সরকার ৬৭ লাখ তরুণ-তরুণীকে আয়বর্ধক পেশায় প্রশিক্ষণ দিয়েছে

আগের সংবাদ

১০ ডিসেম্বর কী হবে ঢাকায়? বিএনপির সমাবেশ ঘিরে উত্তাপ বাড়িয়েছে আমানের আল্টিমেটাম > রাজপথে মোকাবিলা করবে আ.লীগ

পরের সংবাদ

ঢাকা চেম্বারের সেমিনারে বক্তারা : ৬০ শতাংশ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ সুবিধাবঞ্চিত

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করলেও এখন পর্যন্ত সেখান থেকে বিতরণ হয়েছে মাত্র ১৯২ কোটি টাকা, যা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের।
গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘সিএমএসএমইদের অর্থায়নে প্রতিবন্ধকতা এবং সম্ভবনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, কোভিড মহামারি-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আরোপতি নানাবিধ অবরোধের কারণে গোটা পৃথিবীর সাপ্লাইচেইন ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে।
ডেপুটি গভর্নর আরো বলেন, ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বর্তমানে সেবা এবং উৎপাদনশীল খাতকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। ফলে পণ্যের উৎপাদন হ্রাসের মাধ্যমে পণ্যের দাম কমে আসবে এবং বেশি হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, এসএমই খাতে অর্থায়ন বৃদ্ধিতে ব্যাংকসমূহের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের চেয়ে ‘উপশাখা’ কার্যক্রম আরো সম্প্রসারণে জোর দেয়া হচ্ছে, যার ফলে ব্যাংকগুলোর প্রশাসনিক ব্যয় নির্বাহের পরিমাণ হ্রাস পাবে।
এছাড়া ঋণ প্রাপ্তির প্রচলিত ব্যবস্থার বাইরে ‘অনলাইন মার্কেট প্লেস’ এবং ‘ব্লক চেইন’ কার্যক্রমের ওপর বেশি হারে মনোনিবেশের জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯টি ক্লাস্টার নির্বাচন করেছে। দেশের ব্যাংক এবং নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে ক্লাস্টারভুক্ত সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদানে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি জানান, দেশের সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ‘ডিজিটাল ব্যাংক’ স্থাপনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিকল্পনা করেছে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, উদ্যোক্তা উন্নয়ন, বড় শিল্প খাতকে সহযোগিতা প্রদান এবং সার্বিকভাবে অর্থনীতির চাকাকে সচল করতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে আর্থিক এবং নীতি সহায়তার অভাবে এ খাতের দক্ষতা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আর্থিক খতিয়ান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবসায়িক নথিপত্রের ব্যবস্থাপনার অভাবে দেশের সিএমএস খাতের উদ্যোক্তারা প্রায়ই ব্যাংকের ঋণ সহায়তা থেকে বঞ্চিত থাকেন। কিন্তু তাদের প্রযুক্তিগত, কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা একান্ত জরুরি। তিনি জানান, সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য দেশের স্বনামধন্য ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রাপ্তির তথ্যসমূহের সন্নিবেশনের মাধ্যমে ঢাকা চেম্বার ‘সিএমএসএমই ঋণ প্রাপ্তির পদ্ধতি’ শীর্ষক একটি বই প্রকাশ করেছে, যেটি এ খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তির প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (এসএমইএসপিডি) মো. জাকের হোসেইন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম হাসান সাত্তার পৃথকভাবে দুটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মো. জাকের হোসেইন বলেন, বর্তমানে আমাদের জিডিপিতে সিএমএসএমই খাতের অবদান ২৫ শতাংশ এবং ২০২৪ ও ২০২৭ সালে এটি যথাক্রমে ৩২ শতাংশ ও ৪০ শতাংশ উন্নীতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তাই এ খাতের উন্নয়নে সবার অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। এ খাতের কোনো উদ্যোক্তা যদি প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে আবেদন করেন, তাহলে ঋণ মঞ্জুরে ব্যাংকের পিছপা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।
এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম হাসান সাত্তার বলেন, ‘বিবিএস ইকোনমিক সার্ভে ২০১৩’ অনুযায়ী দেশে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তার সংখ্যা ৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন, যার মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংই ঋণ প্রাপ্তির সুবিধা হতে বঞ্চিত, এ খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রচলিত ধ্যান-ধারণার মানসিকতা পরিহার করতে হবে।
এছাড়া দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা এসএমই উদ্যোক্তাদের আর্থিক সক্ষমতা শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আহরণের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়