মুম্বাইয়ে ভবনধসে নিহত ১৯

আগের সংবাদ

বানভাসিদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই

পরের সংবাদ

ইউক্রেনের এই দুর্ভিক্ষের বলি ‘এক কোটি’ মানুষ

প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ১৯৩৩ সালের বসন্তকালে ইউক্রেনে এমন এক দুর্ভিক্ষ হয়েছিল যাতে মারা গিয়েছিল প্রায় ‘কোটি’খানেক লোক। ওই সময়ে মারিয়া ভলকোভা সে সময় ছিলেন স্কুলের ছাত্রী। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, তখন ঘরে খাবার কিছু ছিল না। আমরা ঘরে ফিরে মাকে জিজ্ঞেস করতাম, মা আমাকে কিছু একটা খেতে দিতে পার? তখন তিনি বলতেন, তুমি বাইরে গিয়ে চেরি গাছ থেকে কিছু পাতা ছিঁড়ে নিয়ে খাও না। এই দুর্ভিক্ষ ছিল মানবসৃষ্ট। সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্টালিন তখন দেশের গ্রামগুলোর ওপর তার কমিউনিস্ট দৃষ্টিভঙ্গি চাপিয়ে দিচ্ছিলেন। জমি আর গবাদিপশু তখন রাষ্ট্র-পরিচালিত যৌথ খামারের অঙ্গীভূত করে নেয়া হচ্ছিল। কেউ এর বিরোধিতা করলে তা নির্মমভাবে দমন করা হচ্ছিল। এতে ইউক্রেনের সমাজে একটা তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দেখা দিল ব্যাপক অনাহার। ক্রেমলিন ১৯৩২ সালে শস্যের ফলনের যে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল- তা পূরণ হয়নি। কর্তৃপক্ষ তখন কমিউনিস্ট কর্মীদের পাঠিয়ে দিল খাদ্যশস্য বাজেয়াপ্ত করার জন্য। বাইরের বিশ্ব এ নিয়ে প্রায় কিছুই জানতে পারেনি।
কিন্তু গ্যারেথ জোনস নামে একজন তরুণ ওয়েলশ সাংবাদিক প্রতিজ্ঞা করলেন তিনি কি হচ্ছে তা খুঁজে বের করবেন। তিনি রুশ ভাষা জানতেন। নানা কৌশলে তিনি মস্কোর বিদেশি সাংবাদিকদের ওপর আরোপিত কড়া নিয়ন্ত্রণ এড়িয়ে একটা ট্রেন ধরে সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষুধাপীড়িত এলাকায় চলে গেলেন। পরে তিনি এক রিপোর্টে লিখেছিলেন দুর্ভিক্ষের এই বিবরণ। কোনো রুটি নেই, অনেক লোক মারা যাচ্ছে। প্রতিটি ছোট ছোট স্টেশনে ট্রেন থামছিল। ওই সময়টাতেই একজন লোক আমার দিকে এগিয়ে এলো কানে কানে জার্মান ভাষায় বললো, ব্রিটিশদের জানাও যে, আমরা অনাহারে আছি। আমি গ্রামগুলোতে ঢুকলাম। কয়েকটা কুঁড়েঘর দেখা যাচ্ছিল সেখানে যাওয়ার পথটার উপর বরফ জমে ছিল। প্রথম যার সঙ্গে দেখা হলো, তাতেই আমি দুর্যোগের আভাস পেলাম। একজন মহিলা মাথা নিচু করে রেললাইনে পাশ দিয়ে হাঁটছিল। সে বলল, কোনো রুটি নেই। আমরা গত দুমাস কোনো রুটি খাইনি। অনেক লোক এখানে মারা যাচ্ছে। ওই এলাকার শত শত কৃষকের মুখে আমি একই কথা শুনেছি। এটি ছিল মধ্যাঞ্চলীয় ব্ল্যাক আর্থ এলাকা। রাশিয়ার সবচেয়ে উর্বর অঞ্চলগুলোর একটা। রিপোর্ট অনুযায়ী ইউক্রেনের ওই দুর্ভিক্ষে ১ কোটি লোক মারা গিয়েছিল। ইউক্রেনীয়রা এর নাম দিয়েছিল হলোদোমর- যার অর্থ, না খাইয়ে মারা। তারা একে গণহত্যা বলে আখ্যায়িত করে। বলে, এটা হচ্ছে উদ্দেশ্যমূলক গণহত্যা- যাতে ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদকে দমন করা যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়