সোনারগাঁওয়ে দলিল লিখককে হত্যা স্ত্রী আটক

আগের সংবাদ

জন্মদিনের শুভেচ্ছা : জননেত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার

পরের সংবাদ

র‌্যাবে অভিযানে গ্রেপ্তার ৪ : অনুমোদনহীন এজেন্সি দিয়ে মানবপাচার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দুবাইয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফেরা কুষ্টিয়ার ৪ তরুণের অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ মানবপাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তোফায়েল আহমেদ (২৮), মো. আক্তার হোসেন (৩৮), মো. আনিছুর রহমান (৩৬) ও মো. রাসেল (৩০)। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার তোফায়েল আহমেদ ২০১৭ সালে দুবাই যান। সেখানে তার বাবার হোটেলের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন তিনি। করোনার সময় তিনি দেশে ফিরে আসেন। এ সময় উপার্জন না থাকায় পরিচিত দুবাই প্রবাসী জাহিদের মাধ্যমে মানবপাচারে জড়িয়ে পড়েন। রাজধানীর গুলশান ও পল্টনে গড়ে তোলেন সিটি এক্সপ্রেস ট্রাভেল এজেন্সি, যার কোনো বৈধ অনুমোদন ছিল না। সেখানে বিদেশ গমনেচ্ছুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও রাজধানীর গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র?্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র?্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফট্যানেন্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, চক্রটি বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চ বেতনে চাকরি দেয়ার নামে প্রলুব্ধ করত। মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর খরচ বাবদ প্রাথমিকভাবে চক্রটি ৪-৫ লাখ টাকা নিয়ে থাকে। এছাড়া ইউরোপ ও এশিয়ার অন্য দেশে পাঠানোর জন্য নেয় ৬-৮ লাখ টাকা। তিনি আরো বলেন, প্রথমে পাসপোর্ট ও প্রাথমিক খরচ বাবদ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা নেয়া হয়। এরপর বিদেশ থেকে বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে ফোন দিয়ে তারা সেদেশে ভালো আছে বলে আশ্বস্ত করে। তখন পরিবহন খরচ, ভিসা, মেডিকেল, বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স ইত্যাদি খরচের কথা বলে চক্রটি ধাপে ধাপে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করতে থাকেন। এরপর বিদেশে ফ্লাইটের দিন বিমানবন্দরে প্রবেশ গেইটে ভুক্তভোগীদের কাছে তাদের পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকেট হস্তান্তর করা হয়। বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে যাওয়ার পর ভুক্তভোগীরা বুঝতে পারেন তাকে ভ্রমণ ভিসায় বিদেশ পাঠানো হচ্ছে। তাদের তখন আশ্বস্ত করা হয় এই বলে- বিদেশ যাওয়ার পর ওয়ার্কিং ভিসা করে দেয়া হবে। কুষ্টিয়ার ৪ তরুণ- ফাহিম রেজা, মহরম, মজনু ও হেলাল দুবাই পৌঁছার পর জাহিদ তাদের স্বাগত জানিয়ে একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তাদের পাসপোর্ট ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়া হয়। এরপর তাদের একটি সাজানো কোম্পানিতে চাকরি দেয়া হয়। ৪-৫ দিন পর ওই কোম্পানি থেকে জানিয়ে দেয়া হয়- আইনি জটিলতার কারণে সেটি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
র?্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, এরপর জাহিদ পুনরায় ভুক্তভোগীদের অজ্ঞাতস্থানে বন্দি করে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে অর্থ আদায় করতেন। এ সময়ে ভুক্তভোগীদের কোনো খাবার দেয়া হতো না। খাবার চাইলে জাহিদ বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে এসে খাবার কিনতে বলতেন। এ সময় তোফায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ভুক্তভোগীদের অপেক্ষা করতে বলতেন। ওই ৪ তরুণ তখন নিজেদের চেষ্টায় টিকেট জোগাড় করে দেশে আসার চেষ্টা করতে থাকেন। জাহিদের কাছ থেকে পাসপোর্ট ফেরত নিতে হলেও ভুক্তভোগীদের ৫০-৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়