ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি জায়েদ খানের

আগের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ : পাচার হওয়া অর্থ দেশে আনার প্রস্তাবে সমর্থন

পরের সংবাদ

ধর্ষণ মামলা থেকে রেহাই পেলেন রোনালদো

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : অবশেষে ধর্ষণের মামলা থেকে রেহাই পেলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ২০০৯ সালের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোনালদোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মডেল ক্যাথেরিন মায়োরগা।
মামলার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত বিশেষ নথি ‘চুরিকৃত’ হওয়ার কারণে তার এই অভিযোগ ‘কলুষিত’ হয়েছে। আর এ কারণেই রোনালদোর বিরুদ্ধে আনা এই মামলা খারিজ করে দিয়েছে লাস ভেগাসের ফেডারাল আদালত।
২০১৮ সালে প্রথম তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন মায়োরগা। ২০১৭ সালে জার্মান সাময়িকী ডার স্পিগেলের প্রতিবেদনের পর রোনালদোর ধর্ষণের অভিযোগ আলোচনায় আসে।
সে সময় ফুটবল দুনিয়ার গোপন নথিপত্র ফাঁস করে দিয়ে আলোচনায় আসা ফুটবল লিকসের কাছ থেকে পাওয়া নথিপত্রের ভিত্তিতে ডার স্পিগেল রোনালদোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগের কথা জানায়।
ডার স্পিগেল জানিয়েছিল, ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের লাস ভেগাসে এক হোটেলে ক্যাথরিন মায়োরগা নামের এক মডেলকে ধর্ষণ করেছিলেন রোনালদো। সে সময় মাত্রই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রোনালদোর রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়া নিশ্চিত হয়েছিল।
ডার স্পিগেল আরো জানায়, সে সময় ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে মায়োরগাকে চুপিসারে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলার দিয়েছিলেন রোনালদো। উদ্দেশ্য যাতে মায়োরগা লাস ভেগাসের পুলিশের কাছে এ নিয়ে মামলা না করেন। ঘটনার সময় রোনালদোর বয়স ২৪ ও মায়োরগার বয়স ২৫ ছিল বলেও জানায় পত্রিকাটি।
কিন্তু ২০১৭ সালে ফুটবল লিকসের ফাঁস করা নথিপত্রের পর মামলাটি আবার আলোচনায় আসে। মায়োরগাও আগের সমঝোতা বাতিল করার চেষ্টা করেন। তার দাবি ছিল, ২০০৯ সালের ওই সমঝোতার সময় তাকে রাজি হতে বাধ্য করা হয়েছিল। মানসিকভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার অবস্থাতেও ছিলেন না তিনি।
এ নিয়ে বেশ কিছুদিন তুমুল আলোচনা হলেও অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় ২০১৯ সালের জুলাইয়ে তা তুলে নেয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।
কিন্তু ২০২১ সালে মামলা নতুন করে চালু করেন মায়োরগা। ধর্ষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ৭ কোটি ডলার চেয়েছিলেন তার আইনজীবী। কিন্তু গত অক্টোবরে ম্যাজিস্ট্রেট জাজ ড্যানিয়েল অ্যালবরেগটসের রায় যায় রোনালদোর পক্ষে।
নতুন করে আড়াই কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ ও আইনি খরচ চেয়ে অন্য আদালতে মামলা করেছিলেন মায়োরগা ও তার আইনজীবী। কিন্তু এবারো হারতে হয়েছে তাদের।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই আদালতের বিচারক জেনিফার ডোরসি এই মামলা খারিজ করার পাশাপাশি ওই নারীর আইনজীবী লেসসি মার্ক স্টোভালকে শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন। ক্যাথরিন মায়োরগা নামের ওই নারী ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে রোনালদোকে দোষী প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন বলে আদালত জানান।
৪২ পৃষ্ঠার ওই রায়ে বলা হয়েছে, পরবর্তী সময়ে ওই নারী আর কোনো মামলা করতে পারবেন না রোনালদোর বিরুদ্ধে। স্টোভালের কারণে ম্যানইউ তারকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলেও আদালত জানান।
রোনালদোর আইনজীবীরা রোনালদো ও মায়োরগার মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেননি। তবে সবকিছুই হয়েছে পারস্পরিক সম্মতিতে। পরের বছর এটিকে ধর্ষণ বলে মামলার হুমকি দেন ওই নারী। সমঝোতা করতে তখন ৪ লাখ মার্কিন ডলার তাকে দিয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু ২০১৮ সালে আবারো ওই নারী আইনি লড়াইয়ে যান, যার ইতি ঘটল সবশেষ রায়ে। ঘটনা মূলত প্রায় ১৩ বছর আগে, ২০০৯ সালের। লাস ভেগাসে ঘুরতে গিয়ে একটি হোটেলে ক্যাথরিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় রোনালদোর। যা একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়। কিন্তু পরের বছরই এটিকে ধর্ষণ বলে অভিযোগ করতে থাকেন ক্যাথরিন। এমনকি মামলার হুমকিও দেন।
তখন ক্যাথরিনকে চুপ রাখার জন্য প্রায় পৌনে ৪ লাখ ডলার দেন রোনালদো। সে দফায় কোর্টের বাইরেই নিষ্পত্তি ঘটে দুই পক্ষের বিরোধের। কিন্তু পরে আবারো এ বিষয়ে অভিযোগ করেন ক্যাথরিন। তার অনুরোধের ভিত্তিতে ২০১৮ সালের আগস্টে আবারো এ বিষয়ে আইনি তদন্ত শুরু হয়।
ক্যাথরিনের অভিযোগের বিপরীতে রোনালদোর লিগ্যাল টিম শুরু থেকেই বলে আসছিল, দুজনের মধ্যে যা হয়েছিল সবই পারস্পরিক সম্মতিতে হয়েছে। তাই এ মামলার কোনো ভিত্তি নেই এবং রোনালদোকে কারণ ছাড়াই হয়রানি করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এটিই সত্য প্রমাণিত হলো।
বিচারক জেনিফার ডোরসি বলেছেন, চুরি করা নথির ভিত্তিতে মামলা করায় মামলাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লিখিত রায়ে বিচারক বলেছেন, ‘অত্যন্ত ব্যক্তিগত প্রকৃতির গুরুতর অভিযোগের নিষ্পত্তি করার সুযোগ মায়োরগা নিজেই হারিয়েছেন।
অন্যায়ভাবে অর্জিত তথ্যের প্রভাবে তার দাবি ও তার স্মৃতি এবং ঘটনার প্রেক্ষাপট প্রভাবিত হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করলে অন্য কোনো রায় দেয়া অপর্যাপ্ত হতো।
মামলার শুরু থেকে যে অন্যায় করা হয়েছে, সেটা ছড়িয়ে পড়া আটকাতে এবং আইনি প্রক্রিয়ার বিশুদ্ধতা রক্ষা করতে হলে এটা বাতিল করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়