কুসিক নির্বাচন : ইভিএমে ভোটের প্রক্রিয়া দেখলেন ২১ প্রার্থী

আগের সংবাদ

গোপনে তৎপর জামায়াত : কৌশলে চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম > ‘যুগপৎ’ আন্দোলনের ছক

পরের সংবাদ

আর্জেন্টিনা-ইতালি মহারণ

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ফুটবল প্রেমীদের জন্য অসাধারণ একটি রাত হতে যাচ্ছে আজ। দেশজুড়ে ফুটবল ভক্তদের মধ্যে বিরাজ করবে আনন্দ-উচ্ছ¡াস। আকাশি-নীল জার্সিতে লিওনেল মেসি মাঠে নামার সময় বেশ একটা বাকি নেই। আজ রাতেই দক্ষিণ আমেরিকা ও ইউরোপের সেরাদের লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা ও ইতালি। ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলিতে রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে মুখোমুখি হবে দুই দল। ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের শীর্ষ ফুটবল প্রতিযোগিতার দুই সেরা দলকে নিয়ে আয়োজিত এক ম্যাচের এই লড়াইয়ের নাম ‘ফাইনালিসিমা’।
হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের দুই প্রতিপক্ষদের মধ্যে ২০২১ কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বীদের মাটিতেই ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপ জয় করেছে আর্জেন্টিনা। এই শিরোপা জয়ের সুবাদের দীর্ঘ ২৮ বছরের শিরোপার আক্ষেপ মিটিয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। অপরদিকে ওয়েম্বলিতেই রোমাঞ্চকার ম্যাচে টাইব্রেকারের মাধ্যমে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জয় করেছে ইতালি। ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে ফেরার ইঙ্গিত দিলেও শেষ পর্যন্ত গত আসরের ন্যায় কাতার বিশ্বকাপেও কোয়ালিফাই করতে পারেনি তারা। ইউরোপ সেরা হওয়ার সুবাদে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেয়েছে কিয়েলিন্নিরা।
একই সঙ্গে মেসিদের বিপক্ষে যে কোনো মূল্যে জয় নিয়ে ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে চাইবে ইতালি। এই ম্যাচের পর ইতালির জার্সি তুলে রাখবেন অধিনায়ক জর্জিও কিয়েলিন্নি। এটিই হবে তার শেষ ম্যাচ। ইতোমধ্যে ক্লাব ফুটবল থেকেও অনেকটা সড়ে গিয়েছেন। সিরি’আ লিগের চলতি মৌসুমের নিজেদের শেষ ম্যাচে জুভেন্তাসকে বিদায় জানিয়েছেন কিয়েলিন্নি।
অপরদিকে আর্জেন্টিনার আকাশি-নীল জার্সি তুলে রাখার আভাস দিয়েছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আনহেল ডি মারিয়াও। ক্লাব ফুটবলে পিএসজির সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়েছে এই মৌসুমে। আসন্ন মৌসুমে দেখা যাবে নতুন ঠিকানায়। ইতোমধ্যে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, কাতার বিশ্বকাপের পরই আর্জেন্টিনাকে বিদায় জানাবেন এই ফরোয়ার্ড।
সর্বশেষ কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলের মাটিতে ডি মারিয়ার গোলেই ২৮ বছর পর শিরোপা পেয়েছে আর্জেন্টিনা। অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানাতে গিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বিশ্বকাপের পরই সময় হয়ে যাবে।
অনেক ছেলেরা জাতীয় দলে এসেছে, তারা ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে। আমি যখনই যাই তখনই দেখি তারা একটু একটু করে উন্নতি করছে। তারা জাতীয় দলে এবং ক্লাব পর্যায়ে দারুণ পারফর্ম করছে। তাই আমার এরপরও চালিয়ে যাওয়া কিছুটা হয়তো স্বার্থপর মনে হতে পারে। আমি অনেক বছর খেলেছি- যা চেয়েছিলাম তা অর্জন করতে পেরেছি। বিশ্বকাপ আসন্ন, আমি সেখানে যেতে চাই। এরপর আমি নিশ্চিতভাবেই সরে যাব।
প্যারাগুয়ের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার অন্যতম প্রতিভাবান এই ফরোয়ার্ডের অভিষেক হয়েছিল ২০০৮ সালে।
এরপর জাতীয় দলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ ও ছয়টি কোপা আমেরিকায় অংশ নিয়েছেন। আলবিসেলেস্তেদের হয়ে এখন পর্যন্ত ১২১ ম্যাচ খেলে ২৪ গোল করেছেন তিনি। ২০০৭ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জিতেছেন ডি মারিয়া।
ওয়েম্বলিতে ইতালির বিপক্ষে লড়াই করতে গত রবিবার শক্তিশালী দল নিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে স্ক্যালোনি। ইতালির বিপক্ষে আজ স্ক্যালোনির পরিকল্পনায় আর্জেন্টিনার গোল পোস্ট সামলাতে পারেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। সেই সঙ্গে রক্ষণভাগের চাপ সমালানোর দায়িত্বে থাকবেন নিকোলাস ওটামেন্ডির সঙ্গে ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, মলিনা ও মার্কাস আকুনিয়া। রদ্রিগো ডি পল ও গুইদোর সঙ্গে জিওভানি লো সেলসো সামলাবেন মাঝমাঠ। এছাড়া আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগের মেসির নেতৃত্বে দেখা যাবে লাওতারো মার্টিনেজ ও ডি মারিয়াকে।
যুক্তরাজ্যে প্রস্তুতির ফাঁকে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছেন, ‘ম্যাচটা দারুণ হবে! ওরা ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন। বিশ্বকাপে থাকলে ফেবারিট ধরা হতো। দুর্ভাগ্য যে খেলার সুযোগ পায়নি। ফুটবলীয় কারণেই তারা বাদ পড়েছে। বিশ্বকাপের ড্রয়ে কেউ তাদের মুখোমুখি হতে চাইত না। তবে আমরা এই ম্যাচে জয় চাই। একই সঙ্গে বিশ্বসেরা এই ফরোয়ার্ড আরো বলেছেন, তাদেরও জয়ের জন্য মাঠে নামা উচিত। এটা তো অফিসিয়াল ম্যাচ- যা আয়োজন করছে ফিফা। খেলোয়াড়, ভক্ত ও দেশের জন্য নিজেদের ঝুলিতে আরেকটি কাপ যোগ করতে চায়।
ইতালির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার সম্ভাব্য একাদশ : এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, নাহুয়েল মলিনা, নিকোলাস ওটামেন্ডি, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, মার্কাস আকুনিয়া, রদ্রিগো ডি পল, গুইদো রদ্রিগেজ, জিওভানি লো সেলসো, লাওতারো মার্টিনেজ, লিওনেল মেসি ও আনহেল ডি মারিয়া।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ইতালির সম্ভাব্য একাদশ : ডোনারুম্মা, দি লরেঞ্জো, লিওনার্দো বোনুচি, জর্জিও কিয়েলিন্নি, এমারসন, নিকোলো বারেলা, জর্গিনহো, ভেরেত্তি, ফেদেরিকো চিয়েসা, ইমোবিলে, লরেঞ্জো ইনসাইন।
দুই মহাদেশের দুই চ্যাম্পিয়নের মুখোমুখি হওয়ার ম্যাচকে ‘লা ফিনালিসিমা’ বলা হলেও একসময় এই ম্যাচের নাম ছিল আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি কাপ। এটি একটি অফিসিয়াল প্রতিযোগিতা, যা ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা এবং দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল বন্ধুত্বের অংশ হিসেবে যৌথভাবে আয়োজন করেছে এর আগে।
১৯৮৫ সালে তখনকার ইউরো চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স এবং কোপা আমেরিকা জয়ী উরুগুয়ের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে এ প্রতিযোগিতা মাঠে গড়ায়।
এরপর ১৯৯৩ সালে দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা ও ডেনমার্ক। তখন আর্জেন্টিনা ছিল কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন এবং ডেনমার্ক ইউরো জিতেছে। ২৯ বছর বিরতির পর আবারও এ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দুই মহাদেশের দুই চ্যাম্পিয়ন। ইতালির বিপক্ষে ১৯৮৭ সাল থেকে হারেনি আর্জেন্টিনা। ইংল্যান্ডে ২০১৮ সালে সর্বশেষ মুখোমুখিতে ২-০ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়