মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪৪

আগের সংবাদ

উদ্ধারের অপেক্ষা আর ত্রাণের আকুতি : পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ > ভেসে উঠছে বানভাসি মানুষের লাশ > এখনই সচল হচ্ছে না ওসমানী বিমানবন্দর

পরের সংবাদ

নেইমারের যোগ্য উত্তরসূরি রদ্রিগো!

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ব্রাজিলের হয়ে কেবল একটা কনফেডারেশন্স কাপ জিতেছেন নেইমার ব্যক্তিগত অর্জনের ক্ষেত্রে নিজেকে নিয়ে গেছেন দারুণ উচ্চতায়। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে ৭৪ গোল করেছেন তিনি, পেলের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড থেকে পিছিয়ে আছেন ৩ গোলের ব্যবধানে। তবে ৩০ বছর বয়সি এই তারকা গেল অক্টোবরে জানান বিশ্বকাপ খেলেই বিদায় নিতে পারেন তিনি। বিদায়ের আগে তিনি চান রদ্রিগোর হাতে যাক তার জার্সি নম্বরটা। কারণ তার বিশ্বাস, ব্রাজিলের পরবর্তী পোস্টারবয় হতে যাচ্ছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকাই। রিয়াল মাদ্রিদ উইঙ্গার রদ্রিগোকে মনে করা হয় ব্রাজিলের আগামী দিনের তারকা। মাত্র ২১ বছর বয়স তার। এরই মধ্যে ব্রাজিলের জার্সিতে ৫টি ম্যাচও খেলে ফেলেছেন তিনি। আশা করা হচ্ছে, তিতের বিশ্বকাপগামী দলের অন্যতম সদস্য হতে যাচ্ছেন সম্ভাবনাময়ী এই তারকা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি পর্বে রিয়াল মাদ্রিদের বিদায়ই ঘটে গিয়েছিল প্রায়। সেই ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমে হিসাব-কিতাব উল্টে দিয়েছিলেন রদ্রিগো। নিজে দুর্দান্ত গোলই করেননি শুধু, ম্যাচের চালচিত্র বদলে দিয়ে বেনজেমাকে দিয়েও গোল করিয়েছেন। এর ফলেই সেমিফাইনাল খেলেছিল রিয়াল।
কাতার বিশ্বকাপে এবার ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড লাইন বেশ শক্তিশালী। নেইমারের সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের জুটি রদ্রিগো ও ভিনিসিয়াস জুনিয়র। অসাধারণ এই ত্রয়ী ব্রাজিলকে কাতার থেকে কী এনে দিতে পারবে, এমন আলোচনা হচ্ছে ফুটবল বিশ্বে। একই সঙ্গে আরো একটা আলোচনা শোনা যাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপে বেশি আলো ছড়াবেন কোন তারকা?
সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে সুন্দর ফুটবলের আলোয় আলোকিত করেছেন ভিনিসিয়াস। যখনই সুযোগ পেয়েছেন, ভালো খেলেছেন রদ্রিগোও। অন্যদিকে পিএসজিতে নেইমারের গত মৌসুমের অনেকটা সময়ই কেটেছে চোট আর ছন্দহীনতায়। এসব বিবেচনা করে অনেকেই মনে করেন ভিনিসিয়াস জুনিয়রই হতে পারেন এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সেরা খেলোয়াড়। নেইমার অবশ্য অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন, কাতার বিশ্বকাপটা নিজের রঙে রাঙাতে চান। সেটা বলার একটা কারণও আছে। তিনিই যে এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০২২ বিশ্বকাপই হতে পারে তার ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। শেষটা তো শিরোপার রঙে রাঙাতে চাইবেনই।
কিন্তু বিশ্বকাপ শেষে যদি নেইমার জাতীয় দলকে বিদায় বলে দেন, ব্রাজিলের বিখ্যাত ১০ নম্বর জার্সিটা পরবেন কে? অনেকের কাছেই নেইমারের যোগ্য উত্তরসূরি ভিনিসিয়াস। কিন্তু নেইমার তার জার্সির যোগ্য উত্তরসূরি ভিনিসিয়াসকে মনে করেন না। অন্তত রদ্রিগোর কথায় সেটাই মনে হবে।
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গত মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৯টি ম্যাচ খেলে ৯ গোল করেছেন রদ্রিগো, গোলে সহায়তা ১০টি। অন্যদিকে ভিনিসিয়াস ৫২ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ২২টি, সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন ২০টি।
এরপরও নেইমার রদ্রিগোকেই ১০ নম্বরের যোগ্য উত্তরসূরি মনে করেন। অবশ্য এখন পর্যন্ত যত কোচের অধীনই খেলেছেন দুজন, সব কোচই ঠাণ্ডা মাথার জন্য রদ্রিগোর প্রশংসা করেছেন, বয়স অনুযায়ী নাকি অনেক বেশি পরিণত রদ্রিগো।
ফুটবল বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দল ব্রাজিল। তাদের সমান পাঁচটি বিশ্বকাপ জিততে পারেনি বিশ্বের আর কোনো দল। ২০০২ সালে ব্রাজিল যখন বিশ্বকাপ জিতেছিল পঞ্চমবারের মতো, সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন রবার্তো কার্লোস। তবে ব্রাজিলের সেই বিশ্বজয়ের পর পেরিয়ে গেছে আরো ২০ বছর। ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিততে পারেনি আর। সেই খরা কাটানোর সময় অবশেষে চলে এসেছে, বিশ্বাস ব্রাজিল কিংবদন্তি কার্লোসের। বিশ্বকাপ নিয়ে অনেক আশায় আছেন বলে জানালেন তিনি। আগামী ২১ নভেম্বর কাতারের মাটিতে পর্দা উঠবে ২০২২ বিশ্বকাপের। এর দুই দিন পর ২৪ নভেম্বর সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ব্রাজিল তাদের হেক্সা মিশন শুরু করবে। গ্রুপ ‘জি’তে দলটির সঙ্গী হিসেবে আছে সুইজারল্যান্ড ও ক্যামেরুন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ব্রাজিল রীতিমতো অদম্যই ছিল। দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বটা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে শেষ করেছিল সেলেসাওরা। ম্যাচ হারেনি একটিও। মূল তারকারা আছেন ছন্দে। এই দল নিয়ে তাই আশায় বুক বাঁধছেন কার্লোস।
সম্প্রতি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হচ্ছে, ব্রাজিলের একটা দারুণ দল আছে।’ তবে কার্লোসের মতে যে কারণে দলের জেতা উচিত, সেটা একটু ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জেতার সময় চলে এসেছে, কারণ শিরোপার সঙ্গে শেষ ছবিটা আমাদের (২০০২ বিশ্বকাপের)।’
নিজে খেলোয়াড়ি জীবনে জিতেছেন বিশ্বকাপ। আর তাই শিরোপা জিততে কেমন দল চাই সে নিয়েও কার্লোসের ধারণা আছে বেশ। সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ রাইটব্যাকের মতে, শিরোপা জেতার রসদ ভালোই আছে কোচ তিতের দলে।
তিনি বলেন, ‘আমি বেশ আশাবাদী। বিশ্বকাপটা জেতা অত সহজ হবে না। আমাদের পর থেকে শেষ কয়েকবার ব্রাজিলের দলগুলো সববারের মতোই ভালো ছিল, তারা দুর্দান্ত কিছু ম্যাচ খেলেছে বটে কিন্তু শিরোপা জেতার মতো ভালো খেলেনি।’
ব্রাজিলের সবশেষ হারটা এসেছে কোপা আমেরিকার ফাইনালে, তাদের হারিয়ে ২৮ বছরের খরা শেষ করে আর্জেন্টিনা জেতে শিরোপা। তবে কার্লোস মনে করেন, মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরের চেয়ে বিশ্বকাপের গুরুত্বটা ঢের বেশি। তিনি বলেন, ‘কোপা আমেরিকা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু ব্রাজিলিয়ানদের জন্য বিশ্বকাপটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, এর একটা আলাদা স্বাদ আছে।’

সেই শিরোপার জন্য ব্রাজিল অন্যতম ফেভারিট, মনে করেন কার্লোস। বললেন, ‘মোমেন্টামটা ব্রাজিলের পক্ষে আছে। ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যম ইতোমধ্যেই ব্রাজিলকে অন্যতম ফেভারিট বানিয়ে দিয়েছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।’
স্পেন কোচ লুইস এনরিকে সপ্তাহখানেক আগে বলেছিলেন, ব্রাজিল বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট। কার্লোস মনে করেন অন্য কোচরাও এমনটাই বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন, ‘লুইস এনরিকে কয়েকদিন আগে বলেছিলেন এটা। যদি আপনি অন্য সব জাতীয় দলের কোচদের জিজ্ঞেস করেন, তারাও বলবেন, ব্রাজিল বিশ্বকাপ জেতার জন্য চার ফেভারিট দলের একটি। যদি তারা ভালোভাবে প্রস্তুতি নেয়, তাহলে ব্রাজিল আবারো বিশ্বকাপ জিতবে।’
কোপা আমেরিকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ব্রাজিলের জন্য বিশ্বকাপের গুরুত্ব বেশি, এর স্বাদই ভিন্ন। আর এই মুহূর্তে ব্রাজিল দলটি খুবই ভালো।’
এ সময় নিজেদের ফেবারিট ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইউরোপের সংবাদমাধ্যমগুলো ব্রাজিলকে ফেবারিট হিসেবেই রাখে। এটি বড় বিষয়। সেদিন লুইস এনরিকেও এ কথা বলেছেন। আপনি অন্য যে কোচকেই জিজ্ঞেস করবেন, ফেবারিট হিসেবে ব্রাজিলকে সেরা চারের মধ্যেই রাখবে। ভালো প্রস্তুতি নিলে ব্রাজিল এবারো জিততে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়