পাচার অর্থ ফেরাতে আট দেশের সঙ্গে চুক্তি চায় দুদক

আগের সংবাদ

টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তায় নজর : দেশীয় গ্যাস-কয়লা উত্তোলন, তেলের মজুত ও পরিশোধন সক্ষমতা বাড়ানো, পাইপলাইনে ডিজেল আমদানি

পরের সংবাদ

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর : ২ মাসের মধ্যে প্রকল্প না পেলে ১৫০ আসনে ইভিএম সম্ভব নয়

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আগামী ২ মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২০২৩ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝির মধ্যে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্প একনেকে পাস না হলে জাতীয় নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর।
বিদেশ থেকে ইভিএম যন্ত্রপাতি আনতে নানা প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মধ্য জানুয়ারির মধ্যে অর্ডার দিতে হবে, না হলে আর সম্ভব হয়ে উঠবে না। গতকাল বুধবার নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর এ কথা বলেন। তিনি জানান, সেক্ষেত্রে বর্তমানে ইসির হাতে থাকা দেড় লাখ ইভিএম নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে।
নতুন দুই লাখ ইভিএম কিনতে ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার ‘নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় ইসি। গত মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনে বৈঠকের পর ওই প্রকল্প প্রস্তাবের ব্যয় যৌক্তিক করার পরামর্শ দেয় তারা।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, পরিকল্পনা কমিশন কী পর্যবেক্ষণ দিয়েছে তা নির্বাচন কমিশন এখনো জানে না। বৃহস্পতিবার (আজ) বৈঠকে এগুলো দেখার পর কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, প্রকল্প অর্থনৈতিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। পরিকল্পনা কমিশন বা অর্থ মন্ত্রণালয় কত টাকা দিতে পারবে, তার ওপর এটি নির্ভর করে। তিনি বলেন, প্রকল্প অনুমোদনের পর কার্যাদেশ দেয়া, এলসি খোলা, যন্ত্রাংশ দেশে আনা, মান পরীক্ষা করা, সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ, ইভিএম ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা, মাঠে পাঠানোর কাজগুলো করতে হবে।
মো. আলমগীর বলেন, সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট আছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ইভিএমের যে ব্যয় তার অধিকাংশই বিদেশি মুদ্রায় পরিশোধ করতে হবে। যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। রিজার্ভের একটা সমস্যা থাকতে পারে, অর্থনৈতিক সমস্যা থাকতে পারে, সেই হিসাবে পরিকল্পনা কমিশন কতটুকু পারবে সেসব দেখে ইসি সিদ্ধান্ত নেবে কী করা উচিত।
তিনি বলেন, প্রকল্প প্রস্তাবে ইভিএম সংরক্ষণাগার, পরিবহনের জন্য গাড়ি, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন খাত আছে। পরিকল্পনা কমিশন কোন খাতে খরচ কমাতে বলেছে তা এখনো কমিশন জানে না। তবে যেটাই হোক, যাতে অর্থ ও সম্পদের অপচয় না হয় সেগুলো বিবেচনায় নিয়েই ইসি সিদ্ধান্ত নেবে। তবে অর্থনৈতিক সক্ষমতা কতটুকু আছে সেটা বলতে পারবে অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। ইসি নিজেদের চাহিদার কথা বলেছে। মন্ত্রণালয় কতটুকু দিতে পারবে সেটা তাদের ব্যাপার।
জানা গেছে, সংশোধনীর ক্ষেত্রে ৫৩৪টি পিকআপ ভ্যানের রক্ষণাবেক্ষণ ও জ্বালানি খাতের ব্যয় কমে আসতে পারে। ফিজিবিলিটি স্টাডির বিকল্পও ভাবছে নির্বাচন কমিশন।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, আমাদের ফিজিবিলিটি স্টাডি হয়নি। একটা টেকনিক্যাল কমিটি আছে। সেই কমিটিতে বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আছেন। তাদের স্বাক্ষর নিয়ে প্রস্তাবটির ব্যয় কিছুটা কমিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য ইসির প্রস্তাবিত প্রকল্পে ২ লাখ ইভিএম কেনার কথা রয়েছে। প্রতি ইভিএম কেনার জন্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা। মাঠ পর্যায়ে ৫২২টি থানা নির্বাচন কার্যালয়ের ও ঢাকার জন্য মোট ৫৩৪টি পিকআপ ভ্যান কেনার বিষয়টি রাখা হয়েছে প্রকল্পে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে পিকআপ প্রতি ৬৫ লাখ করে ৩৫০ কোটি টাকা। এছাড়া ১০টি গুদামের প্রতিটিতে ৩৭ কোটি টাকা করে মোট ৩৭৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। গুদামের ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ৪০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে।
ইভিএম কাস্টমাইজেশন সেন্টার স্থাপন, গুদাম নির্মাণ, ইভিএম পরিবহন ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত সংক্রান্ত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। প্রশিক্ষণ ব্যয় ২০৫ কোটি টাকা, প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় ৬৯০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
অন্যদিকে পিকআপ ভ্যানের জন্য ড্রাইভার, থানা নির্বাচন কার্যালয় প্রতি একজন সহকারী প্রোগ্রামার, একজন ইভিএম অপারেটরসহ ৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, এসব খাতে ১ হাজার ৫শ লোকবলের বেতন ইত্যাদি খাতে ওই ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
বর্তমানে চলমান ইভিএম প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয় ২০১৮ সালে। সে সময় প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আর ইভিএম প্রতি ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৫ হাজার। এই প্রকল্পের অধীনেই কেনা হয় দেড় লাখ ইভিএম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়