যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ : সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

বিসিবির ধমকে পিছু হটলেন সাকিব : বিসিবি সভাপতি পাপনের আল্টিমেটামের পর বেটউইনার নিউজের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে চিঠি

পরের সংবাদ

তাইওয়ানের পাল্টা মহড়ায় চীনের উল্লাস!

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : পাল্টা সামরিক মহড়া শুরু করেছে তাইওয়ান। এতে সত্যি হতে চলেছে সামরিক অভিযানের আশঙ্কা। শুধু মহড়া ও হুমকির মধ্যেই চীনের আস্ফালন সীমাবদ্ধ থাকবে- যারা এমন কথা বলতেন, বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ পশ্চিমাদের ধারণা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন তাইওয়ানের বিদেশমন্ত্রী জোসেফ উ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, জোসেফ উ নিজেই গতকাল বলেছেন চীন মহড়ার আড়ালে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীনের কট্টরপন্থি কমিউনিস্টরা যেন তৃপ্তির ঢেকুর গিলতে শুরু করেছেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে সামরিক শক্তির মাধ্যমে পূর্বপুরুষের ‘বেয়ারা’ বংশধরদের শায়েস্তা করার কথা বলছিল, তারা পেলোসির সফরে মাধ্যমে সেই মোক্ষম সুযোগটাই পেয়ে গেল যেন। তাইওয়ানকে বশে আনার সেই সুযোগ নষ্ট করতে রাজি নয় তারা। তাই পেলোসির নামে গøাসে চুমুক দিয়ে চিয়ার্স করতে করতে উল্লাস করছেন কমিউনিস্ট নেতারা। বিবিসির এক বিশ্লেষক জানান, গত সপ্তাহে বেইজিংয়ে একজন কট্টর জাতীয়তাবাদী রাস্তায় সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় হাসতে হাসতে বলেই ফেললেন, ‘ধন্যবাদ কমরেড পেলোসি!’
ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের জেরে দ্বীপটি ঘিরে চীন যে নজিরবিহীন সামরিক মহড়া চালিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসির দুই সংবাদদাতা। তারা বলছেন, ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের কারণে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির উচ্চপদস্থ কট্টরপন্থিরা খুশিই হয়েছেন।
বিবিসি মনে করে, পেলোসি আদতে তাদের সামনে তাইওয়ানের ওপর চাপ বাড়ানোর একটি জানালা খুলে দিয়ে গেছেন এবং তারা সেটা ব্যবহার করছে। তাইওয়ান ঘিরে চীন যে সামরিক মহড়া চালিয়েছে, সেখানে ‘লাইভ-ফায়ার’ ড্রিল করা হয়েছে। মহড়ায় তাইওয়ানের ওপর দিয়ে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে চীন। এর মাধ্যমে তাইওয়ান ঘিরে চীনের একের পর এক সামরিক ব্যবস্থা নেয়ার ‘গ্রহণযোগ্যতা’ তৈরির প্লট প্রস্তত হয়েছে।
এবারের মহড়ায় চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) তাইওয়ান প্রণালি ঘিরে অনেক কাছে এবং অনেক বেশি সংখ্যায় যুদ্ধবিমান উড়িয়েছে। এটা এখন তাদের ‘নতুন সীমা’ বলে বিবেচিত হচ্ছে। প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে হলেও তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করার যে নীতি চীন সরকারের রয়েছে, সেটি এখন অনেক বেশি বাস্তব বলে বিশ্বাস করা মানুষের সংখ্যা চীনে বাড়ছে। যারা এই নীতিতে বিশ্বাস করেন, তারা এটিকে তাদের জয় হিসেবে দেখছেন। অন্য কোনো শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাইওয়ানকে আবার চীনের অংশ করার আলোচনার পথ তাই আপাতত বন্ধ হয়ে গেছে।
শুধু তাইওয়ান নয়, এবারের মহড়ার মাধ্যমে চীন দক্ষিণ চীন সাগরের দখল নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোকেও তাদের সামরিক শক্তি দেখাতে পেরেছে।
যদিও কোনো কোনো বিশ্লেষকের ধারণা, চীনের এই যুদ্ধ মহড়া আসলে তাইওয়ান সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে চীনের হামলা মোকাবেলায় প্রতিরক্ষা কৌশল তৈরিতে সহায়তা করবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সরকার তো এই সামরিক মহড়ার মধ্যেই থেমে থাকছে না। গত শুক্রবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনেক ধরনের সহযোগিতা বন্ধ করে দিচ্ছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, তাইওয়ান ঘিরে এ মহড়ার পাশাপাশি বেইজিং থেকে যে ধরনের বক্তব্য দেয়া হয়েছে, আর হুংকার শোনা গেছে, সেগুলোও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
তবে বেইজিংয়ের জন্য মুশকিল হচ্ছে, তারা যে ধরনের তাইওয়ানের চিত্র তুলে ধরতে চাইছে, বাস্তবতার সঙ্গে তার বিরাট ফারাক। সাম্প্রতিক জরিপগুলোয় দেখা যাচ্ছে, তাইওয়ানের মানুষের একটা বড় অংশ চীনের সঙ্গে কোনো ধরনের একত্রীকরণের বিরুদ্ধে। তাইওয়ানের জনগণের বিরাট অংশ, যাদের সংখ্যা এখন বাড়ছে, নিজেদেরকে ‘চীনা’ নয় ‘তাইওয়ানিজ’ বলে ভাবছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়