মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪৪

আগের সংবাদ

উদ্ধারের অপেক্ষা আর ত্রাণের আকুতি : পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ > ভেসে উঠছে বানভাসি মানুষের লাশ > এখনই সচল হচ্ছে না ওসমানী বিমানবন্দর

পরের সংবাদ

আজ ভাষাসংগ্রামী কামাল লোহানীর মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ভাষাসংগ্রামী কামাল লোহানীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২০ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। কামাল লোহানী এ দেশের সাংবাদিকতা, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শুধু একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস। চিরবিদ্রোহের অধ্যায়। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনে সর্বাগ্রে থাকা একজন মানুষ। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে।
সাংবাদিকতা দিয়ে পেশাজীবন শুরু করলেও কামাল লোহানী নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন সব সময়। এ দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৩৪ সালের ২৬ জুন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার খান সনতলা গ্রামে তার জন্ম। বাবা আবু ইউসুফ মোহাম্মদ মুসা খান লোহানী। মা রোকেয়া খান লোহানী। মাকে হারান মাত্র সাত বছর বয়সে। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকার মধ্যে কলকাতার শিশু বিদ্যাপীঠে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। দেশ ভাগের পর ১৯৪৮ সালে চলে আসেন পাবনায়। পাবনা জিলা স্কুল থেকে ভাষা আন্দোলনের বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এ সময় তিনি যুক্ত হন রাজনীতিতে। যোগ দেন পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টিতে।
পাবনায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে যোগ দেন কামাল লোহানী। এরই মধ্যে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পরই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি টানেন তিনি। যুক্ত হন রাজনীতি, সাংবাদিকতা ও সংস্কৃতি চর্চায়। ঢাকার আসার পরেই নাচের প্রতি আগ্রহ জন্মে কামাল লোহানীর। বুলবুল ললিতকলা একাডেমির হয়ে কামাল লোহানী তার নৃত্যগুরু জি এ মান্নানের ‘নকশি কাঁথার মাঠ’ প্রযোজনায় অংশ নেন। পাকিস্তান সাংস্কৃতিক দলের হয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে তিনি যান।
এরই ফাঁকে তিনি চাকরি করেন দৈনিক আজাদ, দৈনিক সংবাদ ও পূর্বদেশে।
১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালনে সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তার ছিল দৃঢ় ভূমিকা। শতবর্ষ পালনের আয়োজনে ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্যে তিনি বজ্রসেনের ভূমিকায় অংশ নিয়ে প্রশংসিত হন। ১৯৬২ সালে স্বল্পকাল কারাবাসের পর কামাল লোহানী ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক হন। এই দায়িত্ব পালন করেন সাড়ে চার বছর।
কামাল লোহানীর লেখা বইগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘আমরা হারবো না’, ‘সত্যি কথা বলতে কী’, ‘যেন ভুলে না যাই’, ‘মুক্তি সংগ্রামে স্বাধীন বাংলা বেতার’, ‘রাজনীতি মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীন বাংলা বেতার’, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমার অহংকার’, ‘এ দেশ আমার গর্ব’, ‘আমাদের সংস্কৃতি ও সংগ্রাম’, ‘লড়াইয়ের গান’, ‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও নৃত্যশিল্পের বিস্তার’, ‘দ্রোহে প্রেমে কবিতার মতো’ এবং কবিতার বই ‘শব্দের বিদ্রোহ।’
মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি : বিকাল ৬টায় তোপখানা রোডে উদীচী চত্বরে স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে কামাল লোহানীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশিত হবে। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করবেন সিপিবির সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাংবাদিক হারুন হাবিব, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, উদীচীর সহসভাপতি প্রবীর সরদার, জামসেদ আনোয়ার তপন, সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এবং সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী সাগর লোহানী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়