নিশ্চিত মৃত্যু থেকে ইমরান খানকে বাঁচালেন এক যুবক : প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দিকে সন্দেহের তীর

আগের সংবাদ

এ মরণফাঁদ থেকে মুক্তি মিলবে কবে?

পরের সংবাদ

রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার : শেষ হলো কঠিন চীবর দানোৎসব

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : শান্তি ও মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে লাখো পুণ্যার্থীর শ্রদ্ধা এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ৪৯তম কঠিন চীবর দানোৎসব রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে চীবর উৎসর্গের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার প্রাঙ্গণে বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে ২৪ ঘন্টায় তৈরিকৃত চীবর রাঙ্গামাটি মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্ত বনভন্তের শীর্ষ রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরের হাতে চীবর উৎসর্গ করেন রাঙ্গামাটি চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। চীবর উৎসর্গের সময় ভক্তদের সাধু সাধু কণ্ঠধ্বনিতে রাজবন বিহারের আশেপাশের সমস্ত এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
বিহার প্রাঙ্গণে আগত লাখো লাখো পুণ্যার্থীর সামনে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের প্রধান মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্ত শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভন্তের অমৃত কথার অডিও উপস্থাপন করা হয়। পরে আয়োজিত স্বধর্ম দেশনা দেন রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির ধমীয় দেশনা দেন আগত দায়ক দায়িকার উদ্দেশ্যে। এসময় তিনি কৌশল কর্ম, সৎ চেতনা ও সৎ জীবন নিয়ে জীবনযাপন করার জন্য হিতোপদেশ দেন।
চীবর দান উৎসবে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রæ চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল জাহাঙ্গীর আলম, রাঙ্গামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, বিএনপির নেতা দীপন তালুকদার, রাজবন বিহারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমিয় খীসাসহ দেশি-বিদেশি পুণ্যার্থীরা অংশ নেন।
এর আগে বুদ্ধ সংগীত দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। পরে পঞ্চশীল, অষ্টশীল, বৌদ্ধমূর্তি ও কঠিন চীবর উৎস্বর্গের পর মহাপুণ্যবতী বিশাখা প্রবর্তিত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৈরিকৃত কঠিন চীবর উপস্থিত ভিক্ষু সংঘের কাছে দেয়া হয়।
বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড়কে বলা হয় চীবর। প্রাচীন নিয়ম মতে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে চরকায় সুতা কেটে, সুতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় তাতে কাপড় বুনে চীবর তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে এর নাম কঠিন চীবর দান। বিশ্বের আর কোথাও এ নিয়মের প্রচলন নেই।
বৌদ্ধশাস্ত্র মতে, দীর্ঘ আড়াই হাজার বছর পূর্বে গৌতম বুদ্ধের শিষ্য বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর তৈরির প্রচলন করেছিলেন। প্রতি বছর আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর দান করতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সাল থেকে বুদ্ধের শিষ্য বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দান উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। এ কঠিন চীবর দান উৎসবের অন্যতম উপলক্ষ হলো মৈত্রী গড়ে তোলা। রাতে রাজবন বিহারে ফানুস উড়িয়ে শেষ হয় এই কঠিন চীবর দান উৎসব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়