এইচএসসির বিতর্কিত প্রশ্ন, প্রণেতারা শাস্তি পেলেন : আর কোনো পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব নয়

আগের সংবাদ

স্বাচিপের পঞ্চম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : চাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা

পরের সংবাদ

পাখি হয়ে ডানা মেলা হলো না তার!

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সেটা ছিল বিদায়ী শীতের এক ছাইরঙা বিকেল। ধূসর বরণের আকাশে পরিযায়ী পাখিদের ঝাঁককে কখনো-সখনো উড়ে যেতে দেখা যায়। ইতোমধ্যে আলী ইমাম জেনে গেছেন- এসব হচ্ছে অতিথি পাখি। বহু দূরের পথ পেরিয়ে এ সময় বাংলাদেশের বিলে-ঝিলে আর জলাভূমিতে এসে আশ্রয় নেয়। তিনি অনুভব করেন, দূরাগত বুনো হাঁসের ঝাঁক চিরচেনা একঘেঁয়ে শহরের আকাশের দৃশ্যপটকে রীতিমতো বদলে দিয়ে যাচ্ছে। ভেতরে ভেতরে এক রকম উত্তেজনা অনুভব করতে থাকেন তিনি।
১৯৬৫ সাল। তখন তিনি স্কুলের শেষ ক্লাসের ছাত্র। ‘ভাস্কর কচিকাঁচার মেলা’র পাঠাগার পরিচালনার দায়িত্ব আসে তার ওপর। স্কুল ছুটির পর প্রবল আনন্দে পাঠাগারের ছোট্ট ঘরটিতে বসে বসে সদস্যদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের বই ইস্যু করেন। কাঠের আলমারির তাকে সাজানো রয়েছে থরেথরে বই। ‘দেব সাহিত্য কুটির’-এর বই বেশি। আবছা আলোর ভেতরে সে বইগুলো তার চোখে জোনাকি হয়ে যায়। কখনো কখনো নীল সমুদ্রের ঢেউ হয়ে যায়। কী যে তীব্র আকর্ষণ ছড়িয়ে রয়েছে ওই বইগুলোর পাতায় পাতায়। তিনি তখন মুগ্ধ আর আচ্ছন্ন। যেনবা সন্ধান পেয়ে গেছেন এক সোনালি আলোভরা ভুবনের। এখন তার কাছে প্রিয় সময় হচ্ছে বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকা। অবিরাম গ্রন্থপাঠের ফলে তখন ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে তার মনের গাঁথুনি। কোনো কোনো বই পাঠ করে এক ঘোরলাগা মুহূর্তের ভেতরে সমর্পিত হতেন। ওই সব গ্রন্থের ধূসর পাতাগুলো কী এক আশ্চর্য উপায়ে যেন বনভূমির প্রান্তর হয়ে উদ্ভাসিত হতো। দেখতেন বুনো ঝোপঝাড়ের ওপর ঝিলমিল করে উড়ছে অসংখ্য প্রজাপতি। তাদের রঙিন ডানা থিরথির করে কাঁপছে। কত যে অপূর্ব নকশা রয়েছে প্রজাপতিদের ডানায়। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সেই যে মন উতল করা গান ‘প্রজাপতি, প্রজাপতি, পাখায় পাখায় রং ছড়ায়।’
তখন আলী ইমাম ছড়িয়ে দেন ছন্দের রং-

লাউ ডগাতে কুটুম পাখি উড়ে
এসে বসে। তারপরে যায় দূরে
অনেক দূরে। ভাবে ফিরে এসে
লাউ ডগাটির সবুজে যায় ভেসে।

তখন বেশ বুঝতে পারছিলেন- তার চারপাশের ধূসর, ছাইরঙা সীমাবদ্ধ পৃথিবীটা ক্রমে পালটে যেতে থাকল। বদলে যেতে থাকল। ধূসরতার মাঝে ছলকে যেতে থাকল রঙের ছোপ। বিচিত্র রঙের ভুবন উদ্ভাসিত হয়ে উঠতে থাকল। তিনি মুগ্ধ চোখে দেখতে থাকেন দূরাগত পাখিদের। বুঝতে পারেন মন ঢেলে অবিরাম বই পড়ার জন্য তার মনের মাঝে জমে থাকা গøানিগুলো ক্রমশ কেটে যাচ্ছে। পাহাড়ি ঝরনার স্রোতধারার প্রভাবে তা প্রসন্ন হয়ে উঠতে থাকে।
এক সময় তিনি কবিতার প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘সাগর থেকে ফেরা’ বুকের ভেতরে উদাসী সুরের তীব্র ঝঙ্কার তোলে। কবিতা গ্রন্থের ভেতরে উড়ন্ত গাঙচিলের ডানার কম্পন শুনতে পেলেন। একটি কবিতা যেন একরাশ আলোর ফুল হয়ে তার চেতনাকে উদ্ভাসিত করে তুলল। সেই কবিতার শেষ পঙ্ক্তিগুলো সারাক্ষণ তার ভেতরে গুনগুন করে উঠতে থাকল। ‘কী যেন কী জানি না তো মন দিয়ে জানতে না জানতে। স্টিমার পৌঁছে যায় আজ-কাল-পরশুর প্রান্তে।’
সামুদ্রিক পাখিদের অবাধ ওড়াউড়ি শব্দ যেন শুনতে পান আলী ইমাম। কী যে দারুণ রহস্য মিশে রয়েছে কবিতার ওই লাইনগুলোর মাঝে। নীল সাগরের ঢেউ কেটে ভেসে চলেছে কোন্ সে অলৌকিক স্টিমার। ওই স্টিমার কী ঘন কুয়াশার জমাটবাঁধা পর্দা ছিঁড়ে এসেছে? আজ-কাল-পরশুর প্রান্তে, এ কথাগুলো মানেই-বা কী? কোন্ ইঙ্গিতবাহী অর্থ লুকিয়ে রয়েছে এই শব্দপুঞ্জে? যেনবা লেগেছে অমল-ধবল পালে মিষ্টি মধুর হাওয়া। সমুদ্রের কলোকলো শব্দ শুনতে পান তিনিও। নাবিকের মতো হয়ে যায় তার দৃষ্টিভঙ্গি। চেনা শব্দগুলো কী রকম অচেনা হয়ে উঠতে থাকল। শরীর তার জড়িয়ে নিচ্ছে কুয়াশা। আলো-ছায়ার আঁকিবুঁকি নকশার দাগ হয়ে ঘনীভূত হচ্ছিলেন তিনি। দূরাগত আভাস অনুভব করতে থাকেন। ‘সাগর থেকে ফেরা’ কবিতার বইটি তাকে অনায়াসে সন্ধান দেয় দূরের দ্বীপের অচেনা বন্দরের। রৌদ্রোজ্জ্বল জলপাই বনের।
তখন তিনিও লেখেন-

আকাশ যখন মায়ের কাঁথা
মৌ-কলসি ধান ছড়ালো বাস
তখন আমি সকাল দুপুর
বাজিয়ে সোনা রোদের নূপুর
যাই যে হয়ে সুবচনীয় হাঁস।

বুদ্ধদেব বসুর কয়েকটি কিশোর কবিতা তাকে অন্য রকম করে তোলে। তার মাঝে রয়েছে- জোনাকি, পরি-মার পত্র-রুমিকে, পদ্মার চর। পদ্মার চরকে কবি তুলনা করেছেন মখমলের মতো নরম একটি সবুজ কার্পেটের সঙ্গে। কবিতা তখন যেন আলী ইমামকে মায়াবী ডাক দিতে থাকে। বুনো হাঁসের পালকের মতো মেঘের নিচ দিয়ে উড়ে আসছে মোহন আহ্বান।
আলী ইমামের কিশোরকাল কেটেছে নিরিবিলি ছায়াঢাকা তিতাস পাড়ের শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে। তিনি তখন সেখানকার ঘন সবুজ নিঃসর্গের ভেতরে লকলকে পুঁইলতার মতো বেড়ে উঠছিলেন। সেখানেই কিশোর কবিতা পাঠ করে মনোজগৎ স্পন্দিত হয়েছে তার। দূরের জলাভূমি ঘন নীল কুয়াশায় পরিযায়ী পাখিদের পাখসাটে ভরে যায়। শেষ শরতের মায়াবী বিকেলে প্রসন্ন বাতাসে গাছের কাছে দাঁড়িয়ে ছিটঘুঘুদের ডাক শুনে উদাস হয়ে ভাবতে থাকেন- ‘আমাকে যে কবিতা লিখতেই হবে।’
রাত জেগে রুলটানা খাতায় প্রবল আবেগে কবিতা লিখতে শুরু করলেন তিনি। জানালার বাইরে মিটমিট করে জ্বলা জোনাকিরা তখন আলী ইমামের সঙ্গী। দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে লিখেছেন কিশোর কবিতা আর ছড়া। যেমন-

পুকুর পাড়ের কলমি লতার লকলকানো ডাঁটি
নীল ভোমরা বসলো। এসে কেমন পরিপাটি,
ভোমরাগুলো কলমি লতার কেমন যেন মিতে
ভর দুপুরে আসছে উড়ে লতার খবর নিতে।

গত শতাব্দী ষষ্ঠ দশকের মাঝামাঝি, অর্থাৎ কিশোরকাল থেকেই সাহিত্যচর্চা শুরু করেন তিনি। তার লেখালেখির জগতে আসা যে বইটি পড়ে, সেটিও বাংলা শিশু সাহিত্যের অন্যতম আকর অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বুড়ো আংলা’।
আলী ইমামের প্রথম বই প্রকাশিত হয়েছে ১৯৭৬ সালে। বইয়ের নাম দ্বীপের নাম মধুবুনিয়া। প্রকাশক বর্ণমিছিল। খুব অসাধারণ ছাপা। সাধারণ প্রচ্ছদ। কিন্তু আমাদের কাছে তখন সেটা অসাধারণ ব্যাপার। প্রথম বই। আমরা প্রত্যেকে আনন্দিত। বইয়ের প্রচ্ছদে ফ্ল্যাপ লিখে দিয়েছেন কবি শামসুর রাহমান। তারপর আলী ইমামের একের পর এক ৬০০-এর অধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। আমার মনে হয়, আলী ইমামের মতো এত অধিকসংখ্যক বই দুই বাংলায় আর কারো নেই। আলী ইমামের দ্বিতীয় বই ‘অপারেশন কাঁকনপুর’। কিশোর বাংলা ঈদসংখ্যায় প্রকাশিত হয় ১৯৭৮ সালে। বই বের হয় ১৯৭৯ সালে।
সর্বশেষ তারিক সুজাতের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জার্নিম্যান থেকে আলী ইমামের একটা সুদৃশ্য মনোরম বই প্রকাশিত হয়েছে। সেই বইয়ের নাম ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’। আলী ইমাম ভয়াবহ অসুস্থ। হসপিটালের শুভ্র বিছানায় শুয়ে আছেন। তারিক সুজাত বইটা নিয়ে হাসপাতালে ছুটে গেছেন। আপাতত চলৎশক্তিহীন। বইটা তার সামনে মেলে ধরেছেন তারিক সুজাত। আলী ইমাম ভাই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থেকেছে বইটার দিকে। সেই মুহূর্তে তার চোখ দুটো উজ্জ্বলতায় চিকচিক করে উঠেছে। কিন্তু আলী ইমামের আনন্দের পরিমাণটা বোঝা যায়নি। শুনেছি, তারিক বইটা দ্রুততার সঙ্গে প্রকাশ করেছেন। অনুমান করি বাবা যেমন নিজ সন্তানকে কাছে পেলে খুশি হয়ে ওঠে, আদর করে- আলী ইমামও তাই করেছেন।
প্রচণ্ড কর্মবীর মানুষ ছিলেন আলী ইমাম। একই সঙ্গে দুই হাতে লিখেছেন। আশ্চর্য রকমের পরিশ্রমী তিনি। কাজ করার ক্ষমতাও তীব্র। এমন ক্ষমতা আর কারো আছে কি না জানি না। আমার তখন মনে পড়ে গেল পুরনো দিনের কথা। আলী ইমামের শিশুসাহিত্য চর্চার শুরু হয় শৈশব থেকে। ১৯৬৮ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান শিক্ষা সপ্তাহে বিতর্ক এবং উপস্থিত বক্তৃতায় চ্যাম্পিয়ন হন। ১৯৮৬ সালে ইউনেস্কো আয়োজিত শিশুসাহিত্য বিষয়ক প্রকাশনা কর্মশালায় অংশ নেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ স্কাউটসের প্রকাশনা বিভাগের ন্যাশনাল কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
কোমলমতি শিশু-কিশোরদের জন্য লেখালেখি করতে গেলে লেখককেও তাদের মতো কল্পনার জগতে ডানা মেলে উড়তে জানতে হয়। শিশু সাহিত্যিক আলী ইমাম একথা জানতেন। তাই নিজেকেও তিনি সরল ধাঁচে আনন্দময় করে রাখতেন। ভালো থাকার চাবিকাঠি মেনে চলতেন দৈনন্দিন জীবনে চর্চিত ইতিবাচকতাকে।
বছরের শেষ দিনে তার জন্মদিন ছিল- যদিও এই দিনটিকে খুব একটা বিশেষ মনে করতেন না তিনি, মধ্যবিত্ত বেড়ে ওঠা জীবনের পরম্পরা হিসেবেই হয়তো। তবে সেই দিন শিশুদের জন্য কলম ওঠানো এই ব্যক্তিটি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে প্রায় বছরই পোশাক বা খাবার-দাবার বিতরণ করতেন। আনন্দ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য মূলত তিনি এ কাজ করতেন। এতে ছিল তারও আনন্দ।
উপহার হিসেবে নিজের জন্য পছন্দ ছিল ফুল, আর ফুলের মতো শিশুদের জন্য লেখালেখি করেই তিনি তার জীবন কাটিয়ে দিলেন। তার লেখা বইয়ের মোট সংখ্যা ছয়শ’ ছাড়িয়েছিল। এর মধ্যে গল্প-ছড়া, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী, নাটক, প্রবন্ধ, জীবনী, অনুবাদ-কিছুই তেমন একটা বাদ যায়নি। সবগুলো শাখাতেই তিনি পারদর্শিতার সঙ্গে নিজের ছাপ রেখে গেছেন।
আলী ইমাম ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের বয়সি সবারই অনেক অনেক স্মৃতি। তিনি সব বয়সি মানুষের বন্ধু হতে পারেন। এ এক আশ্চর্য গুণাবলি। তার সমসাময়িক বন্ধুরা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, শাহরিয়ার কবির, মুনতাসীর মামুন, ভূইয়া ইকবাল, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, খায়রুল আলম সবুজ, কাইজার চৌধুরী প্রমুখ দীর্ঘ তালিকা। ঈষৎ অনুজদের মধ্যে চ্যানেল আইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর, নায়ক আফজাল হোসেন, কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, সাংবাদিক সাইফুল আলম, হাসান হাফিজ, শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম থেকে শুরু করে আনজীর লিটন পর্যন্ত তার বন্ধু। সবাই আলী ইমামকে কাছের মানুষ প্রিয় মানুষ মনে করেন। তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই আলী ইমামের হাজার হাজার স্মৃতি।
আলী ইমাম নিজেকে টেলিভিশন ও লেখালেখির বাইরে অনেক কাজে সংযুক্ত রাখতেন। কচিকাঁচার মেলা, চাঁদের হাট, শিশুসাহিত্য কেন্দ্র, ঢাকা নগর জাদুঘর, গণহত্যা জাদুঘর- নানা সংগঠনে তিনি কাজ করে থাকেন। মন্তাজ নামে প্রথম দিকের একটা সিনে ক্লাব তৈরি করেন তারা। চলচ্চিত্র আন্দোলনের সঙ্গেও ছিলেন। ভারতীয় দূতাবাসে চলচ্চিত্র কোর্সে সতীশ বাহাদূরের কাছে হাতেকলমে ট্রেনিং নেন। সেই কোর্সে সবচেয়ে উজ্জ্বল ফলাফল ছিল আলী ইমামের। জনপ্রিয় ‘এপার ওপার’ ছবির চিত্রনাট্য তার লেখা। সত্যজিৎ রায়ের অসম্ভব ভক্ত তিনি। জীবনজুড়ে তিনি সত্যজিৎ চর্চা করেছেন। রুপোলি ফিতে নামে চলচ্চিত্রের বই লিখেছেন। আর সত্যজিৎ রায়ের ওপর দশ বারোটা বই লিখেছেন। এমনই চলচ্চিত্র পাগল আলী ইমাম।
লেখালেখির পাশাপাশি গণমাধ্যমেও জীবনের বড় একটি সময় কাটিয়েছেন তিনি। বেতার ও টেলিভিশনে তার পরিচালিত ও উপস্থাপিত অধিকাংশ অনুষ্ঠান ছিল শিক্ষামূলক। জনপ্রিয় অনুষ্ঠানগুলোর মাঝে বিটিভিতে তার উপস্থাপিত ‘হ্যালো, আপনাকে বলছি’ আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়াও তার প্রযোজনায় প্রামাণ্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান আমার রচনা ‘দেখা হয় নাই’ও বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। ‘দেখা হয় নাই’ অনুষ্ঠানের রচয়িতা ছিলাম আমি নিজেই। ২০০৪ সালে তিনি আমাকে দিয়ে রচনা করিয়েছিলেন দুটি ঐতিহাসিক টিভি ডকুমেন্টারি বাংলাদেশের পাখি এবং বাংলাদেশের চারুশিল্প। এই ডকুমেন্টারি দুটি ইংরেজিতেও নির্মিত হয়েছিল। আলী ইমাম যে কত বড় টিভি ব্যক্তিত্ব বা নির্মাতা তা এই দুই প্রামাণ্যচিত্র দিয়ে প্রমাণিত হয়। এই প্রামাণ্যচিত্র দুটি ওই সময়ে সার্কভুক্ত ৭টি দেশে একযুগে প্রচারিত হয়।
শিশুসাহিত্যে অবদানের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত আলী ইমামকে একজন সাংবাদিক এক সাক্ষাৎকারে জিগ্যেস করেছিল- পাখির মতো ডানা পেলে কী করবেন তিনি? বলেছিলেন, পাখির ডানা পেলে তিনি দেশে দেশে ঘুরে বেড়াতেন সুবচনির হাঁস হয়ে। প্রজাপতির ডানা মেলার শব্দ শুনতে তিনি পাখি হয়ে ডানা মেলতে চেয়েছিলেন। টাইম মেশিনে চড়ে তার একবার সক্রেটিস যুগের গ্রিস ঘুরে আসার শখ ছিল। হয়তোবা জুটে যেতেন সক্রেটিসের শিষ্যদের দলে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়