কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ মাঠে গড়াবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি। এবারের লিগে অংশ নেয়া ১২ ক্লাবের ৫টির অধিনায়ক বিদেশি। বসুন্ধরা, আবাহনী, শেখ জামাল ধানমন্ডি, মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ পুলিশের মতো দলগুলোকে নেতৃত্ব দেবেন বিদেশিরা। আসর শুরু হতে বাকি আর মাত্র দুদিন। গতকাল রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে লিগের পৃষ্ঠপোষক ও টিভি স¤প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে একসঙ্গে হয়েছিলেন লিগের ১২ অধিনায়ক। এ অনুষ্ঠানে আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যেই অধিনায়করা জানিয়েছেন নিজেদের লক্ষ্যের কথা। অস্ত্রোপচার হওয়ায় নিয়মিত অধিনায়ক তপু বর্মণকে পাওয়া যাচ্ছে না লিগে। তার অনুপস্থিতিতে লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের নেতৃত্ব দেবেন ব্রাজিলিয়ান রবসন দ্য সিলভা। অন্য চারটি দল মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেড, শেখ জামাল ধানমন্ডি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবের নেতৃত্বে থাকবেন যথাক্রমে মালির স্ট্রাইকার সুলেমান দিয়াবাতে, গাম্বিয়ার ফরোয়ার্ড সলোমন কিং, জাপানি মিডফিল্ডার কেতসুয়া ও ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডার দানিলো কুইপাপা। বাকি সাতটি দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্বে আছেন স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের সজল ইসলাম, উত্তর বারিধারার ইয়াসির আহমেদ, চট্টগ্রাম আবাহনীর কৌশিক বড়ুয়া, রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির মাহমুদুল হাসান, সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের জামাল ভূঁইয়া, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের আশরাফুল ইসলাম ও আবাহনী লিমিটেডের নাবিব নেওয়াজ। এরপর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের স্পন্সর টিভিএসের একটি মোটরসাইকেল সামনে রেখে ছবি তোলেন সব ক্লাবের অধিনায়ক।
লিগ উপলক্ষে গতকাল আয়োজিত হলো লোগো উন্মোচন ও অধিনায়কদের পরিচয় পর্ব। প্রতিটি আয়োজনেই ছিল ভিন্ন আমেজ। এভাবেই লিগযাত্রার সূচনাটা দিল আয়োজক বাফুফে ও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান।
কেবল ১২ ক্লাবের অধিনায়করাই নন, অনেক ক্লাবের কোচরাও ছিলেন এ অনুষ্ঠানে। বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন শোনালেন তার সময়কার প্রিমিয়ার লিগ ও বর্তমান প্রিমিয়ারের মধ্যকার পার্থক্যের গল্প। সুন্দর ও প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ লিগের প্রত্যাশার কথা শোনালেন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি ও প্রফেশনাল লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুর্শেদী।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সহসভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও টি-স্পোর্টসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাফোয়ান সোবহান, টিভিএস অটো বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জে ইকরাম হোসেন, টি-স্পোর্টসের সিইও ইশতিয়াক সাদেক, কে-স্পোর্টসের ডিরেক্টর আশফাক আহমেদ, বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা এবং সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাইম সোহাগ।

স্বাধীনতা কাপের শিরোপা হারিয়ে মৌসুম শুরু হয়েছে বসুন্ধরার। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের ঝুঁকিপূর্ণ টার্ফে ফেডারেশন কাপ না খেলায় সেই ট্রফিও চলে গেছে আবাহনী লিমিটেডের শোকেসে। এখন লিগ শিরোপা দখলে নিতে রীতিমতো মরিয়া বসুন্ধরার অধিনায়ক রবসন। তিনি বলেন, আমরা একটা ট্রফি মিস করেছি, এটা কোনো ব্যাপার নয়। এটাই ফুটবল। কখনো জিতব, কখনো হারব। আমরা এখন চেষ্টা করব লিগ জয়ের।
প্রথমবার স্বাধীনতা কাপে খেলতে এসেই সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ। সেমিফাইনালে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে দুর্দান্ত গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে ছিলেন সেন্টারব্যাক দানিলো। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে হারলেও বসুন্ধরাকে ফাইনালের টিকিট পেতে লড়াই করতে হয়েছে অতিরিক্ত যোগ করা সময়ের শেষ মিনিট পর্যন্ত।
লিগেও একই রকম লড়াইয়ের প্রতিশ্রæতি দিলেন অধিনায়ক দানিলো, ‘বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে খেলতে পেরে আমি খুশি। বাফুফেকে ধন্যবাদ লিগ আয়োজনের জন্য। আমরা চেষ্টা করব ভালো করব লড়াই করার।’ বাংলাদেশে এসে বিরিয়ানি খেতে ভালো লাগে বলেও জানিয়েছেন দীর্ঘদেহী এই ডিফেন্ডার।
মোহামেডানের নামের পাশে ‘বড় দল’ তকমা সব সময়ই থাকে। কিন্তু অনেক দিন ধরেই লিগে আর শিরোপা জেতার কথা বলার আত্মবিশ্বাস নেই দলটির। সেটি অধিনায়ক দিয়াবাদের কথাতেই স্পষ্ট, ‘আশা করি লিগে মোহামেডান ভালো করবে। সেরা চারে থেকে লিগ শেষ করতে চাই আমরা।’
শেখ জামালের অধিনায়ক সলোমনের লক্ষ্য বেশি করে গোল করা, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি গোল করতে চাই। কিন্তু দলীয়ভাবে আমরা যত বেশি গোল করব, দলের জন্য সেটি আরো ভালো। আশা করি, আমরা ব্যক্তিগতর চেয়ে দলীয়ভাবে লিগে আরো বেশি গোল করব।’ গত লিগে ১০ গোল করেছিলেন গাম্বিয়ান এ ফরোয়ার্ড।