সংসদে আলোচনা : ‘ছয় দফা ছিল স্বাধীনতার সিঁড়ি’

আগের সংবাদ

ছয় লক্ষ্য অর্জনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন : ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট, সর্বোচ্চ ঘাটতির দিক থেকেও নতুন মাইলফলক > বাজেট ২০২২-২৩

পরের সংবাদ

প্রধানমন্ত্রী : অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি করব না > শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাল সংসদ

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস ও মর্যাদার প্রতীক পদ্মা সেতু নির্মাণে সাহসী ও দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়েছে জাতীয় সংসদ। গতকাল বুধবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭ বিধিতে প্রস্তাব চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী উত্থাপিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর ৪০ জন সংসদ সদস্যের ৫ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট আলোচনার পর তা আন্তরিকতার সহিত সর্বসম্মতিক্রমে কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিকাল সাড়ে ৫টায় আলোচনার সূত্রপাত করেন চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তোফায়েল আহমেদ, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ, রুমিন ফারহানা, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, নারায়ণ চন্দ চন্দ, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ফখরুল ইমাম, বেগম রওশন আরা মান্নান, ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুণ, মৃণাল কান্তি দাস, পীর ফজলুর রহমান প্রমুখ।
প্রস্তাবের ওপর শেষ বক্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের মাথা নত হোক এ কাজ আমি কখনো করব না। অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি, করব না। এই দেশকে আমরা ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি। ক্ষমতা আমার কাছে বড় কিছু না। ক্ষমতা আমার কাছে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ, সেটাই করে যাচ্ছি।
পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের বিষয়ে শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটা এমডি পদের জন্য এক দেশের এত বড় ক্ষতি কীভাবে করে? আমরা বিশ্বব্যাংকের দোষ দিচ্ছি। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ব্যাংক দিয়ে করানো হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট তার শেষ কর্মদিবসে সেদিন সে এটা স্বাক্ষর করে বন্ধ করে দিয়ে গেছে টাকা। তারপর চাপ আসলে অমুককে গ্রেপ্তার করতে হবে, অমুককে গ্রেপ্তার করতে হবে তাহলে টাকা দেবে। আমি বলেছি, আমার কোন অফিসারকে বা আমার কাউকে আমি অপমান করতে দেব না। সে সময় যোগাযোগমন্ত্রীকে অপসারণ এবং সচিবকে মোশাররফকে তো গ্রেপ্তার করেই দিল।
তিনি বলেন, যেখানে কোনো টাকাই ছাড় হয়নি সেখানে দুর্নীতিটা কোথায় করা হলো? আমি চাচ্ছি একটা কাগজও দিতে পারেনি। তারপর আসল অমুককে গ্রেপ্তার করলে টাকা দেবে- এ ধরনের প্রস্তাবে আমি বললাম, পদ্মা সেতু আমি করব না। যেদিন নিজের টাকায় করতে পারব, সেই দিন করব। কিন্তু আমার দেশকে অপমান করে টাকা নেব না। আমাকে ভয় দেখায়, যদি এটা না হয় নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে না। আমি বলেছি, ক্ষমতায় আসব না। এরপর সিদ্ধান্ত নিয়ে যখন পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু করে দিলাম তখনই সবার টনক নড়ল, তখন বাংলাদেশকে সবাই সমীহ করতে শুরু করল হ্যাঁ বাংলাদেশ পারে। আমি যখন বলেছি নিজের টাকায় করব, এদেশের মানুষ এগিয়ে এসেছে। আমরা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করেছি।
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, পদ্মা সেতুর মতো একই দৈর্ঘ্যরে অন্যান্য সেতুর কাজের সঙ্গে তুলনা করলে পদ্মা সেতুকে আমরা ‘গোল্ডেন সেতু’ বলতেই পারি। আর এ সেতু ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে, যা মনে হয় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সেতু।
পদ্মা সেতুর পরতে পরতে দুর্নীতি হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১১ সালে আর শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালে। মূল পরিকল্পনা করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে। সেই সময় ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্প পাস হয়। এরপর দফায় দফায় বাড়ানো হয় পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়। কয়েক দফা বেড়ে এর ব্যয় দাঁড়ায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়