

আগের সংবাদ

বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা : কী করছেন কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

কালীগঞ্জে চাঁদাবাজি ও ভাঙচুরের অভিযোগ : অবশেষে মামলা নিলেও আসামি ধরছে না পুলিশ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি : কালীগঞ্জে পর পর তিনবার থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলার নাগরী ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী লাকী গমেজ (৩৭)। অবশেষে থানায় মামলা রেকর্ড হলেও বিপাকে পড়েন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ওই নারী। ভুক্তভোগী লাকী গমেজ নাগরী ইউনিয়নের করান গ্রামের সেপু গমেজের স্ত্রী। তিনি জানান, প্রায় এক বছর আগে নাগরী ইউনিয়নের পিপুলিয়া গ্রামের মৃত বদর উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে আহম্মেদ আলীর (৩৮) কাছ থেকে ১৩ শতাংশ জমি সাবকবলা দলিল মূলে ক্রয় করেন তিনি। পরে ক্রয়কৃত জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শেষে একটি ইটের তৈরি ঘর নির্মাণ করেন। ওই জমি ক্রয়ের পর থেকেই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য কোহিনূর বেগমের নেতৃত্বে ওই ইউনিয়নের বিরুয়া গ্রামের ইন্দ্রমোহন দাসের ছেলে স্বপন দাসসহ স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও ওসি কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ লাকি গমেজের। তিনি বলেন, থানায় অভিযোগ দেয়ায় এবং দাবিকৃত চাঁদা দিতে না পারায় মহিলা ইউপি সদস্য কোহিনূর, স্বপন ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী জমির সীমানা প্রাচীর, গেট ও ইটের তৈরি ঘর ভাঙচুর এবং নির্মাণ সামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতি করে। বিষয়টি আবারো লিখিতভাবে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু এবারো ওসি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
অভিযোগের কথা শুনে বিবাদীরা উল্টো ওই মহিলা নেত্রী ও তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপায় না পেয়ে লাকী গমেজ গাজীপুর পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানান। পরে এসপির হস্তক্ষেপে ওসি তৃতীয়বারের মতো দেয়া অভিযোগ গ্রহণ করে প্রায় ৪ ঘণ্টা বাদীকে থানায় বসিয়ে রেখে অবশেষে চাঁদাবাজির মামলা নেন।
লাকী গমেজ অভিযোগ করে বলেন, মামলার তদন্তভার দেয়া হয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেনকে। তিনি বিবাদীদের সঙ্গে আঁতাত করে আসামি গ্রেপ্তার থেকে বিরত রয়েছেন। বরং বিবাদীরা এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে, তাদের ধরার মতো কেউ নেই। এছাড়া ইউপি সদস্য কোহিনূর, স্বপন ও তার লোকজন প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ বাদীর।
বিষয়টি নিয়ে নাগরী ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে সালিশে বিবাদীদের ডাকলেও তারা কেউ সেখানে যাননি।
চাঁদাবাজির মামলায় অভিযুক্ত স্বপন দাস বলেন, এখানে লাকী গমেজ কোনো জমির মালিক নন। এই জমির মালিক আমি। আমরা লাকীর কোনো বাউন্ডারি ভাংচুর করিনি। লাকী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বাউন্ডারি ভাংচুর করে উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করেছে। অভিযুক্ত মহিলা মেম্বার কোহিনূর বেগম বলেন, আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে স্বপনের ডাকে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বিরোধপূর্ণ জমির মালিক লাকী নয়, স্বপন। লাকী জমির বায়না করেছে, তাও বৈধ নয়। আমাদের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করেছে।
নাগরী ইউপি চেয়ারম্যান অলিউল ইসলাম অলি বলেন, লাকী গমেজের জমি নিয়ে পরিষদে ডাকা সালিশে বিবাদীরা অনুপস্থিত ছিল। তবে সালিশে স্বপন দাস নামে এক ব্যক্তি বিরোধপূর্ণ জমির মালিকানা দাবি করে যে দলিল দেখায়, তা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি সঠিক নয়। বরং লাকীর মালিকানা ঠিক আছে। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কামাল হোসেনকে থানায় গিয়ে না পেয়ে তার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি জানান, মামলাটি সেনসেটিভ তাই এভাবে বলা যাবে না। থানায় আসেন, মামলার কোনো আসামি ধরেছেন কিনা বা চার্জশিট দিয়েছেন কিনা-এ প্রশ্নে এসআই বলেন, এ ব্যাপারে ফোনে কিছুই বলা যাবে না। ওসি বলেন, লাকী গমেজকে হয়রানির অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি বাদী হয়ে ৬ ডিসেম্বর থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন। সেই মামলার চার্জশিট ইতোমধ্যে আদালতে পাঠানো হয়েছে। চাঁদাবাজির ধারায় চার্জশিট দেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, সেটা এই মুহূর্তে না দেখে বলা অসম্ভব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়