ভারতের গমে রুবেলা ভাইরাস : অর্ধলাখ টন ফেরত দিল তুরস্ক

আগের সংবাদ

কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন : ভোরের কাগজের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

পরের সংবাদ

টোল ৪০ শতাংশ কমানোর দাবি পরিবহন মালিকদের

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেব দুলাল মিত্র : পদ্মা সেতুর টোল কমপক্ষে ৪০ শতাংশ কমানোর দাবি জানিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। টোল না কমালে মালিকদের বাস ভাড়া বাড়াতে হবে। বাস ভাড়া বাড়ালে যাত্রীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকারের এই টোল হার কমানো উচিত। একই দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।
এদিকে সড়ক যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদ্যমান টোলহারে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করলেও ভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
জানা গেছে, সেতু বিভাগ পদ্মা সেতুর টোল হার নির্ধারণের সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন মালিকরা গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু করেছে। পরিবহন মালিকদের অনেকেই এই রুটের বাস ভাড়া যাত্রীপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর হিসাব কষছেন। টোলের হার ফেরি পারাপারের খরচের চেয়ে দেড় গুণ বেশি। এছাড়া সেতুর উভয় দিকে হাইওয়ের টোল তো আছেই। পরিবহন কোম্পানিগুলো এই বিষয়টি নিয়ে মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে ইতোমধ্যেই আলোচনা করেছে। যদিও পদ্মা সেতু ব্যবহার করলে ঢাকা থেকে সব রুটের দূরত্ব অনেকখানি কমে যাবে। এতে পরিবহনগুলোর জ¦ালানি খরচও কমবে। এ কারণে কেউ কেউ মনে করেন বাসভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর টোলহার নতুন সংযোজন। শুনেছি, মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়কেও টোল দিতে হবে। এসব হিসাব করেই পরিবহন মালিকরা ভাড়া সমন্বয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। অতিরিক্ত টোল আদায় করা হলে বাসের ভাড়া সমন্বয় করতে হবে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব। মালিকরা তো আর লোকসান দিয়ে গাড়ি চালাবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, পদ্মা সেতুর টোলহার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো উচিত। শুরুতেই মোটা অঙ্কের টোলহার নির্ধারণ করা সরকারের উচিত হয়নি। টোল হার কমালে বাসের ভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। সড়কের টোল ও পদ্মা সেতুর টোল মিলিয়ে পরিবহনগুলোকে ভালো অঙ্কের টাকা গুনতে হবে। পরিবহনগুলো এই টাকা যাত্রীর কাছ থেকেই আদায় করবে। বাড়তি টাকা যাত্রীদেরই গুনতে হবে। সরকার একদিকে গণপরিবহনে যাত্রীসেবার মান বাড়াতে বলছে। কিন্তু অন্যদিকে সড়কে ও সেতুতে নিজেদের ইচ্ছেমতো টোল নির্ধারণ করছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, শুরুতেই পদ্মা সেতুর যে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে তা আমাদের কাছে অতিরিক্ত বলেই মনে হয়। এই টোলহার না কমালে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাবে। বাস ভাড়াও বাড়বে। এখন ঢাকা-মাওয়া হাইওয়েতে টোল দিতে হচ্ছে। এরপর সেতু পারাপাড়ের জন্য মোটা অঙ্কের টোল দিতে হবে। সেতু পাড় হয়ে আবার মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের টোলও দিতে হবে। এত টোল দিতে হলে অনেকেই সড়ক পথের পরিবর্তে নৌপথ ব্যবহার করবে। এই টোলহার সরকারের বিবেচনা করা উচিত।
এদিকে সড়ক যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যাত্রীবাহী বাসগুলো বিদ্যমান টোলহারে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করলেও যাত্রীর ভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করে সড়ক যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, পদ্মা সেতুর টোলের হার ঠিক আছে বলেই আমি মনে করি।
এই টোলের কারণে বাসের ভাড়া খুব বেশি বাড়বে না, যদি বিআরটিএ কঠোরভাবে মনিটরিং করে। সামান্য কিছু ভাড়া বাড়লেও যাত্রীরা ভোগান্তি সহজেই এড়িয়ে যেতে পারবেন। ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তির চিত্র নিশ্চয়ই আমাদের মনে আছে।
তিনি বলেন, ফেরিতে বিআইডব্লিউটিএর নির্ধারিত ভাড়ার পরেও বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। ঘাটে কখনো লম্বা সময়ের জন্য আটকে পড়লে আরো বেশি টাকা লাগে এবং শারীরিক কষ্ট পেতে হয়। কিন্তু সেতুতে এসব সমস্যা হবে না। সবাই সুবিধা পাবে, টাকা কিছুটা বেশি গেলেও সময় নষ্ট হবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়