করোনা পরিস্থিতি আরেকটি মৃত্যুহীন দিন, শনাক্ত ২৬

আগের সংবাদ

যেভাবে টাকা পাবেন গ্রাহকরা > ডেসটিনি মামলার রায়ে আদালতের নির্দেশনা : জব্দ করা সম্পদ বিক্রি ও জরিমানার অর্থ কমিটির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া হবে

পরের সংবাদ

দুদকে ‘শ্বেতপত্র’ জমা : একশ ধর্ম ব্যবসায়ীর দুর্নীতির তদন্ত চায় গণকমিশন

প্রকাশিত: মে ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ একশ ওয়াজ ও ধর্ম ব্যবসায়ী এবং এক হাজার মাদ্রাসার দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ‘শ্বেতপত্র’ জমা দিয়েছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন।
‘বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শিরোনামে ২ হাজার ২০০ পৃষ্ঠার এই তদন্ত প্রতিবেদনে হেফাজত, জামায়াত, বিভিন্ন ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠী এবং ডিসি, ওসিসহ যেসব প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাদের সহযোগিতা করেছে ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় উৎসাহিত করেছে তাদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে মামলা করার ওপর জোর দেয়া হয়েছে শ্বেতপত্রের সুপারিশে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদক কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর গণকমিশনের সভাপতি, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, মামুনুল হকসহ যারা ওয়াজ ব্যবসায়ী এ রকম কয়েকশ জনের নাম এসেছে। তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছেন। নারীদের বিরুদ্ধে নোংরা কথা বলেছেন, নারীরা যাতে চাকরিতে যেতে না পারেন সে ব্যাপারে কথা বলছেন। ওয়াজ ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন অপরাধ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অনেক দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছি, সেখানে অর্থপাচার একটি বড় ফ্যাক্টর। ওয়াজ ব্যবসায়ী, ধর্মান্ধ গোষ্ঠী হেফাজত, জামায়াতসহ মৌলবাদী সংগঠনগুলো প্রচুর অর্থপাচার করেছে। সেই তথ্য-প্রমাণ আমরা পেয়েছি।
সাবেক এই বিচারপতি বলেন, শ্বেতপত্রে সব মাদ্রাসার বয়ান, বৃত্তান্ত ও ওয়াজকারী ব্যক্তিদের ব্যাকগ্রাউন্ড উল্লেখ করেছি। শুধু হেফাজত নয় যারা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সমস্যা সৃষ্টি করেছে তাদের রাজনৈতিক পরিচয়, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সবকিছু তুলে এনেছি। অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ওয়াজ ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনই অপরাধ করছেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। মামুনুল হক একজন ধর্ষণ মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জের ঝুলন দাস প্রতিবাদ করল ও ফেসবুকে লিখল। সেজন্য ঝুলন দাসকে কারাগারে যেতে হলো অথচ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করা হলো না।
ইতোমধ্যে দুদক ৫০ জন ওয়াজ ও ধর্ম ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে জানিয়ে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, শুধু ওয়াজ ব্যবসার কারণে নয়, অন্যান্য দুর্নীতি-সংক্রান্ত কারণে তদন্ত শুরু করেছেন। আমরা যে শ্বেতপত্র জমা দিয়েছি সেটা দেখে তারা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে তদন্ত করার জন্য তারা সিআইডির কাছে পৌঁছে দেবে। তিনি বলেন, ওয়াজ ব্যবসায়ী, ধর্ম ব্যবসায়ী ও ধর্মীয় উন্মদনা যারা সৃষ্টি করছে এমন ধর্মান্ধ গোষ্ঠী আর বাড়তে দেয়া যাবে না। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপ চেয়েছি।
প্রসঙ্গত, গত বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে ধর্ম ও ওয়াজ ব্যবসায়ীদের সাম্প্রদায়িক উন্মাদনার পরিপ্রেক্ষিতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক ককাসসহ ৩২ জন সদস্য নিয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠিত হয়।
তদন্ত কমিশন দীর্ঘ ৯ মাস কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য নিয়ে শ্বেতপত্র তৈরি করে। গত মাসে সেটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়া হয়। গতকাল প্রথমে দুদকে এরপর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে জমা দেয়া হয়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, শহীদ সন্তান আসিফ মুনির তন্ময়, ব্যারিস্টার নাহিদা চৌধুরী, মো. সাইফউদ্দিন রুবেল প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়