প্রধানমন্ত্রী : অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি করব না > শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাল সংসদ

আগের সংবাদ

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী : পাচারের টাকা ফেরত আনব

পরের সংবাদ

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর কমল

প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করহার কমানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। কমপক্ষে ১০ শতাংশ শেয়ার ছেড়েছে, এমন কোম্পানিগুলোকে মুনাফার ২০ শতাংশ কর হিসেবে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগের বছর এই হার ছিল ২২.৫ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। সেখানে এই প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সেই হিসেবে ওয়ালটনসহ অল্প দু’একটি কোম্পানি ছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রায় সব কোম্পানিই আড়াই শতাংশ কর ছাড়ের সুবিধা পাচ্ছে। কারণ, ওয়ালটন তার মোট শেয়ারের মধ্যে এক শতাংশেরও কম শেয়ার বাজারে ছেড়েছে।
শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হলে পূর্বের করহার বজায় থাকবে অর্থাৎ কর দিতে হবে ২২.৫ শতাংশই। তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করহার অপরিবর্তিত রয়েছে। পূর্বের মতোই এসব কোম্পানিকে ৩৭.৫ শতাংশ কর দিতে হবে। মার্চেন্ট বাংকের করহারও ৩৭.৫ শতাংশ রাখা হয়েছে। যেসব ব্যাংক ও বিমা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়, তাদের আগের মতোই ৪০ শতাংশ কর দিতে হবে বলেও জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির জন্যও করহার কমানো হয়েছে। সেসব কোম্পানির করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭.৫ শতাংশ করা হয়েছে।
আবার সিগারেট, বিডি ও তামাকপণ্য বাজারজাত করে, এমন কোম্পানির করহার আগের মতোই ৪৫ শতাংশ রাখা হয়েছে। এর সঙ্গে আড়াই শতাংশ যোগ হবে সারচার্জ হিসেবে।
তালিকাভুক্ত মোবাইল কোম্পানির করহারও আগের মতোই ৪০ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে। আর যেসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের করহারও ৪৫ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে। অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার কমানোর ব্যাপারে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এই খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করেন, তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করহার কমানোয় পুঁজিবাজারের জন্য ভালো হয়নি। তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করহারের মধ্যে আরো বেশি ব্যবধান থাকা প্রয়োজন। তাহলে ভালো কোম্পানিগুলো কর রেয়াত সুবিধার জন্য তালিকাভুক্ত হতে চাইবে। এতে পুঁজিবাজারের ভালো কোম্পানির সংখ্যা বাড়বে এবং পুঁজিবাজার শক্তিশালী হবে। বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোম্পানির সব প্রাপ্তি ও আয় ব্যাংকের মাধ্যমে গৃহীত হবে। আবার ১২ লাখ টাকার অতিরিক্ত ব্যয় ও বিনিয়োগ হলে লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে হতে হবে।
নেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ : প্রত্যাশা অনুযায়ী অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা সাদা করা) বিনিয়োগ না করায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে না। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত আয়ের টাকা কর দিয়ে সাদা করার সুযোগও বাতিলের প্রস্তাব করছি।
সরকার গতবছর পুঁজিবাজারে এক বছর বিনিয়োগ রাখার শর্তে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রেখেছিল। একইসঙ্গে এই নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল, যারা অপ্রদর্শিত আয়ের টাকা বৈধ করে নেবে, তাদের কাছে অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো কর্তৃপক্ষই জানতে চাইবে না। অর্থ সাদা করার জন্য কর ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছিল। এর বাইরে ২৫ শতাংশ প্রদেয় করের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ জরিমানা কর আরোপ করা হয়েছিল।
বিমা খাতের উন্নয়নে নানা উদ্যোগ : বিমা সেবাকে জনবান্ধব ও আপদ মোকাবিলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন বিমা চালু ও বিমা দাবি আদায় বিড়ম্বনা মুক্ত করার মতো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনে শস্য বিমা, গবাদিপশু বিমা ও সরকারি কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য বিমা চালুর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে শস্য বিমা চালু ও এর ব্যাপক প্রসারের জন্য সরকার উৎসাহ প্রদান করেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিমা দাবি আদায়ে বিড়ম্বনা মুক্ত করার লক্ষ্যে বিমা খাতকে সম্পূর্ণ অটোমেশন করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া বিমার আওতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি জোরদারকরণ ও জাতীয় সঞ্চয়ে অবদান রাখার ব্যবস্থা করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়