রাজধানীর বছিলায় জুতার কারখানায় আগুন

আগের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : দেড় বিলিয়ন ডলার সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে

পরের সংবাদ

মানববন্ধনে ৯ সংগঠন : প্রাণঘাতী ডিপোর মালিক মুজিবরের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ডিপো মালিকের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে সীতাকুণ্ডে শত শত শ্রমিকের এই করুণ পরিণতি বলে দাবি করলেন ৯ সংগঠনের নেতারা। জানালেন, অনুমোদনহীন বিস্ফোরক রাসায়নিক দ্রব্য দিনের পর দিন ফেলে রাখা হয়েছে। এগুলো মজুত ও সংরক্ষণের নীতিমালা মানা হয়নি। অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার অবস্থা বেহাল। নবায়ন হয়নি পরিবেশ ছাড়পত্রের নবায়ন হয়নি। ডিপোর ১০ মিটারের মধ্যে নিরাপত্তা প্রাচীর ছাড়াই বসবাস করছে মানুষ।
গতকাল রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে ৯ সংগঠনের নেতারা বিএম ডিপোর মালিক মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার ও তার শাস্তির দাবি তোলেন। তারা বলেন, রাসায়নিক সংরক্ষণ নীতিমালা অনুসরণ করে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড রাখা হয়নি। দুর্ঘটনা মোকাবিলার কোনো প্রস্তুতি ছিল না। অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে জরুরি যেসব পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল, সেগুলোর কোনোটাই করেনি ডিপো কর্তৃপক্ষ। তাৎক্ষণিকভাবে শ্রমিক ও অন্যদের যেভাবে বের করে আনা দরকার ছিল, সেটা করা হয়নি।
শ্রম আইনের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, শ্রম আইন, ২০০৬ এবং শ্রম বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী, বড় ধরনের কোনো স্থাপনা বা কোনো কারখানার একটি অগ্নিনিরাপত্তা পরিকল্পনা থাকতে হয়। প্রতিষ্ঠানে কী ধরনের দাহ্য পদার্থ রক্ষিত বা ব্যবহৃত হচ্ছে, সেখানে তার বিশদ বর্ণনা থাকতে হয়।
রাসায়নিক সামগ্রী সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ধরনের শেড নির্মাণ, জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে এবং তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হয়। দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কীভাবে তার ব্যবস্থাপনা হবে, তার প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতির বিষয়টিও পরিকল্পনায় থাকতে হবে। এসব কিছুই মানা হয়নি। ওদিকে সরকারও কোনো তদারকি করেনি।
৯ সংগঠনের নেতারা বলেন বিএম কনটেইনার ডিপো হচ্ছে স্মার্ট গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের আরো দুর্নীতির কথা তুলে ধরে তারা বলেন, একই গ্রুপের আরেকটি প্রতিষ্ঠান আল রাজি কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লিমিডেট; যেটি হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ ঠাণ্ডাছড়ি এলাকায় অবস্থিত; যাকে শর্তসাপেক্ষে রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছিল পরিবেশ অধিদপ্তর।
এর মধ্যে প্রধান একটি শর্ত ছিল, বছরে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ছাড়া অন্য কোনো রাসায়নিক উৎপাদন করা যাবে না এবং সেটিও বছরে ১ হাজার টনের বেশি উৎপাদন করা যাবে না।
কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, বিগত তিন বছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৯ হাজার টন, অর্থাৎ, প্রতি বছর গড়ে ৩ হাজার টন করে রাসায়নিক দ্রব্য রপ্তানি করেছে। উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানে মালিক মুজিবর রহমান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। সরকারের ছত্রছায়াতেই তিনি এই মাত্রার ‘অব্যবস্থাপনা ও মানুষ খুন করেছে’ বলে দাবি করেন তারা।
৯ সংগঠনের সমন্বয়ক ও নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা টিপু বিশ্বাস, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হক লালা, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা বেলাল চৌধুরী প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়