ডি-৮ সিসিআই বিজনেস ফোরাম এন্ড এক্সপো শুরু আজ

আগের সংবাদ

জ্বালানি নিয়ে হুলুস্থুল : এক মাসের তেল মজুত, অর্ডার ৬ মাসের > রিজার্ভ কমায় আমাদের ঝুঁকি নেই

পরের সংবাদ

খোলাবাজারে ডলারের রেকর্ড দাম ১১২ টাকা

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : খোলাবাজারে টাকার বিপরীতে একদিনের ব্যবধানে প্রতি ডলার রেকর্ড ৬ থেকে ৮ টাকা বেড়ে ১১২ টাকায় উঠেছে। আগের দিন গত সোমবারও এই বাজার থেকে এক ডলার কিনতে খরচ হয়েছিল ১০৪ থেকে ১০৬ টাকা। তবে ১১২ টাকা দরেও আশানুরূপ ডলার মিলছে না। এর আগে কখনো একদিনে ডলারের দর এত বাড়েনি।
মতিঝিল যমুনা মানি এক্সচেঞ্জের স্বত্বাধিকারী আনিসুজ্জামান জানান, বাজারে ডলারের দাম উন্মুক্ত করে দেয়ার পর দাম বাড়ছেই। আর চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডলার নেই। বাজারে ডলারের সংকট চলছে। অনেকে ডলার কিনে ধরে রাখতে চাইছেন। অনেকে ডলার কিনতে এলেও সবাইকে দেয়া সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খোলাবাজার থেকে যে কেউ ডলার কিনতে পারেন। ব্যাংক থেকে কিনতে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট করতে হয়। যে কারণে অনেকে এখন খোলাবাজার থেকে ডলার কিনে শেয়ারবাজারের মতো বিনিয়োগ করছেন- যা অবৈধ।
কার্ব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্যাংকের মতো খোলাবাজারেও ডলারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। প্রবাসীদের দেশে আসা কমেছে, বিদেশি পর্যটকরাও কম আসছেন। এ কারণে ডলারের সরবরাহ কম। এর আগে খোলাবাজারে গত রবিবার ডলারের সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ১০৫ টাকায়। গত সোমবার ১০৪ থেকে ১০৬ টাকায় বিক্রি হয়।
খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকের আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সেও ডলারের দর অনেক বেড়েছে। ডলার ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন বলেন, ডলারের দাম উন্মুক্ত করে দেয়ার পরপরই দাম বাড়তে শুরু করে। তবে দাম যাই হোক, চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডলার কিন্তু নেই। এ কারণে প্রতিদিন দাম বাড়ছে। ডলার সংকট কেটে গেলে দামও কমে যাবে।
বেশ কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। গত সোমবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দর আরো ২৫ পয়সা বেড়েছে। প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী, এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। ২৪ জুলাই এ দাম ছিল ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা। মে মাসের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। এ হিসাবে দুই মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ৮ টাকা ২৫ পয়সা। গত এক বছরে আন্তঃব্যাংক দর ৯ টাকা ৯০ পয়সা বেড়েছে।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরজুড়ে আমদানি বেশ কমে গিয়েছিল। কিন্তু প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে উল্লম্ফন দেখা যায়। সে কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর বাড়তে থাকে আমদানি ব্যয়। রপ্তানি বাড়লেও কমতে থাকে রেমিট্যান্স। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভও কমতে থাকে। বাজারে ডলারের চাহিদার পাশাপাশি দামও বাড়তে থাকে।
বাজার ‘স্থিতিশীল’ করতে গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের প্রথম থেকে এ পর্যন্ত ৭০ কোটির বেশি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে রিজার্ভ দুই বছর পর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে খোলাবাজারে। ফলে খোলাবাজারে ডলারের এক প্রকার সংকট তৈরি হয়েছে। যদিও বাজার স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার সাপোর্ট দেয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। তবে এরই মধ্যে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে সুবাতাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঈদের মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১৬৪ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার বা ১৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি। গড়ে প্রতিদিন ৭ কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়