কাগজ ডেস্ক : ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াই চলাকালে ১৩৭ বছর আগে জন্ম নেয়া কংগ্রেসের গত ২৫ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম গান্ধী পরিবারের বাইরের কাউকে নেতৃত্বে দেখা যাওয়ার জোর সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের প্রধান দল কংগ্রেসের শীর্ষ পদে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি সময়ই গান্ধী পরিবারের কেউ না কেউ ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে পরবর্তী নির্বাচনে লড়তে নামার আগে দলের ভেতর বড় পরিবর্তনের অংশ হিসেবেই নেতৃত্বে এ পরিবর্তন আসছে বলে দলটির একাধিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। শেষ দুটি সাধারণ নির্বাচনে মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কাছে বড় ব্যবধানে হেরেছে এই দল। কংগ্রেসের অনেক প্রভাবশালী নেতা রাহুল গান্ধীর দুর্বল নেতৃত্বকে দায় দিয়ে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগও দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত রাহুলের মা, রাজীব গান্ধীর বিধবা স্ত্রী সোনিয়া গান্ধীকেই ফের দলের হাল ধরতে হয়। অবশ্য তিনিও ২০১৯ সাল থেকে ‘ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’ হিসেবেই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সর্বশেষ এ পরিবারের বাইরে কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন সীতারাম কেসরী। তিনি ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত দলটির শীর্ষ নেতার দায়িত্ব সামলেছেন। এরপরই দায়িত্বে আসেন সোনিয়া গান্ধী। দীর্ঘদিন সভাপতি থাকার পর তিনি ওই পদ ছেলের হাতে ছেড়েছিলেন। প্রায় ৯ হাজার প্রতিনিধির ভোটে নতুন সভাপতি ঠিক হবে। এবারের দৌড়ে সবচেয়ে বেশি নাম শোনা যাচ্ছে গান্ধী পরিবারের অনুগত, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের নাম। দক্ষিণের রাজ্য কেরালা থেকে নির্বাচিত লোকসভা সদস্য, একসময় জাতিসংঘে বড় পদে কাজ করা শশী থারুরও চলতি সপ্তাহে তার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন বলে জানিয়েছে কংগ্রেসের একাধিক সূত্র। এর বাইরে রাজ্যসভার বিরোধীদলীয় নেতা মল্লিকার্জুন খাগড়েও সভাপতির লড়াইয়ে থাকতে পারেন।
বলে কংগ্রেসের অনেক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

দলের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করেছে, ১৭ অক্টোবর ভোট হবে। বেশিরভাগ সময়ই কংগ্রেসে সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতি ঠিক হয়েছে। সভাপতিরা পরবর্তী ৫ বছরের জন্য দল চালানোর ম্যান্ডেট পান। তবে একের অধিক প্রার্থী থাকায় ১৯৩৭, ১৯৫০, ১৯৯৭ এবং ২০০০ সালে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে। ২০১৮ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১৭ সাল পর্যন্ত সোনিয়া গান্ধী প্রায় দুই দশক কংগ্রেসের কাণ্ডারি ছিলেন। এরপর রাহুল দায়িত্ব পেলেও বিজেপির তীব্র সমালোচনার মুখে ২০১৯ সালে তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেন। দলের এবারের সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাবও তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর এই নাতি এখন মোদির বিভাজনের রাজনীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে ৫ মাসব্যাপী প্রতিবাদ যাত্রার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।