হাজারীবাগের বিস্ফোরণ : পা হারানো দিলীপসহ শঙ্কাজনক অবস্থায় ২

আগের সংবাদ

পাঁচ কারণে বাড়ছে ডেঙ্গু!

পরের সংবাদ

গুরুদাসপুরে ২ কেজি লেবু ১৫ টাকা!

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি : মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে নাটোরের গুরুদাসপুরে একেবারেই তলানিতে লেবুর বাজার। লেবু বিক্রিতে চাষিদের উৎপাদন খরচ ওঠানোই এখন কষ্টকর। ফলে লাভের পরিবর্তে লোকসান গুনতে হচ্ছে লেবু চাষিদের। লোকসানের মুখে পড়ে অনেক কৃষকই লেবু তুলতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এ কারণে বাগানের লেবু বাগানেই নষ্ট হচ্ছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. মতিয়র রহমান জানান, এ বছর উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হয়েছে। মূলত কাগজিলেবুর জায়গাটা দখল করেছে চায়না ৩ জাতের বারোমাসি লেবু। এ লেবুর ফলন বেশি। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে লেবু বেশি পরিমাণে উৎপাদন হয়, চাহিদা থাকে কম। শুষ্ক মৌসুমে ফলন কম চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেশি থাকে। আসলে চাহিদা অনুযায়ী বাজার কম-বেশি হতে পারে।
সরজমিন উপজেলার বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা যায়, লেবু পেকে গাছ থেকে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। অনেক লেবু ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। লোকসানের ভয়ে অনেক চাষি লেবু তুলছে না। ফলে বাগানেই নষ্ট হচ্ছে চাষির কষ্টার্জিত সম্পদ। স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাগান প্রক্রিয়াজাতকরণ, সারসহ খরচ প্রতি বিঘায় ১ হাজার ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতি বস্তা লেবু তুলতে শ্রমিককে দিতে হয় ১৫০ হতে ২০০ টাকা। পাটের বস্তা, ভাড়া, অন্য খরচ বাবদ চলে যায় আরো ৩০০ টাকা। প্রতি বস্তা লেবু তুলে বিক্রি পর্যন্ত খরচ হচ্ছে ৭শ থেকে ৮শ টাকা। সেই লেবু বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে প্রতি বস্তা ৪শ থেকে ৫শ টাকা দরে। যার কারণে বাগানেই নষ্ট হচ্ছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল। তাই লেবু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা।
লেবু চাষিদের দাবি, কিছু লেবু ব্যবসায়ীর কারসাজিতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে কম দামে লেবু কিনে ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে আসা মহাজনদের কাছে অধিক মুনাফায় লেবু বিক্রি করছে। ফলে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লোকসানের পড়তে হচ্ছে তাদের।
চাপিলা ইউনিয়নের কলাকান্ত নগর গ্রামের চাষি মো. রহমত মণ্ডল বলেন, এবার আমার চার বিঘা জমিতে লেবু চাষ করা হয়েছে। রমজানের শুরুতে ভালো দামে বিক্রি হলেও, এখন একদমই বিক্রি হচ্ছে না। পাইকাররা এখন আর লেবু কিনতে চান না। আমাদের নিজেদের খরচে লেবু তুলে বাজারে বিক্রি করতে হয়। তবে লেবু তুলতে একজন দিনমজুরকে যে পারিশ্রমিক দিতে হয় সেই টাকাই বিক্রি করে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। তাই লেবু তোলা বন্ধ রেখেছি। চাঁচকেড় বাজারের খুচরা লেবু বিক্রেতা জনাব আলী জানান, বাগান থেকে ৭ টাকা কেজি দরে লেবু কিনে ১০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। লেবু ব্যবসায়ী মো. রাজু বেপারী জানান, বর্ষা মৌসুমে লেবুর দাম এমনিতেই কম থাকে। তাছাড়া মহাজনরাও বাকিতে লেবু কিনে। ঝুঁকি নিয়ে স্থানীয় বাজার থেকে লেবু কিনে মহাজনদের কাছে সামান্য লাভে বিক্রি করা হয়।
ঢাকা থেকে লেবু কিনতে আসা মহাজন রফিকুল ইসলাম জানান, এখন লেবুর ঢাল সিজন। তাছাড়া ট্রাকের ভাড়া, খাজনা ও লেবার বিল দিয়ে বেচা-বিক্রি শেষে সামান্য কিছু লাভ থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ বলেন, বৃষ্টির কারণে স্বল্প সময়ের জন্য বাজার দরটা একটু কমে গেছে। আবহাওয়া ঠিক হলেই লেবু চাষিরা আবার সাবেক দর ফিরে পাবে। তবে এই সময়ে লেবু চাষিরা কলম তৈরি করে বাড়তি আয় করতে পারেন। তবে লেবু চাষিরা বাইরের বেপারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে লেবু বিক্রি করলে ভালো দাম পেতে পারেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়