ঐক্য পরিষদের বিবৃতি : ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দে ধর্মীয় বৈষম্য অবসান দাবি

আগের সংবাদ

নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা : সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি

পরের সংবাদ

বগুড়ার শেরপুর : কৃষকের কাজে আসছে না ভর্তুকির কৃষি যন্ত্রপাতি

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নাহিদ আল মালেক, শেরপুর (বগুড়া) থেকে : সরকার কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৫০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকি) দিলেও বগুড়ার শেরপুরে কোটি কোটি টাকার ভর্তুকির কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের কাজে আসছে না।
ভর্তুকিতে নেয়া যন্ত্রপাতির শর্তভঙ্গ করে অন্যত্র হস্তান্তর, কৃষি অফিসের তদারকির অভাব এবং কৃষকদের সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহ এবং সচেতনতার অভাবের কারণে এলাকার মানুষেরা আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে স্বল্পব্যয়ে উন্নত কৃষি উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে শুরু হয় সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প। এর মূল উদ্দেশ্য হলো কৃষকদের মাঝে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও ব্যবহার বৃদ্ধি করে ফসলের ১০-১৫ শতাংশ অপচয় রোধ এবং চাষাবাদে অর্ধেক সময় ও ২০ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় করা, সমন্বিতভাবে চাষাবাদ করে কৃষি যন্ত্রপাতির কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা, কৃষি উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করে ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা।
শেরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরের বেরো মৌসুমে উপজেলার ৭ জন কৃষককে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দেয়া হয়েছে।
একেকটি মেশিনে প্রায় ১৪ লাখ টাকা করে ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। ৭৬টি আবেদনের মধ্যে ৪টি পাওয়ার থ্রেসার (ধান মাড়াই মেশিন) বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিগত আমন মৌসুমে ৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বরাদ্দ পাওয়া গেলেও বিতরণ হয়েছে ৪টি। প্রতিটি মেশিনের বাজার মূল্যের অর্ধেক টাকা সরকার ভর্তুকি দেয়। বাকি টাকা কৃষককে পরিশোধ করতে হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে উপজেলায় ৪০ লাখ টাকা ভর্তুকিতে ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়।
যেগুলো দুই বছর না যেতেই আর ব্যবহার হচ্ছে না। উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের শটিবাড়ি গ্রামের কৃষক ফরিদ উদ্দিন ভর্তুকিতে ধান মাড়াই মেশিন তুলে পার্শ্ববর্তী রায়গঞ্জ এলাকায় বিক্রি করেছেন।
ভর্তুকিতে কম্বাইন্ড হারভেস্টার নেয়া ঘোষপাড়ার নিমাই চন্দ্র ঘোষ জানান, আমার এসিআই কোম্পানির মেশিনটি ৫শ ঘণ্টা চলেছে তারপর আর মেরামত করা হয়নি।
ফুলবাড়ী গ্রামের কৃষক মোশাররফ হোসেন জানান, কম্পাইন্ড হারভেস্টার মেশিন আছে তবে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
উপজেলার নাইশিমুল গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, দুটি মেশিন ভর্তুকিতে পেয়েছি। এর মধ্যে একটি মেশিন পঞ্চগড়ে আছে। স্থানীয় কৃষকদের চাহিদা না থাকায় মেশিন বাইরে পাঠাই।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, সরকার যে এসব কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ভর্তুকি দিচ্ছে তা আমরা জানতে পারি না। তাছাড়া যন্ত্রপাতি ব্যবহারে আগ্রহ বাড়াতে সচেতনতা বাড়াতে কৃষি অফিসের উদ্যোগ নেই বললেই চলে।
এসব যন্ত্রপাতি এলাকায় ‘নির্ধারিত ভাড়ায়’ ব্যবহার করা গেলে কৃষকদের অনেক সাশ্রয় হতো। তাছাড়া হস্তান্তরযোগ্য না হলেও এসব যন্ত্রপাতি অহরহ হাতবদল হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান জানান, সরকারি ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি দেবার জন্য আমরা কৃষকদের নিকট থেকে আবেদন আহ্বান করি।
এরপর আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাই করে উপজেলা পর্যায়ে সভার মাধ্যমে ভর্তুকির যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়। পরবর্তীতে তারা এসব ব্যবহার করছে কি না তাও আমরা নজরদারি করি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়