নাইক্ষ্যংছড়ি : ডিজিএফআই কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় মামলা

আগের সংবাদ

তিন কারণে ভালো ফলাফল : সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, প্রশ্নপত্রে সুবিধা ও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের প্রভাবে পাসের হার বেড়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায়

পরের সংবাদ

শিশু আয়াত হত্যা : মরদেহের খোঁজে দিনভর পিবিআই টিমের তল্লাশি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামসহ সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী শিশু আলীনা ইসলাম আয়াত খুনের আসামিকে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রবিবারও চট্টগ্রামে বিভিন্ন সংগঠন সমাবেশ করেছে। বে-টার্মিনাল সংলগ্ন বেড়িবাঁধ ও স্লুইসগেট এলাকায় যে স্থানে পানিতে আয়াতের খণ্ডিত মরদেহ ফেলেছিল বলে আবির আলী দাবি করেছে সেখানেও পিবিআইয়ের টিম তন্ন তন্ন করে রবিবার দিনভর তল্লাশি করেছে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া আসামি আবির আলীকে সঙ্গে নিয়েই এ সময় তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে কয়েকশ লোক জড়ো হয়ে আবিরের ফাঁসির দাবিতে স্লোগানও দিয়েছে। পিবিআই টিম আবিরকে নিয়ে তার মায়ের বাসায় তল্লাশি করে যে ধারালো অস্ত্র (কাটার) দিয়ে মৃত আয়াতকে খণ্ড বিখণ্ড করেছে সেটি, একটি ডায়েরিসহ বেশ কিছু আলামত জব্দ করেছে।
সেই ডায়েরিতে লেখা ছিল- ‘আমার দরকার টাকা-পয়সা, স্বপ্ন বড়লোক হওয়ার..’। তবে সবকিছুই যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই তদন্ত টিমের সদস্য ইন্সপেক্টর ইলিয়াস খান।
গত ২৪ নভেম্বর গ্রেপ্তারের পর আবির আলী দাবি করেছিল, আয়াতের মরদেহ ছয় টুকরোর মধ্যে প্যাকেটবন্দি তিন টুকরো নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের শেষপ্রান্তে বেড়িবাঁধের পর আউটার রিং রোড সংলগ্ন বে-টার্মিনাল এলাকায় সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছিল। বাকি তিন টুকরো একইভাবে আকমল আলী রোডের শেষপ্রান্তে একটি নালায় স্লুইসগেটের প্রবেশমুখে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু রবিবার সেখানে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কিছু পায়নি পিবিআইয়ের টিম।
রবিবার দুপুরে আবির আলীকে নিয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর এসপি নাঈমা সুলতানের নেতৃত্বে টিম যখন সেই স্থানগুলোতে যায়, তখন আয়াতের বাবাসহ স্বজনরা দেখে সেখানে বুক চাপড়ে আহাজারি শুরু করেন। আয়াতের বাবা সোহেল রানা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘সে (আবির) মিথ্যা কথা বলছে। তাকে ভালোভাবে রিমান্ডে নিলে সে আমার মেয়ের লাশ কোথায় ফেলেছে দেখিয়ে দেবে। আমার মেয়েটার কী অপরাধ ছিল? কেন তার লাশ পাচ্ছি না। কোথায় লাশ? কিছু আলামত পেলে মনকে বোঝাতে পারতাম।’ আয়াতের দাদা মনজুর আলম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘তার (আবির) মা আর বোন সব জানে। সেই বাসায় একটা মানুষকে সে কেটে রেখে দিল আর তার মা-বোন জানবে না, এটা হয় না। পুলিশ তার মা-বোনকে গ্রেপ্তার করছে না কেন? সঠিক তথ্য কেন বের করা হচ্ছে না?’
আয়াতের বাবা-নানার আহাজারিতে সমবেত লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে তাদের সান্ত¡না দিয়ে শান্ত করেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা। তিনি স্বজনদের উদ্দেশে বলেন, ‘আবির যে আপনাদের বাসা থেকে কালো ব্যাগ নিয়ে বের হয়েছে, সেটা তো আপনারা দেখেছেন। তাহলে ঘটনার পর তাকে আপনারা কিছু জিজ্ঞেস করেননি কেন? আপনারা তো তাকে সন্দেহের কথাও আমাদের বলেননি। তিনি তাদের বলেন, সে যতটুকু তথ্য আমাদের দিয়েছে আমরা সেই অনুসারে আগাচ্ছি। আমরা চাই, একটা রেজাল্ট আসুক। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন।’
আবির আলী (১৯) নগরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার ভাড়াটে বাসিন্দা আজহারুল ইসলামের ছেলে। তাদের বাড়ি রংপুর জেলায়।
শিশু আয়াতকে খুনের মামলায় তার সম্পৃক্ততার তথ্য প্রমাণ পাওয়ার পর গত ২৪ নভেম্বর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। ২৬ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির করে ওই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আবির আলী শিশু আয়াতকে অপহরণ ও হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পিবিআই কর্মকর্তাদের কাছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়