বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন : এমপি হারুনের নোটিস নাকচ করলেন স্পিকার

আগের সংবাদ

ঢাকার তৃণমূলে আ.লীগের পদ পেলেন ৫৪ হাজার কর্মী : থানা-ওয়ার্ডে পদ পাচ্ছেন আরো সাড়ে ১২ হাজার > সংগঠন গোছাতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন নগর নেতারা

পরের সংবাদ

সংসদে জি এম কাদের : ঋণের বোঝা অসহনীয় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার উচ্চাভিলাষী বাজেটটি গতানুগতিক। এতে আগের বছরগুলোর ন্যায় সব খাতে একটি নির্দিষ্ট হারে বাড়ানো হয়েছে। বাজেটে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯০ কোটি টাকার ঋণের পরিমাণ প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশি ঋণ ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ ঋণ ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। ঋণের এই বোঝা অসহনীয় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বাজেটে পাচারকৃত অর্থ মাত্র ৭ শতাংশ কর দিয়ে দেশে ফেরত আনার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, তা একেবারেই অসাংবিধানিক, অনৈতিক ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, করোনা-উত্তর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা, জ¦ালানি তেলসহ অধিকাংশ পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা প্রত্যাশার কারণে উচ্চাভিলাষী এই বাজেট বাস্তবায়ন অসম্ভব। তিনি বলেন, এটি ঘাটতির এবং ঋণনির্ভর বাজেট। বাজেটের সামগ্রিক ঘাটতি ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ও বাজেটের ৩৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। এ ঘাটতি পূরণ করতে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা বা বাজেটের ৩৮ হাজার ১৭ শতাংশ ঋণ নেয়া হবে।
তিনি বলেন, বাজেটে প্রস্তাবিত আয় সম্পূর্ণভাবে খরচ হবে পরিচালন ব্যয় ও পূর্বে গৃহীত ঋণের সুদ পরিশোধে। বাজেট প্রস্তাবিত প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা সরকারের আয়। পরিচালন ব্যয় ৪ লাখ ১১ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। এই ব্যয়ের এককভাবে বড় একটি অংশ ঋণের সুদ হিসাবে ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। বাজেটে বর্ধিত কর আদায়ের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বাস্তবসম্মত মনে হয় না। গত অর্থবছরে যেখানে রাজস্ব থেকে প্রাপ্তির সংশোধিত বাজেটটি ছিল ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বাস্তবে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত আদায় হয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। যদি একই হারে রাজস্ব আদায় অব্যাহত থাকে, তাহলে অর্থবছর শেষে মোট রাজস্ব আদায় হবে ২ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এর পরেও ঘাটতি থাকবে ৫৪ হাজার কোটি টাকা। সেখানে আগামী অর্থবছরে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব প্রাপ্তি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অবাস্তব। তিনি আরো বলেন, বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, এডিপি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ দিন দিন কমছে। প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো অর্থের পরিমাণও নি¤œগামী।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে জিডিপির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৩৯ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা।
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৫ লাখ ৬০০ কোটি টাকা বা জিডিপির হিসাবে ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ প্রায় এবং দেশীয় উৎস থেকে নেয়া ঋণের পরিমাণ ৮ লাখ ৫০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বা জিডিপির হিসাবে ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ঋণের পরিমাণ প্রস্তাব করা হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। বিদেশি ঋণ ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ ঋণ ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমাদের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়াল ১৬ লাখ ৯ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৬ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৯ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। মাথাপিছু মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ লাখ টাকা। অর্থাৎ অথনৈতিকভাবেও আমরা এখনো পরমুখাপেক্ষী। নিজস্ব অর্থে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জিত হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়