উকিল আবদুস সাত্তারকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি

আগের সংবাদ

মন্দা মোকাবিলায় দুই চ্যালেঞ্জ : ডলারের দাম যৌক্তিক জায়গায় রাখা > মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা

পরের সংবাদ

মিরসরাইয়ে কোটি টাকার পেয়ারা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ ইউসুফ, মিরসরাই, চট্টগ্রাম থেকে : মিরসরাইয়ে বাড়ছে পেয়ারা চাষ। থাই পেয়ারা ও স্থানীয় বাড়বকুণ্ড জাতের পেয়ারা মিরসরাইতে বেশি চাষ হয়ে থাকে। পানি জমে না এমন অপেক্ষাকৃত উঁচু জমি ও পাহাড়ে সবচেয়ে বেশি পেয়ারা চাষ করা হয়। মিরসরাইয়ে ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় কমবেশি পেয়ারা চাষ হয়ে আসছে। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ পেয়ারা সারাবছর চাহিদা থাকায় অনেকে পেয়ারা চাষে ঝুঁকছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে (৮০ একর) পেয়ারা চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৮ টন করে (প্রতি একরে ৪ টন) ৩০ হেক্টরে প্রায় ২৪০ টন পেয়ারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি পেয়ারা পাইকারি ৪০ টাকা ধরে যার বাজার মূল্য দাঁড়ায় ৯৬ লাখ টাকা। সঠিক পরিচর্যা করলে সারা বছর পেয়ারা উৎপাদন করা যায়। তাছাড়া দামে কম হওয়ায় বাজারে এখন সারা বছরই পেয়ারার চাহিদা থাকে।
স্থানীয় বাজারগুলোতে ৬০-৭০ টাকা কেজিতে পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে। উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পেয়ারা চাষ হয় করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর, খৈইয়াছড়া ও কমলদহ ইউনিয়নে। অনেক বেকার যুবক এখন অর্থকরী ফল পেয়ারা চাষে ঝুঁকছেন।
পোল্ট্রি খামারে ক্রমাগত লোকসান গুনতে গুনতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ২০১৮ সালে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগর উত্তরপাড়া গ্রামের ৩ একর জায়গায় সৈয়দ আকরাম হোসেন মিশেল, নজরুল ইসলাম নাশিদ ও সাইদুল ইসলাম ইমন পেয়ারা বাগান শুরু করেন। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিশাল পাহাড়ি এলাকাজুড়ে পেয়ারা গাছের বাগান। যেখানে ডালে ডালে ঝুলছে পলিথিনের ব্যাগ মোড়ানো পেয়ারা। বাগানে থাই গোল্ডেন-৮ ও থাই সুপার-১০ এই ২ জাতের পেয়ারা আছে। কোনো প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না, তাই ফলের রং সুন্দর থাকে এবং খেতে সুস্বাদু। পেয়ারা বাগানের ফাঁকে ফাঁকে ৬০০ মাল্টা (বারী-১), দার্জিলিং ও সাদিক এ ২ জাতের ১০০ কমলা গাছ রয়েছে। প্রতিদিন ৭-১০ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি পেয়ারার ওজন ৩০০-৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো পেয়ারা বিক্রি হয়েছে এবং এই বছরেই ১০ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি হবে বলে জানান উদ্যোক্তা সৈয়দ আকরাম হোসেন মিশেল। পেয়ারা বাগানে লাভ হওয়ায় আগামীতে আরো ২ একর জমিতে পেয়ারা, মাল্টা ও কমলা বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান এই উদ্যোক্তারা।
উদ্যোক্তা সৈয়দ আকরাম হোসেন মিশেল ভোরের কাগজকে জানান, ২০১৬ সালে পোল্ট্রি খামারে লোকসান গোনার পর ২০১৮ সালে পেয়ারা বাগান করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। ঝিনাইদহের হক এগ্রো, চুয়াডাঙ্গা ও রাজশাহীর বিভিন্ন বাগান পরিদর্শন করে ৩ একর জায়গায় ১৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৩ হাজার পেয়ারা চারা রোপণ করা হয়। এই পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো পেয়ারা বিক্রি হয়েছে এবং এ বছরেই ১০ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি হবে। প্রতিদিন ৭-১০ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি পেয়ারা ৩০০-৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। আগামীতে আরো ২ একর জমিতে পেয়ারা, মাল্টা ও কমলা বাগান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
করেরহাট ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এ এইচ এম মোমিনুল হক জানান, ৩ বন্ধুর পেয়ারা বাগানে সুফল পেতে সবরকম পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি, তারা সেগুলো মানছে এবং আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা ভোরের কাগজকে বলেন, মিরসরাইয়ে পাহাড় ও সমতল ভূমিতে প্রচুর পরিমাণে পেয়ারা চাষ হচ্ছে। চলতি বছর উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে (৮০ একর) পেয়ারা চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৮ টন করে (প্রতি একরে ৪ টন) ৩০ হেক্টরে প্রায় ২৪০ টন পেয়ারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি পেয়ারা পাইকারি ৪০ টাকা ধরে বাজার মূল্য দাঁড়ায় ৯৬ লাখ টাকা। সঠিক পরিচর্যা করলে সারা বছর পেয়ারা উৎপাদন ও বিক্রি করা যায়। পেয়ারা বিক্রি করে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা ও বেকার যুবক স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়