বেপরোয়া গতির বাস উল্টে আহত ২০ : পোশাক শ্রমিকের হাত বিচ্ছিন্ন

আগের সংবাদ

বিদ্যুৎ সংকটে বিপাকে কৃষক : উত্তরাঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় জমি শুকিয়ে গেছে > লোডশেডিংয়ের কারণে সেচ ব্যবস্থা বিঘ্নিত > ফসল বোনা অনিশ্চিত

পরের সংবাদ

হয়ে উঠুন ফ্যাশনিস্তা

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাদিকুর রহমান সাকিব
সোশ্যাল মিডিয়া ফিড আর সেলিব্রিটিদের বরাতে ফ্যাশনিস্তা হয়ে উঠতে চায় প্রতিটি আধুনিক তরুণী। কারণ, ফাস্ট ফ্যাশন প্রতিদিনকার স্ট্রিট ওয়্যারের চাহিদাকে করেছে আকাশচুম্বী। একটু খেয়াল করে দেখুন, প্রতিদিন অফিস, বন্ধুদের আড্ডা, বা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আগে অনেকেই নিজের ওয়ার্ডরোব হাতড়ে বেড়ান। ওয়ার্ডরোব ভর্তি জামাকাপড়, কিন্তু পরার কিছু নেই। বা দ্বিধাতে থাকতে পারেন ফ্যাশন করতে গেলে কী সব সময়ে নামী ও দামি পোশাকই পরতে হবে? দুশ্চিন্তা বাদ দিন, ংছোট- ছোট কিছু বিষয় মাথায় রাখলেই দারুণভাবে ফ্যাশন করা সম্ভব।
কালেভদ্রে বা উৎসব কেন্দ্রিক ডিজাইনার পোশাক বা অ্যাকসেসরিজ কেনা গেলেও সব সময়ে তা তো কেনা সম্ভব হয় না। কিন্তু বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যের দেয়া ফ্যাশনেবল লাইফস্টাইল আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে। তাই নিজের স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরিতে হতে হবে আরো সচেতন। ফাস্ট ফ্যাশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এর প্রভাব মুক্ত হয়েই খুঁজে নিতে হবে নিজের আউটফিট। অবশ্যই শরীরের গঠন অনুযায়ী পোশাক বাছাই করুন। তবে, যারা একটু হাই ফ্যাশন মেনে চলেন, তাদের জন্য আরও বড় সমস্যা হচ্ছে একটি আউটফিট দুবার পরা যাবে না। এমনকি অনেকে এমনও চিন্তা করেন, এই আউটফিটে তো গত সপ্তাহে ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়া হয়েছে এবং তা মোটামুটি ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলির সবাই দেখেছে, এমনকি লাইক, লাভ, ওয়াও রিঅ্যাকশন দিয়েছে। অনেকে কমেন্টসও করেছে।
সুতরাং এই পোশাক এখন একেবারেই পুরোনো। আবার অন্য একটি ড্রেসের সামনে দাঁড়িয়ে মনে পড়ল যে এটি তো এক বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে পরা হয়েছে, কিংবা বিয়ের দাওয়াতে।
বলা যায়, এভাবে আমরা পণ্যের দাসে পরিণত হয়েছি। নিজেদের ব্যক্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছি পোশাকের ডিজাইনে। এতে নিজের ওয়ার্ডরোব হয়ে ওঠে জামাকাপড়ের স্তূপ। মূলত: একারণেই কোথাও যাওয়ার সময় এখান থেকে গায়ে চাপানোর কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না।
এর থেকে মুক্তির উপায় নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে। অন্যের দেখানো স্টাইল স্টেটমেন্ট বা ফ্যাশন ধারায় নিজেকে ভাসিয়ে না দিয়ে নিজেই তৈরি করুন নিজের স্টাইল স্টেটমেন্ট। হয়ে উঠুন ফ্যাশনিস্তা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অন্যের দেখানো পথে না হেঁটে। সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে নিজের ওয়ার্ডরোব থেকে খুঁজে নিন নিজের মতো আউটফিট। এরপর একটি আউটফিট থেকেই তৈরি করুন বিভিন্ন রকমের স্টাইল স্টেটমেন্ট।
যেমন অধিকাংশ ছেলেমেয়ের ক্লজেটেই একটি সাধারণ কালো বা সাদা শার্ট থাকে। ক্যাজুয়ালি আমরা বাইরে যাওয়ার সময় একটি জিনস অথবা সাধারণ কালো প্যান্ট দিয়ে এটি পরি। কিন্তু এই কালো শার্ট দিয়েই নতুন নতুন স্টাইল তৈরি করা সম্ভব এবং এগুলো দেখে মনে হবে নতুন আউটফিট। অর্থাৎ একটি শার্ট বা টপই আপনাকে দিতে পারে ট্র্যাডিশনাল, ফরমাল, সেমি ফরমাল, ক্যাজুয়াল ও পার্টি লুক।

ক্যাজুয়াল লুক
ক্যাজুয়াল লুকের জন্য রেগুলার যেকোনো রঙের শার্ট, টি-শার্ট বা টপ ডেনিম প্যান্ট, জিনস বা ডেনিম কুলোটসের সঙ্গে জুটি করতে পারেন। তবে সঙ্গে যোগ করতে হবে কনভার্স বা স্নিকার্স; তাহলেই সেটা হয়ে উঠবে ট্রেন্ডি। আর মেয়েরা যোগ করতে পারেন ট্রান্সপারেন্ট হিল। তাহলে ক্যাজুয়াল লুকও হয়ে উঠবে গর্জিয়াস। স্কার্ট টপসও মানানসই এই গরমে। কেউ কেউ বটমে বৈচিত্র্য আনতে প্যাটার্ন ভিন্নতার পোশাক গায়ে চাপিয়ে দিন। অন্যদিকে পার্টি ওয়্যারকে বলা হয় ট্রেন্ড ব্রেকার। অর্থাৎ পার্টিতে আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যায়, এমন যেকোনো কিছুই আপনি পরতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ক্লোজেটে জমানো শার্টগুলো পরতে পারেন স্কার্ট দিয়ে। ট্রেন্ডি ফ্যাশনে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্কার্ট। এর সঙ্গে পরুন স্টিলেটো অথবা বুট। পাশাপাশি ম্যাচিং বা কন্ট্রাস্ট অ্যাকসেসরিজ আপনাকে দেবে ক্ল্যাসিক বা রেট্রো লুক। লং ফ্রকগুলোও গরমের স্ট্রিট ফ্যাশনে আপনাকে দিবে ভিন্ন লুক। তবে আপনি যদি মডেস্ট ফ্যাশনের অনুসারি হয় তবে লং প্যাটার্নেও বোরকার সাথে স্টাইলিশ হিজাব ব্যবহার করতে পারেন সহজেই।

এথনিক পোশাক
এথনিক আউটফিটের সঙ্গেও মানাসই শার্ট, তবে তা শুধু মেয়েদের জন্য। এ বিষয়ে অবশ্য অনেকেই কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু ব্লাউজের পরিবর্তে এখন শার্টের ব্যবহার বেশ ট্রেন্ডি, যা রেগুলার বেসিক শাড়ির সজ্জাকে আমূল বদলে দেয়। সুতরাং ট্র্যাডিশনাল শাড়ির স্টাইল যাদের কাছে বোরিং, তারা ক্লোজেটে শাড়ি ফেলে না রেখে পেয়ারআপ করতে পারেন পছন্দের শার্ট, ক্রপটপ, এমনকি টি-শার্টের সঙ্গে। এই সাজে মাত্রা আনতে পরতে পারেন কন্ট্রাস্ট বা ট্রেন্ডি বা স্টেটমেন্ট জুয়েলারি, যা আপনার স্টেটমেন্টকে দেবে মডার্ন টুইস্ট।

পরিশেষ
আলমারি গোছানো একটা ঝকমারি ব্যাপার। কিন্তু কোথাও যাওয়ার আগে ‘আমার পরার মতো কিছুই নেই’ বলে কান্নাকাটি করাটা আরও বেশি বিরক্তিকর। কাজেই প্রতি তিন মাসে একবার করে অন্তত আলমারি গোছান। যে পোশাকগুলো আপনার ফিট হয় না বা বহুকাল পরেনই না, সেগুলো কাউকে দিয়ে দিন বা রিসাইকেল করে নিন। মনে রাখবেন, ফ্যাশন মানেই শুধুমাত্র পোশাক কেনা বা পরা নয়, অ্যাকসেসরিজও কিন্তু ফ্যাশনের একটা বড় অংশ। আপনি কোন পোশাকের সঙ্গে কেমন অ্যাকসেসরিজ পরছেন বা ক্যারি করছেন সে বিষয়েও আপনার সঠিক ধারণা থাকা উচিত।

মডেল : আনিকা তাহসিন
আলোকচিত্রী : কারিশমা ইকবাল দিশা
পোশাক : ল্যাভিশ বাই কারিশমা

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়