পাচার অর্থ ফেরাতে আট দেশের সঙ্গে চুক্তি চায় দুদক

আগের সংবাদ

টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তায় নজর : দেশীয় গ্যাস-কয়লা উত্তোলন, তেলের মজুত ও পরিশোধন সক্ষমতা বাড়ানো, পাইপলাইনে ডিজেল আমদানি

পরের সংবাদ

ল্যাবরেটরিতে যেভাবে তৈরি হলো রক্ত

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা রক্ত এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের শরীরে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের গবেষকরা।
এই পরীক্ষায় যে পরিমাণ রক্ত মানুষের দেহে ঢোকানো হয়েছে তা খুবই সামান্য- কয়েক চামচ মাত্র। এই রক্ত কতটা কাজ করে, সেটা দেখাই এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য।
গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে রক্ত তৈরির এই পরীক্ষার আসল উদ্দেশ্যে সেই সব বিরল গ্রুপের রক্ত তৈরি করা, যা সংগ্রহ করা খুব কঠিন। যেসব রোগের কারণে শরীরে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন করার দরকার হয়, তাদের জন্য এর প্রয়োজন খুব বেশি।
মানুষের দেহের রক্তের সঙ্গে যদি সঞ্চালিত রক্ত না মেলে, তখন শরীর এই রক্ত প্রত্যাখ্যান করে এবং চিকিৎসা ব্যর্থ হয়। একজনের রক্তের সঙ্গে শুধু আরেকজনের রক্তের গ্রুপ মিললেই হবে না, এই মিল হতে হবে আরো অনেক বেশি। ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের প্রফেসর অ্যাশলে টোয়ে বলেন, কিছু কিছু রক্তের গ্রুপ এতটাই বিরল যে একটা দেশে হয়তো মাত্র দশ জন মানুষ আছেন যারা এই রক্ত দিতে পারবেন। যেমন পুরো যুক্তরাজ্যে ব্লাড ব্যাংকে যত রক্ত আছে তাতে এই মহূর্তে ‘বোম্বে ব্লাড গ্রুপের’ মাত্র তিনটি ইউনিট আছে। এই রক্তের গ্রুপটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল ভারতে। ল্যাবরেটরিতে রক্ত তৈরির গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালনা করছে ব্রিস্টল, কেমব্রিজ, লন্ডন এবং ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ব্লাড এন্ড ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের গবেষক-দল। রক্তের যে লোহিত কণিকা ফুসফুস থেকে অক্সিজেন বহন করে শরীরের অন্যান্য অংশে নিয়ে যায়, এই গবেষণায় সেটার ওপরই মনোযোগ দেয়া হয়েছে।
স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দান করা এক পাইন্ট রক্ত দিয়ে কাজটি শুরু হয়। এরপর এই রক্ত থেকে চুম্বকের মাধ্যমে এমন কিছু নমনীয় স্টেম সেল বের করে আনা হয় যেগুলোর লোহিত রক্ত কণিকায় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এরপর গবেষণাগারে এগুলোকে বেশি সংখ্যায় বড় করার জন্য এমনভাবে রাখা হয় যাতে এগুলো পূর্ণাঙ্গ লোহিত কণিকায় পরিণত হতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি শেষ হতে প্রায় তিন সপ্তাহ সময় লাগে এবং এই সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ স্টেম সেল থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করা যায়। এগুলো থেকে ফিল্টার করে এরপর প্রায় দেড় হাজার লোহিত রক্তকণিকা বের করা হয় মানুষের দেহে সঞ্চালন করার জন্য।
‘ভবিষ্যতে আমরা এভাবে যত বেশি সম্ভব রক্ত তৈরি করতে চাই। আমার মাথার ভেতর যে দৃশ্যটা আমি দেখতে পাই তাহলো, একটা রুম ভর্তি মেশিন, আর সেখান থেকে মানুষের দান করা স্বাভাবিক রক্ত ব্যবহার করে ক্রমাগত রক্ত তৈরি করা হচ্ছে,’ বলছিলেন অধ্যাপক টোয়ে।
পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম দুজন মানুষের দেহে এরকম রক্ত দেয়া হয়েছে। মোট দশজন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবকের দেহে এই রক্ত প্রয়োগ করা হবে। তাদের অন্তত চার মাসের ব্যবধানে ৫ হতে ১০ মিলিমিটার পরিমাণে দুবার ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্ত দেয়া হবে।
এই রক্তে এক ধরনের তেজস্ক্রিয় চিহ্ন (রেডিওঅ্যাকটিভ ট্যাগ) দেয়া আছে, যাতে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন এই রক্ত কতদিন টিকে থাকে। আশা করা হচ্ছে যে ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্ত স্বাভাবিক রক্তের চেয়ে অনেক বেশি টিকবে। লোহিত রক্ত কণিকা সাধারণত ১২০ দিন টেকে, এরপর এগুলো প্রতিস্থাপনের দরকার হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়