সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে পাথওয়ের ইফতার বিতরণ

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জে ভারসাম্যের কূটনীতি : ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে দুই পরাশক্তির চাপ, কোয়াড-আইপিএসে যোগ দিতে মার্কিন তাগিদ, চীনের মানা

পরের সংবাদ

নাগরা জুতা রহস্য

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পা ঢাকা তবে সামনে চ্যাপ্টা জুতা। পায়ের আঙুলের উপর দিয়ে সরু হয়ে বেরিয়ে গেছে তার অগ্রভাগ তাতেই মণিমুক্তা দিয়ে রকমারি কাজ করা। পুরানো দিনে রাজাদের জুতা ছিল এমনই বিলাসিতায় মোড়া। বাংলায় সে জুতার নাম ছিল নাগরা। পায়ে দিয়ে গটগট করে হেঁটে যেতেন খানদানি বংশের অভিজাত পুরুষ। শুধু বাংলায় নয়, বিদেশেও একসময় এই ধরনের জুতা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। নারী-পুরুষ উভয়ের পায়েই দেখা যেত লম্বা সূচালো অগ্রভাগযুক্ত সেই জুতা। পশ্চিমের দেশগুলোতে মধ্যযুগে এই ধরনের জুতো ছিল দারুণ জনপ্রিয়। মূলত অভিজাত শ্রেণীর মানুষের পায়েই এমন জুতা দেখা যেত। যার সামর্থ্য যত বেশি তার জুতা হত তত সূচালো আর লম্বা। এই ধরনের জুতার নাম ছিল ক্র্যাকোস বা পৌলেইন। এখন এসব জুতা ‘ওল্ড ফ্যাশন’। তবে ১৪,১৫ শতকে প্রায় দেড়শ বছর ধরে ইউরোপে এইসব জুতার রমরমা চলেছিল। কিন্তু কেন এমন লম্বা সূচালো জুতার এত কদর ছিল সে সময়। পোল্যান্ডের শহর ক্র্যাকোর নামে এই জুতার নামকরণ করা হয়েছিল। ইউরোপে যাদের টাকা আছে তারাই এই জুতা পরতে পারতেন। গরীবদের জন্য এই জুতা নয়। সাধারণত চামড়া দিয়েই জুতাটি তৈরি করা হত। সঙ্গে ভিতরে শ্যাওলা জাতীয় জিনিসপত্র ভরা থাকত। সাধারণত এই ধরনের জুতা পরে খুব বেশি হাঁটাচলা করা যেত না। খুব বেশি পরিশ্রমের কাজও এই জুতা পরে করা সম্ভব ছিল না। আর সেই কারণেই অভিজাত, বিলাসী মানুষের পায়ে এই জুতা শোভা পেত। আজকালকার দিনে প্রাইভেট জেট বা খুব দামী ঘড়ি থাকলে যেমন অর্থনৈতিক অবস্থানের মানদণ্ড হিসেবে বিচার্য হয় তা, এই জুতার স্টেটাসও ছিল অনেকটা সেরকম। লন্ডন মিউজিয়ামে এই ক্র্যাকোস বা পৌলেইন জুতার দারুণ কালেকশন রয়েছে। বলা হয়, ব্ল্যাক ডেথ নামক মহামারীতে ইউরোপে একসময় মুড়িমুড়কির মত মানুষ মারা গিয়েছিলেন। তার ঠিক পর থেকেই এই ধরনের লম্বা জুতা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু ট্রেন্ড তো আসে আর যায়। এত দীর্ঘ সময় ধরে কেন এই ধরনের জুতার ফ্যাশন ট্রেন্ড বিখ্যাত হয়ে রইল ইউরোপে? অনেকে বলেন কারণটা সহজ। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে যে কোনও জিনিস চারদিকে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। তখন তা ছিল না। তাই একটা ট্রেন্ড সকলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে অনেক বেশি সময় লাগত। ক্র্যাকোস অভিজাতদের মধ্যে থেকে একসময় নেমে এসেছিল সাধারণ মানুষের মাঝেও। তারপর এই ট্রেন্ড অবলুপ্ত হয়। সবটাই সময়সাপেক্ষ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়