কিশোরের মৃত্যু : আজমেরী গেøারির দুই চালক কারাগারে

আগের সংবাদ

সিনহা হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত : আদালতে রায় ঘোষণা

পরের সংবাদ

জৌলুস হারাচ্ছে বিপিএল!

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি আসর বিপিএল। বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা এই আসরের জন্য প্রতি বছর মুখিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি এই আসরকে আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা বললেও বাস্তবে তার প্রতিফলন খুব কমই দেখা যায়। নিরাপত্তার অজুহাতে যে পাকিস্তানে যেতে অস্বীকৃতি জানায় মোড়লরা, সেখানেই লুটোপুটি খায় ওদের ক্রিকেটার। বিশ্বমানের সম্প্রচার সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে পিএসএল এখন আইপিএলের ঈর্ষার কারণ। আর বিপিএল ব্যস্ত এডিআরএস নামে হাস্যকর প্রযুক্তির উদ্ভাবনে। সপ্তম আসর শেষ করে অষ্টম আসর চলছে বিপিএলের। এখনো ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সারতে পারেনি বিসিবি। এবার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিতে অনীহা জানিয়েছে বেক্সিমকো ও বসুন্ধরা গ্রুপ।
বসুন্ধরার পরিচালনায় আছে রংপুর রাইডার্স আর বেক্সিমকো পরিচালনা করে ঢাকা গø্যাডিয়েটরসকে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন ‘বলা মুশকিল যে বেক্সিমকো থাকবে কিনা। আমি এখনো জানি না। ছোট সংস্করণ তো! এক বছর, এক বছর করে অনেকে আগ্রহী না। অনেকে দীর্ঘ সময়ের জন্য আগ্রহী। তাহলে ওরা একটা পরিকল্পনা করে নামতে পারে।
আমি জানি না, বসুন্ধরাও আগ্রহী কিনা।’ প্রায় প্রতি আসরে দেখা যায় বিপিএলে অংশ নেয়া বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে পারিশ্রমিকের বিস্তর ফারাক থাকে স্থানীয় ক্রিকেটারদের। তবে এবারের আসরে সেই ফারাকটা কমিয়ে আনার কথা জনিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।
পাপন বলেন, প্রথমে বিপিএল নিয়ে কথা বলার সময় বলেছি যে বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমাদের খেলোয়াড়দের বিশেষ করে ড্রাফটে যারা আছে তাদের পার্থক্য যেন খুব বেশি না হয়। আমাদের ক্রিকেটাররা যেন তাদের প্রাপ্যটাই পায়।
করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে গত বছর মাঠে গড়ায়নি বিপিএল। বিপিএলের মতো করে শুধু দেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ নামে একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল বিসিবি।
এবারের বিপিএলে ঢাকা পর্বে ডিআরএসের অভাব সামনে আসে মিনিস্টার ঢাকা ও সিলেট সানরাইজার্স ম্যাচে। সেই ম্যাচে আম্পায়ারের একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। তামিম ইকবাল আম্পায়ারের এলবিডব্লিওর সিদ্ধান্তে ছিলেন ব্যাপক অসন্তুষ্ট। প্রশ্ন ছিল নাইম শেখের আউট নিয়েও। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে গøাভসে বল ছুঁয়ে প্যাডে লাগলেও এলবিডব্লিওর সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। আন্দ্রে রাসেল ছিলেন সবচেয়ে দুর্ভাগা। পরিষ্কারভাবে রাসেলের ব্যাটে বল লেগে প্যাডে লাগলেও আম্পায়ার সিদ্ধান্ত দেন এলবিডব্লিওর। এক ম্যাচে ৩টি ভুল সিদ্ধান্ত দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের নি¤œমানের আম্পায়ারিং বিশ্ব ক্রিকেট মহলের সামনে ফুটে ওঠে। নানা সমালোচনার পর চট্টগ্রাম পর্ব থেকে শুরু হয়েছে ডিআরএসের বিকল্প পদ্ধতি এডিআরএস।
নিরাপত্তার অজুহাতে যে পাকিস্তানে যেতে অস্বীকৃতি জানায় ক্রিকেট মোড়লরা। বিশ্বমানের সম্প্রচার সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে পিএসএল এখন আইপিএলের ঈর্ষার কারণ। আর বিপিএল ব্যস্ত হাস্যকর নানা ঘটনার জন্ম দিতে। এক দশক আগে যাত্রা করা বিপিএলকে টেক্কা দিয়ে পিএসএল নানাভাবে সফলতার মুখ দেখছে।
পিএসএল জমকালো আয়োজনে চোখে আঙুল দিয়ে পিসিবি দেখিয়েছে তারা কম যায় না। ক্রিকেট কূটনীতির যুগে এটাও যে একটা হাতিয়ার পিসিবি তা অনুধাবন করলেও ভুলে গেছে বিসিবি। বিপিএল নাকি বিশ্বের দ্বিতীয় জনপ্রিয় ফ্রাঞ্চাইজি লিগ। সাত বছর আগে যাত্রা শুরু করে ব্যাপক ধারাবাহিক পিএসএল, আর বিপিএলে ঠিক ঠিকানা নেই ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর। শুধু কী তাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তো তুলনাই চলে না দুটো লিগের। ওদের ফেসবুকে ফলোয়ার যেখানে পঞ্চাশ লাখের উপরে সেখানে বিপিএলের পেজ ফলোয়ার ৫০ হাজারের মতো।
বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভির আহমেদ টিটু বলেছেন, বিপিএল আমরা যে দাবিটা করি যে ওয়ার্ল্ডের আমাদের সেকেন্ড ফ্র্যাঞ্চাইজি জমজমাট একটা আয়োজন। এ বছরও আমাদের ওভাবে কাজ করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেটা আমরা করোনার কারণে করতে পারছি না। মানের কথা যদি ধরি তাহলে এটার শেষ নেই এটা যত ভালো করতে চাওয়া যায় ততই ভালো করা যায়। সেভাবে আমাদের আরো অনেক কিছু হয়তো করতে পারার কথা কিন্তু ওই যে বললাম আমাদের যেই পারিপার্র্শ্বিক অবস্থা সেই অবস্থার কারণে হয়তো আমরা অনেক কিছুর চেয়েও সেটা হয়তো করতে পারেনি।
এবার প্রাইজমানি নিয়েও হাস্যকর ঘটনার জন্ম দিয়েছে বিসিবি। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক জানিয়েছেন, এবারের আসরে দেশি ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক ৭০ লাখ টাকা। চ্যাম্পিয়ন দল পাবে মাত্র এক কোটি টাকা। রানার্সআপ ৫০ লাখ টাকা। বিপিএলের প্রাইজমানি জানার পর অনেকেই হতাশ হয়েছেন।
কারণ প্রতিটি ফ্রাঞ্চাইজিকে দল নিতেই বিসিবির কাছে জমা দিতে হয়েছে ৪ কোটি টাকা করে। এর পর দল সাজানো, কোচিং প্যানেল, টুর্নামেন্ট পরিচালনা সব মিলিয়ে কম করে ৭-৮ কোটি টাকা খরচ হয় প্রতিটি ফ্রাঞ্চাইজির।
তাছাড়া ফ্র্যাঞ্চাইজিরা ভালো স্পন্সর পান না। তবে এত কম প্রাইজমানি কেন? সমালোচকদের প্রশ্ন বিসিবি এখন বিশ্বের চতুর্থ ধনী ক্রিকেট বোর্ড। ৯০০ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে পাপনের বোর্ডের। তবে এমন কার্পণ্যতা কেন?
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের ফ্রাঞ্চাইজি লিগ যথাক্রমে আইপিএল ও পিএসএলের প্রাইজমানির প্রসঙ্গও টানেন অনেকে। সেটিই স্বাভাবিক।
কারণ আইপিএলের গত আসরে চ্যাম্পিয়ন দলের পুরস্কার ছিল বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৩ কোটি টাকা। আর পিএসএলের গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা পেয়েছে সাড়ে ৪ কোটি টাকা এবং সিপিএল চ্যাম্পিয়নের প্রাইজমানি ছিল ৮ কোটি টাকার। সেখানে বিপিএলের জন্য মাত্র এক কোটি টাকা!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়