খতিয়ে দেখতে শিগগিরই তদন্ত কমিটি : ঢাকা-টিটি কলেজ ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়নি

আগের সংবাদ

সড়কে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল : সড়ক পরিবহন আইন পুরোপুরি বাস্তবায়নের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

রোজা রাখেন কাজও করেন

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শুরু হতে যাচ্ছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সিয়াম সাধনার মাস। রমজানজুড়ে চলে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা। এর যেমন আছে ধর্মীয় গুরুত্ব তেমনি এদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকেও মহিমান্বিত করেছে রমজান। শোবিজের মানুষদের প্রতি ভক্তদের কৌতূহলের শেষ নেই। তারকাদের ব্যক্তি জীবন, ধর্মীয় আচরণ কেমন তাও জানতে চান অনেকে। শুটিংসহ নানা রকম ব্যস্ততার মাঝেও অনেক মুসলিম তারকা নিয়মিত রোজা রাখেন। কয়েকজন তারকা শোনালেন রমজানকে ঘিরে তাদের প্রস্তুতির গল্প ও রোজা রাখা নিয়ে নানান স্মৃতি। শুনলেন রোমান রায়

ছোটবেলায় রোজার সময়
খুব আনন্দ লাগত
পূর্ণিমা

ছোটবেলায় রোজা নিয়ে অন্যরকম স্মৃতি সবারই তো কমবেশি থাকে। ছোটবেলায় বাবা-মাকে রোজা রাখতে দেখতাম। তখন থেকেই রোজা রাখতে চাইতাম। বাবা-মা বুঝাতেন প্রথম রোজাটা থাকলেই হবে। পরের গুলো রাখতে হবে না। তারা ভাবতেন ছোট মানুষ কষ্ট হবে তাই। কিন্তু আমরা রোজা রাখতে চাইতাম। অপেক্ষায় থাকতাম কখন ইফতারের সময় হবে। আর ঠাণ্ডা শরবত কখন দিবে। তার আগে মা দিতে চাইতেন না (হাসি)। সেসময় খুব মজা লাগত। আগে রোজার সময় শুটিং করতাম। এখন গরমে রোজার সময় শুটিং করি না। তবে যে কাজটা না করলেই নয়, তেমন কাজ করি। ইফতারিতে পিয়াজু, বেগুনি এগুলো খুব মজার। আমি এগুলো খুব পছন্দ করি।

মনের শান্তির
জন্য রোজা রাখি
ইমন

যখন খুব ছোট ছিলাম তখন আব্বা-আম্মা বলতেন প্রথম রোজা আর শেষ রোজা রাখলে সব রোজা রাখা হয়। যেহেতু তখন ছোট ছিলাম তাই সেটাই বিশ্বাস করতাম। এবং তাই করতাম। বড় হওয়ার পর বুঝতে পেরেছিলাম সেটা ভুল। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোজা রাখার সংখ্যা বাড়তে থাকল। অনেক বছর ধরেই সব রোজা রাখছি। রোজা রেখে শুটিং করা কষ্ট হলেও মনে একটা প্রশান্তি কাজ করে। একটা পবিত্রতার বিষয় আছে। এই রমজান মাস আমাদের সকলের জন্য খুব তাৎপর্যময়। সওয়াবের আশায় নিজের মনের শান্তির জন্য রোজা রাখা হয়। রোজা রাখলে মনের জোর বেড়ে যায়। রোজার সময় সন্ধ্যায় সবার সঙ্গে বসে ইফতার করা একটা উৎসবের মতো মনে হয়। সেসময় অনেক মজার মজার খাবার থাকে। বাসায় কিংবা শুটিং সেটে যেখানেই ইফতার করি সেসময়টা খুব ভালো লাগে। সেহরির সময় উঠে সবার সঙ্গে সেহরি খেতে ভালো লাগে। এটাও একটা আনন্দের। ইফতারির সময় মুড়িমাখাটা খেতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে।

রোজা রেখে কাজ করতে
ভালো লাগে
নিরব

ছোটবেলায় তো রোজা রাখার জন্য এক ধরনের এক্সাইটমেন্ট কাজ করত। সেসময় একটা প্রতিযোগিতার মতো ছিল। সর্বোচ্চ কতক্ষণ না খেয়ে থাকা যায়। সকালে ঘুম থেকে ওঠে ১২টা বা ১টা পর্যন্ত না খেয়ে থাকতাম। এরপর দিন আরো বেশি সময় না খেয়ে থাকার চেষ্টা করতাম। এটা ছিল নিজের রেকর্ড নিজে ভাঙার একটা চ্যালেঞ্জ। এভাবে করতে করতে রোজা রাখা হয়ে গেছে। সেসময় এ ব্যাপারগুলো খুব মজার ছিল। এখন রোজা রেখে কাজ করতে হয়। রোজা রেখে কাজ করতে কোনো কষ্ট হয় না। রোজা রেখে কাজ করার সময় খুব তাড়াতাড়ি চলে যায়। রোজার সময় বাসায় থাকলে মনে হয় সময় কাটে না। মনে হয় ইফতারের জন্য অপেক্ষা করছি। সে সময়টা অনেক দেরিতে কাটে। শুটিংয়ে থাকলে কাজে গল্পে কীভাবে সময় পার হয় টেরই পাওয়া যায় না। তাই রোজার সময় রোজা রেখে কাজ করতে ভালো লাগে।
ইফতারে সময় মুড়ি, ছোলা, বেগুনি, পিঁয়াজু, খেজুর, শরবত এই খাবারগুলো ভালো লাগে বেশি। এখন তো আরো অনেক অনেক খাবারের পদ থাকে। সেগুলোও ভালো লাগে।
ছোটবেলা থেকেই
রোজা রাখি
মেহজাবীন

ছোটবেলায় তো আমার বিদেশে কেটেছে। আরব দেশে খুব গরম থাকে। ছোটবেলা থেকেই আমি রোজা রাখি। রোজা রেখে স্কুলে যেতাম। সেখানে আমার স্কুল বন্ধুরা রোজা রাখত। সেসময়ে পরিবারের ও বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করার অনেক মজার দিন ছিল। এখন রোজা রেখেই শুটিং করি। গরমের মধ্যে কষ্ট হলেও রোজা রাখতে হবে। এবার তো গরমেই রোজা পড়ে গেল। কাজ তো করি নিজের জন্য, কাজের পাশাপাশি আল্লাহর ইবাদতও করা উচিৎ। রোজা রেখে শুটিং করে সবার সঙ্গে ইফতার করলে মনে প্রশান্তি কাজ করে। সবার সঙ্গে ইফতার করার মজাই আলাদা। ইফতারিতে আলাদা করে কোনো পছন্দের খাবার নেই। ইফতারিতে আমি সব রকমের খাবারই পছন্দ করি। মুড়ি, ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, খেঁজুর এগুলো ইফতারিতে ভালো লাগে।

সমবয়সিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে রোজা রাখতাম
ববি

ছোটবেলায় রোজা রাখাটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল যে রোজা রাখব। আমার সমবয়সিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে রোজা রাখতাম। আমি কয়টা রোজা বেশি রাখতে পারতাম। রোজা রাখা এটা দেখানোরও বিষয় ছিল, সেসময় তো বুঝতাম না। রাখতে হবে এটাই মাথায় ছিল। রোজার পর ঈদ আসবে তার জন্য অপেক্ষা করতাম। বেশি রোজা রেখেছি বলে বাবার কাছে বেশি পোশাক আবদার করতাম। রোজা রেখেছি এটা নিয়ে গর্ব হতো। আর ইফতারের সময় মনে হতো সব খেয়ে ফেলব, কিন্তু পরে বেশি কিছু খেতে পারতাম না। সেসময়ে খুব মজা হতো। এখন গরমের সময় রোজা রেখে কাজ করা খুব কষ্টের হয়ে যায়। বেশি কষ্ট হয়ে যায় পানির জন্য। রোজার ঈদে আমার বেশ কিছু সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। সেসময়ে কাজগুলো খুব তাড়াহুড়ো করে করতাম। নিজের কাজের পাশাপাশি ধর্মীয় কাজও করা দরকার। রোজা রেখে কষ্ট করে কাজ করলে আল্লাহর বরকত থাকে। ইফতারের খাবারগুলো সব মজাদার হয়। আমার কাছে ইফতারের সব খাবার ভালো লাগে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে পিঁয়াজু।

এবারো রোজা রেখে কাজ করব
শবনম ফারিয়া

ছোটবেলার সবকিছুই একটু অন্যরকম ব্যাপার থাকে। আমি যখন প্রথম রোজা থাকি, সেদিন বাবা-মা আশপাশের সবাইকে আমাদের বাসায় ইফতারের জন্য দাওয়াত করেছিলেন। দশ এগারো বয়স থেকেই নিয়মিত রোজা রাখছি। যদিও সে সময় মা বুঝাতো আরেকটু বড় হলে রোজা রাখতে। আমার ডায়াবেটিস আছে। তাই মা এখন সব সময় আমার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখেন। শুটিংয়ে থাকলেও মা বারবার ফোন করে আমার খবর নেন, আমার কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না। রোজা রেখে শুটিং করা অনেক কষ্টের। বিশেষ করে গরমে রোজা রেখে শুটিং করা খুব কঠিন। গত দুই বছর তো করোনার জন্য রোজায় কোনো শুটিং করতে পারিনি। এবারে শুটিংয়ের সময় কী হবে এটা নিয়ে চিন্তিত। তবুও রোজা রেখে কাজ করব। অনেকে মনে করেন অভিনয় করি বলে হয়তো আমরা ধর্মকর্ম করি না। এটা ভুল। রোজার সময় শুটিং ইউনিটের সবাই একসঙ্গে বসে ইফতার করি। এটা একটা উৎসবের মতোই মনে হয়। ইফতারিতে আমি ফল শরবত বেশি পছন্দ করি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়