জাহাঙ্গীর কবির নানক : বিএনপির মানবতার শিক্ষা নেয়া দরকার

আগের সংবাদ

এপার ওপার সুড়ঙ্গ সংযোগ : কর্ণফুলীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ উদ্বোধনের অপেক্ষায়

পরের সংবাদ

ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনায় উত্থানে ফিরল পুঁজিবাজার

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কায় বাংলাদেশের অর্থনীতি গিয়ে গুজব-গুঞ্জনে টালমাটাল পুঁজিবাজারে সপ্তাহের আগের তিন কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর প্রধান সূচক পড়েছিল ১৩৫ পয়েন্ট। বাজারে আতঙ্কের মধ্যে গতকাল বুধবারও একপর্যায়ে ১৭ পয়েন্ট পতনে বিনিয়োগকারীর হতাশা আরো বাড়ার শঙ্কা দেখা দেয়। তবে ক্রয় চাপে শেষ পর্যন্ত সূচক ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন। দিনের সর্বনি¤œ অবস্থান থেকে বেড়েছে ৫২ পয়েন্ট। দিন শেষে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫২ পয়েন্ট, যা গত সোমবারের সমান।
গত ৩১ জুলাই বেঁধে দেয়া ফ্লোর প্রাইসে তিন শ কোম্পানির ক্রেতাশূন্যতার মধ্যে মঙ্গলবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই দরের চেয়ে কমে শেয়ার বিক্রির সুযোগ দেয়। তবে মূল বাজার নয়, ব্লক মার্কেটে ফ্লোর প্রাইসের ১০ শতাংশ কমে শেয়ার বিক্রি করা যাবে। এই নির্দেশনা নতুন নয়। ২০২০ সালে করোনার সময় ফ্লোর প্রাইসেও যখন বিপুলসংখ্যক কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছিল না, তখনো এই সুযোগ দেয়া হয়। তারপরেও চাপে থাকা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এই নির্দেশনা নতুন করে উৎকণ্ঠার জন্ম দেয়। তবে যা ভাবা হয়েছিল, তার বিপরীত আচরণ করেছে পুঁজিবাজার। আগের দিন ২৪টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছিল ৬১ কোম্পানির দর। সোমবার ১৮টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর কমে ৬৮ কোম্পানির। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ২৫টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ৮৭টি।
গতকাল বুধবার বেড়েছে ৭৬ কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ১১টির। আগের দিনের দরে ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছে ২৩৪টি কোম্পানি। আর ৬৮ কোম্পানির কোনো ক্রেতা ছিল না। ছয়টি কোম্পানির দর বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি, চারটির দর বাড়ে ৮ শতাংশের বেশি। আরো ৫টি করে কোম্পানির দর ৭ ও ৬ শতাংশ, ৫টির দর ৫ শতাংশ, ১০টির দর ৪ শতাংশ, ৯টির দর ৩ শতাংশ, ১১টির দর বাড়ে ২ শতাংশ। এসব কোম্পানির বেশির ভাগ গত কয়েকদিন ধরে দর হারাচ্ছিল ঝড়ের বেগে।
তবে শেয়ারদর বাড়লেও লেনদেন আরো কমে পাঁচ শ কোটির নিচে নেমেছে। হাতবদল হয়েছে কেবল ৪৬৮ কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার টাকার শেয়ার। গত ২৪ অক্টোবর কারিগরি জটিলতায় কয়েক ঘণ্টা লেনদেন বিঘিœত হওয়ার দিনটি বাদ দিলে ৩১ জুলাই ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের পর এটি সর্বনি¤œ লেনদেন। সূচক ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যাওয়ার পর ২৮ জুলাই বিএসইসি দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস দেয়ার ঘোষণা দেয়। সেদিন লেনদেন ছিল ৪৪১ কোটি ৭৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা। টানা তিন কর্মদিবস দরপতন শেষে পুঁজিবাজারের এই উত্থান বিনিয়োগকারীদের হতাশা কিছুটা কাটিয়েছে।
ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, আগের দিনের মতোই লেনদেন অনেক কম, এই জায়গায় এমন হতে পারে যে সরবরাহ শেষ হয়ে আসছে। এরকম অবস্থানে মার্কেটে ‘ন্যাচারাল বাউন্স ব্যাক’ হতে পারে। আজকে কিছুটা বেড়েছেও। যখন বাজার ঊর্ধ্বমুখী থেকে নিচের দিকে গেলে কেনার সুযোগ তৈরি হয়, আর নি¤œমুখী থেকে ঊর্ধ্বমুখী হলে বিক্রয় সুযোগ হতে পারে।’
সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ৬২ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। সোনালী পেপারের দর ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ০৩ পয়েন্ট। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন সূচকে যোগ করেছে ২ দশমিক ৬১ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৮ দশমিক ৩১ শতাংশ। এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে ওরিয়ন ইনফিউশন, নাভানা ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, জেনেক্স ইনফোসিস, বসুন্ধরা পেপার ও জেএমআই হসপিটাল। সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট। বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৬০ পয়েন্ট সূচক কমেছে স্কয়ার ফার্মার দরপতনে।
কোম্পানিটির দর কমেছে শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমেছে বেক্সিমকো সুকুক বন্ডের কারণে। ইউনিট প্রতি দাম কমেছে ১ দশমিক ১৪ শতাংশ। পূবালী ব্যাংকের দর শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৩৭ পয়েন্ট। এ ছাড়া ন্যাশনাল টি, সোনালি আঁশ, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, শাহজালাল ব্যাংক, আমরা নেটওয়ার্কস ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের দরপতনে সূচক কমেছে। সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৪ দশমিক ১৪ পয়েন্ট।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়