গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি : বরিশালের গৌরনদীতে দুবাই প্রবাসী ছেলে শাহিন সরদারের (৫০) মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে বাবা আকুবালী সরদার (৭০) স্ট্রোক করে মারা গেছেন। বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মারা যান। বাবা-ছেলের মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে এবং এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত শাহিনের লাশ দেশে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্বজনরা।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ বছর আগে চাকরির জন্য উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বাঙ্গিলা গ্রামের আকুবালী সরদারের (৭০) ছেলে শাহিন সরদার (৫০) দুবাই যান। ২/৩ বছর পরপর শাহিন ছুটি নিয়ে দেশের (বাংলাদেশ) বাড়িতে আসতেন। সর্বশেষ ছুটি শেষে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে তিনি বাড়ি থেকে পুনরায় দুবাই যান। জানা যায়, শাহিন সরদার স্ট্রোক করে গত ২২ ডিসেম্বর রাতে প্রবাসে (দুবাই) মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী চম্পা বেগম (৪০), মেয়ে রুবিনা আক্তার (১৭), ছেলে আহাদ সরদার (৭), বাবা আকুবালী সরদার (৭০) ও মা রুনি বেগমকে (৬৭) রেখে যান। আকুবালীর মামা তো ভাই রুহুল আমিন সরদার জানান, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে সহকর্মীদের মাধ্যমে শাহিনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। শাহিনের বাবা-মা, স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে বারবার মূর্ছা যায়। প্রবাসী ছেলের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে গত ২৯ ডিসেম্বর সকালে শাহিনের বাবা আকুবালী মূর্ছা গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাৎক্ষণিক তাকে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও দুপুরে বরিশাল শেরেবাংলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান। শাহিনের স্ত্রী চম্পা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ২২ ডিসেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে স্বামীর সঙ্গে সর্বশেষ মোবাইল ফোনে তার কথা হয়। তখন স্বামী তাকে জানায়, বুকের ভেতর ডান পাশে একটু ব্যথা করে। রাতে খবর পান স্ট্রোক করে তার প্রবাসী স্বামী মারা গেছেন। স্বামীর লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। বার্থী ইউপি চেয়রম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার জানান, দুবাই প্রবাসী ছেলের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে বৃদ্ধ আকুবালী সরদার স্ট্রোক করে মারা গেছেন। গত শুক্রবার বাদজুমা মরহুমের (আকুবালী) জানাজা শেষে বাঙ্গিলা গ্রামে তার লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।