টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব : করোনা কাটিয়ে ফিরছে জৌলুস

আগের সংবাদ

প্রাণঘাতী রূপে প্রলম্বিত ডেঙ্গু : ছড়িয়ে পড়েছে দেশের ৫৬ জেলায়, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সব জেলায়ই রোগী > ডেঙ্গু : সংক্রমণ

পরের সংবাদ

সাক্ষাৎকার : ২৩ বছরের ফিটনেস কোচ!

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সার্টিফাইড ফিটনেস কোচ এবং জুম্বা ইন্সট্রাক্টর সুমাইয়া চৌধুরী কৃতিকা।
সম্প্রতি ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়া ফিটনেস কনফারেন্সের ১৪ তম আসরে প্রথম বাংলাদেশী কোচ হিসেবে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এবারের আসরে এশিয়ার ২৮টি দেশের প্রায় ৪০০ জন কোচ এবং ফিটনেস এক্সপার্ট অংশগ্রহণ করেছিল। তিনি কোচ হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ৮টি বিভিন্ন ক্যাটাগরি সেশনে। এর মধ্যে ৫টি চ্যাম্প মেডেল অর্জন করে রানার আপ হয়েছেন ২৩ বছর বয়সী সুমাইয়া। এবার তিনি জানাচ্ছেন জুম্বা নিয়ে তার অভিজ্ঞতার কথা।

বিশ্বের প্রায় ১৮৫টি দেশে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে জুম্বা, আপনার জুম্বা ইন্সট্রাক্টর হবার গল্পটা কেমন?
সুমাইয়া চৌধুরী কৃতিকা: অনেক টা হঠাৎ করেই জুম্বা নিয়ে উৎসাহ জেগে উঠে। শুরু থেকেই ছিলাম ফিটনেস সচেতন। নিজের ফিটনেস এর পাশাপাশি পড়াশোনা শুরু করি ফিটনেস ট্রেনিং বিষয়ে। এই আগ্রহই পরবর্তীতে পার্সোনাল ফিটনেস ট্রেইনার সার্টিফিকেট অর্জন করতে সাহায্য করে। কাজ শুরু করি ট্যাপআউট নামে একটি আন্তর্জাতিক চেইনে। ২০২১ সাল থেকে জুম্বা নিয়ে পড়াশোনার চেষ্ঠায় এবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জুম্বা ইন্সট্রাক্টর লাইসেন্স অর্জন করি।

ফান-অ্যাক্টিভিটিও হলেও জুম্বা নিয়ে এদেশে গ্রহনযোগ্যতা কেমন মনে হচ্ছে?
সু চৌ কৃ: এটা বাংলাদেশের জন্য একদম ই নতুন একটা কনসেপ্ট। তবে অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জুম্বা করানোর কথা বলে আসছে। কিন্তু এই জুম্বা একমাত্র লাইসেন্সড জুম্বা ইন্সট্রাক্টররা ছাড়া আর কেও করতে পারবে না। আমার জুম্বা লাইসেন্স এর পাশাপাশি সিপিডি এইডি লাইসেন্স আছে। যা যে কোনো সময় কারো হার্ট এটার্কের মত কিছু ঘটে গেলেও আমি তাকে প্রাথমিক সাহায্য করতে পারবো যা আমি আন্তর্জার্তিক ভাবে স্বীকৃত।
আমি জুম্বা শুরু করার পর থেকে অনেকেই এখন জুম্বা ফিটনেসে আগ্রহী হয়েছেন। যারা মূলত জিম করা পছন্দ করেন না বা সময় পান না বা একটু মজা করতে ভালোবাসেন তারাই আমার জুম্বা ক্লায়েন্টস।

শেপ আপ উইথ কৃতি থেকে কাদের কে সেবা দেয়া হচ্ছে?
সু চৌ কৃ: শেপ আপ উইথ কৃতি হচ্ছে আমার সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান। যেখানে আমি জুম্বা ওয়ার্ক আউট করিয়ে থাকি। আমার ক্লায়েন্টস অধিকাংশই কর্পোরেট কর্মজীবী। যারা জিম ই আসতে সময় পান না এবং স্ট্রেস রিলিভে করতে চান।

কেউ জুম্বা সার্টিফাইড ইনস্ট্রাকটর হতে চাইলে অনলাইনে যে কাজগুলো অবশ্যই করতে হবে?
সু চৌ কৃ: কেউ জুম্বা ইন্সট্রাক্টর হতে চাইলে সবার প্রথমে তার ভিতরে উৎসাহ এবং ল্যাটিন মিউজিকের প্রতি ভালোবাসা থাকেতে হবে। এই জুম্বা লাইসেন্সড পরীক্ষা টি অনলাইন ই হয়ে থাকলেও এটা একজন জেডইএস ( জুম্বা এডুকেশন স্পেশালিস্ট ) এর কাছে অনলাইন ট্রেনিং নিতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের বাইরে গিয়ে ট্রেনিং নিতে পারলে সেটা বেশি কার্যকর হবে বলে আমি মনে করি। আমাদের দেশে কোনো জেডইএস নাই। আমি আগামী বছর দেশের বাইরে গিয়ে এই জেডইএস পরীক্ষায় অংশ নিতে নিজেকে প্রস্তুত করছি।

ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এশিয়া ফিটনেস কনফারেন্সে অংশ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা পাঠকের উদ্দেশ্যে যদি বলেন।
সু চৌ কৃ: আমি মনে করি ব্যাংকক ই অনুষ্টিত এশিয়া ফিটনেস কনফারেন্স আমার জীবনের একটা লাইফ চেঞ্জিং ইভেন্ট। আমি সার্টিফাইড ফিটনেস কোচ এবং জুম্বা ইন্সট্রাক্টর হিসেবে এফসি এর ১৪ তম আসরে প্রথম বাংলাদেশী কোচ হিসেবে অংশগ্রহণ করি। এবারের আসরে এশিয়া র ২৮ টি দেশের প্রায় ৪০০ জন কোচ এবং ফিটনেস এক্সপার্টস রা অংশগ্রহণ করেছিল । এছাড়া বিশ্বের প্রায় ৫০ জন ট্রেনির ছিল যারা আমাদের বিভিন্ন সেগমেন্ট এর ট্রেনিং করিয়েছে। জিতে নিয়েছি ৫ টি চ্যাম্প মেডেল। এছাড়া আমি নৃত্য প্রতিযোগিতায় ২৪ জন প্রতিযোগীর মধ্যে দ্বিতীয় রানার আপ ট্রফি জিতেছি এই আসরে।
এই কনফারেন্সে আমার সব চেয়ে ভালো লেগেছে এতো দেশের সব নামকরা জিম কোচদের আমাকে এবং আমার বাংলাদেশকে সাপোর্ট করার প্রবণতা। আরেকটা অনুভূতি আমি ভূলবলবোনা বা আমার কখন জানা ছিল না যে স্টেজ এ যখন বাংলাদেশের নাম বলে তখন কার অনুভূতি টা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। এছাড়া আমি এই কনফারেন্সে উপস্থিত থেকে জেনেছি যে এই ফিটনেসের প্রযুক্তিগত দিক থেকে দুনিয়া কতোটা এগিয়ে গেছে। বিদেশে যে ধরনের ইকুইপমেন্টস এবং টেকনিক এখন ব্যবহার হচ্ছে তা থেকে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
সু চৌ কৃ: বর্তমানে আমি পার্সোনাল ফিটনেস ট্রেনিং করছি। আমার বর্তমানে প্রায় ২৩ জন পার্সোনাল ট্রেনিং ক্লায়েন্টস আছেন। আর আমি শেপ আপ উইথ কৃতি নাম আমার নিজস্ব জুম্বা স্কুল পরিচালনা করছি। বর্তমানে আমার ৩ টা পৃথক ব্যাচ চলছে। আমি জেট আই এন হিসেবে এই ফিটনেস সেশনগুলো পরিচালনা করি। তাছাড়া আমি কর্পোরেট শোসহ বিভিন্ন জুম্বা সেশন পরিচালনা করছি। দেশে আমিই প্রথম বারের মত অ্যাকুয়া করিয়েছি। এছাড়া কিছুদিনের মধ্যেই আমি বিভিন্ন সেক্টরে জুম্বার চমকপ্রদ অফার নিয়ে উপস্থিত হবো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়