প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ফল ১৪ ডিসেম্বর

আগের সংবাদ

১৭২ দেশে শ্রমবাজার : রেমিট্যান্স কমছে যে কারণে

পরের সংবাদ

মাধ্যমিক থেকেই ঝরে পড়ছে হাজার শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এআর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন (ভোলা) থেকে : দক্ষিণাঞ্চলের নদী ও সাগর বেষ্টিত কাদা জলের দ্বিপ ইউনিয়ন কুকরি-মুকরির ৭ ও ৮নং ওয়ার্ড বিচ্ছিন্ন চর-পাতিলা। এ চরে পূর্ব ও পশ্চিম বাজার, শরীফপাড়া, পাতিলা এবং উত্তরকান্দী নামের ৫টি গ্রাম মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার মানুষের বসবাস। যেখানে স্কুলগামী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজারের বেশি তবে কিছু সংখ্যক শিশু শিক্ষার্থী প্রাথমিকের গন্ডি পার হলেও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার মূল ধারা থেকে ঝরে পড়ছে।
এ অঞ্চলের প্রায় এক হাজার পরিবারের শিশু ও কিশোরেরা শিক্ষা বঞ্চিত হয়ে অল্প বয়সেই নদী ও সাগরে মৎস্য শিকারে চলে যাচ্ছে স্বজনদের সঙ্গে। ফলে দিন দিন বাড়ছে নিরক্ষরতার হার। এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও অবকাঠামো ছোট এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেশি।
এছাড়া ওই চরের আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় অপ্রতুল বলে জানান স্থানীয়রা। বিচ্ছিন্ন এ চরটিতে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে নৌপথ ছাড়া যোগাযোগের অন্য কোনো মাধ্যম না থাকায় শিশু কিশোরদের চরফ্যাশন শহরে পাঠিয়ে শিক্ষা দিতে রাজি না পরিবার।
জল ও স্থল মিলিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় লাগে পাতিলা থেকে দক্ষিণ আইচা থানায় আসতে। এছাড়া ৮০ ভাগ জেলে পেশার পরিবার আর্থিক অনটনে ও দূরের শহরে পাঠিয়ে লেখাপড়ার খরচ যোগানে অক্ষম। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সন্তানের ভবিষ্যত গড়তে পারছে না এসব পরিবার।
পড়ালেখা ও কাজকর্ম না থাকায় এ চরের কিশোরীরাও পরিবারে বোঝার মতো। তাই অল্প বয়সেই এ অঞ্চলের কিশোরীদের বিয়ে দিয়ে দেয় তাদের পরিবার। চরের কিশোর, কিশোরীরা লেখাপড়ার মাঝে থাকলে অন্তত বাল্যবিয়ে ও মাদকসহ অন্যান্য অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে মুক্তি পেত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচএম ইউসুফ জানান, অন্ধকারে নিমজ্জিত চর পাতিলার কোমলমতি শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতেই এ স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে এখানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা একশ জন। প্রতিষ্ঠানটি সরকারের সহায়তা পেলে এখানকার শিশু কিশোররা সবার জন্য শিক্ষা অন্তত এ জায়গাটি থেকে বঞ্চিত হবে না এবং তারা সমাজের মূল ধারায় অংশ নিতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কুকরি-মুকরি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, চর-পাতিলায় মাত্র একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা ও এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় এ চরে নিরক্ষরতার হার ক্রমেই বাড়ছে।
০ুকর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই এখানে যেন চরাঞ্চলের ক্যাটাগড়িতে আরো একটি প্রাথমিক ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন শিক্ষা ব্যবস্থায় শতভাগ নিরক্ষর মুক্ত বাংলাদেশ গড়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়