নিশ্চিত মৃত্যু থেকে ইমরান খানকে বাঁচালেন এক যুবক : প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দিকে সন্দেহের তীর

আগের সংবাদ

এ মরণফাঁদ থেকে মুক্তি মিলবে কবে?

পরের সংবাদ

যুগ পেরিয়েও সরব যেসব ধারাবাহিক নাটক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে দেখা যায় ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সিরিয়াল নিয়ে মাতামাতি। কিশোর-কিশোরীরাও এ সময় ব্যস্ত ইংরেজি সিরিজ নিয়ে। এখন বাংলা নাটকের ধারাবাহিকতা কেমন যেন হারিয়েই গেছে। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন মানুষ টিভির সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকত পছন্দের ধারাবাহিক নাটক দেখার জন্য। সময় পেরিয়েছে, তবুও সেসব নাটক এখনো দর্শকের মনে জায়গা দখল করে আছে।
‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ‘কোথাও কেউ নেই’ ভক্তদের কাছে একটি অনুভূতির নাম। সময় হলে তাড়াহুড়ো করে কে টিভি সেটের সামনে বসবে, সেটা নিয়ে বেঁধে যেত যুদ্ধ। নাটকটির নাট্যকার ছিলেন কিংবদন্তি হুমায়ূন আহমেদ। এটি প্রযোজনা করেছিলেন বরকত উল্লাহ। একটি নাটকের চরিত্র দর্শকদের কাছে কতটা আপন হতে পারে, তা ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের ‘বাকের ভাই’ চরিত্রটি দেখলেই টের পাওয়া যায়। বাকের ভাইয়ের ফাঁসির প্রতিবাদে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। টেলিভিশন নাটকের ইতিহাসে ‘কোথাও কেউ নেই’ একটি মাইলফলক। যে নাটকের ইতিহাস এখনো সরব। অনেকে তো সময় পেলেই এখনো বসে যান ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক দেখতে। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, আসাদুজ্জামান নূর, সুবর্ণা মুস্তাফা, আবদুল কাদের, মাহফুজ আহমেদ, আবুল খায়ের, হুমায়ুন ফরিদী, আফসানা মিমি, মোজাম্মেল হোসেন।
‘আজ রবিবার’ বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলোর মধ্যে অন্যতম। হাস্যরসের মাধ্যমে বাস্তব জীবনের অসাধারণ প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছিল এ নাটকে। হুমায়ূন আহমেদের লেখা মনির হোসেন জীবনের পরিচালনায় এ নাটকে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, জাহিদ হাসান, শাওন, সুবর্ণা মোস্তফা, আলী জাকেরসহ আরো অনেক গুণী শিল্পী। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে এটি প্রচারিত হয়।
দুই দশক পেরিয়ে গেলেও নাটকটির দর্শকপ্রিয়তা এখনো দৃশ্যমান।
হুমায়ূন আহমেদের লেখা আরো কয়েকটি ধারাবাহিক নাটক হলো, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘সবুজ সাথী’, ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’, ‘এই মেঘ এই রৌদ্র’ ইত্যাদি। এছাড়াও এক পর্বের অনেক নাটক লিখেছেন তিনি। সেগুলোও পেয়েছে ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা।
হুমায়ূন আহমেদের ‘অয়োময়’ ধারাবাহিকটিও বেশ জনপ্রিয় হয়। এ নাটকে আসাদুজ্জামান নূর, সারা জাকের, লাকী ইনাম, বিপাশা হায়াত, আবুল হায়াত, সুবর্ণা মুস্তাফা, মোজাম্মেল হোসেন, দীপা ইসলাম প্রমুখ অভিনয় করেছিলেন। ময়মনসিংহ অঞ্চলের জমিদার মির্জা সাহেব এবং তার দুই স্ত্রীকে নিয়ে নাটকের মূল কাহিনী গড়ে উঠেছিল।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালিত প্রথম দিকের নাটক ‘একান্নবর্তী’ ঘরে ঘরে অসাধারণ আলোড়ন তুলেছিল।
‘একান্নবর্তী’ নাটকের ভক্ত ছিলেন না বাংলার ঘরে এমন নারী পাওয়া দুঃসাধ্যই হবে। শুধু নারী নয় বরং বাবা-মা, ছেলেমেয়েসহ নিজেদের একান্নবর্তী পরিবার নিয়েই নাটকটি দেখতে বসে যেতেন সবাই। নাটকটিতে অভিনয় করেছিলেন দিলারা জামান, মাসুদ আলী খান, ফারহানা মিঠু, মাহফুজ আহমেদ, শাহেদ শরীফ খান, শ্রাবন্তী, অপি করিম, ফজলুর রহমান বাবু, শহীদুজ্জামান সেলিম, আরমান পারভেজ মুরাদ, মারজুক রাসেল, মোনা, অপি করিম, কাব্য, সোহাগসহ আরো অনেকেই।
২০০৭ সালে চ্যানেল আইয়ের জন্য নির্মিত ‘৪২০’ ধারাবাহিক নাটকটি তৎকালীন সময়ে বেশ সাড়া ফেলে।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় পলিটিক্যাল থ্রিলার ‘৪২০’ নাটকটিতে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, নুসরাত ইমরোজ তিশা, লুৎফর রহমান জর্জ, সোহেল খান, মারজুক রাসেল প্রমুখ। এই নাটক দিয়েই ক্যারিয়ারে শক্ত অবস্থান তৈরি করেন মোশাররফ করিমসহ ক’জন তারকা।
একুশে টিভির অত্যন্ত জনপ্রিয় নাটক ছিল ‘বন্ধন’, যদিও ২০০২ সালে একুশে টিভির সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নাটকটির প্রচার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আবুল হায়াত, শর্মিলী আহমেদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, চিত্রলেখা গুহ, তুষার খান ছিলেন নাটকের অভিনয় শিল্পী। এ নাটকের গান ‘ব্যস্ত শহরে’ এখনো অর্ণবের সবচাইতে জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে অন্যতম।
‘হাউজফুল’ বাংলাদেশের আধুনিক দিনের জনপ্রিয় একটি ধারাবাহিক। এটি পরিচালনা করেছেন রেদোয়ান রনি এবং ইফতিখার আহমেদ ফাহমি। অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, সুমাইয়া শিমু, মিথিলা, হাসান মাসুদ, মিশু সাব্বির, আবুল হায়াত এবং আরো অনেকে। হাস্যরসাত্মক এ নাটক মোশাররফ করিমের ক্যারিয়ারের অন্যতম মাইলফলক ছিল।
এনটিভির জন্য নির্মিত বাংলা কমেডি ধারাবাহিক নাটকের একটি মাইলফলক ‘রঙের মানুষ’। নাটকটির পরিচালনায় ছিলেন সালাউদ্দিন লাভলু, অভিনয়ে ছিলেন বন্যা মির্জা, তানিয়া আহমেদ, মুক্তা, এ টি এম শামসুজ্জামান, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, সালাউদ্দিন লাভলু, আহমেদ রুবেল, ফজলুর রহমান বাবু, সমু চৌধুরী, রহমত আলী, আ খ ম হাসান, প্রাণ রায়, পরেশ আচার্য্য, রশীদ হারুন, আনিসুর রহমান মিলন, মোস্তাগিসুর রহমান বাবুসহ অনেকে।
বাংলা ধারাবাহিকের ইতিহাসের আরেকটি জনপ্রিয় নাটক ‘সাকিন সারিসুরি’। পুরোপুরি গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত হয়েছিল এ ধারাবাহিকটি।
২০০৯ সাল থেকে প্রচারিত হয় নাটকটি, যার অন্তিম পর্ব প্রচারিত হয় ২০১০ সালে। নাটকটিতে অভিনয় করেছিলেন চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, আ খ ম হাসান, সাজু মুনতাসের, শাহনাজ খুশি, শানারেই দেবী শানু, নাজমুল হুদা বাচ্চু, গোলাম ফরিদা ছন্দা, আজিজুল হাকিম, রওনক হাসান, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, মামনুর রশিদ, মাসুম আজিজ প্রমুখ। বৃন্দাবন দাসের রচনায় এ ধারাবাহিকটি পরিচালনা করেছেন সালাহউদ্দিন লাভলু। গ্রামীণ দৃশ্যপটে নির্মিত এ নাটকটি দেখতে টেলিভিশনের সামনে অপেক্ষা করতেন লাখো দর্শক। মাঝে এক যুগের বেশি সময় পেরোলেও নাটকটির জনপ্রিয়তা এখনো দৃশ্যমান।
সাবলীল অভিনয় ও সংলাপে দর্শক মুগ্ধ করে আসছে নাটকটি।
জনপ্রিয় ধারাবাহিকের আরেকটি হলো ‘হাড়কিপটে’। বৃন্দাবন দাস রচিত ও সালাউদ্দিন লাভলু পরিচালিত এ ধারাবাহিকের মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আমিরুল হক চৌধুরী, চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, আ খ ম হাসান, শামীম জামান, শাহানাজ খুশিসহ আরো অনেকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়