চট্টগ্রামে রিকশা-বাসের সংঘর্ষে যাত্রী নিহত

আগের সংবাদ

ইসি গঠন বিল ‘তড়িঘড়ি’ পাস : বিএনপি ও জাপার তীব্র বিরোধিতা > সার্চ কমিটিতে থাকবেন একজন নারী সদস্য

পরের সংবাদ

পাকিস্তান সফর নিয়ে সংশয়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : দীর্ঘ ২৪ বছর পর আগামী মার্চে একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা অস্ট্রেলিয়ার। সফরে ৩টি টেস্ট, ৩টি ওয়ানডে ও ১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে স্বাগতিক পাকিস্তান। ৩ মার্চ করাচিতে প্রথম টেস্টের মধ্য দিয়ে শুরু হবে সফরটি। কিন্তু নিরাপত্তা শঙ্কায় পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ১৯৯৮ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তান যাওয়ার কথা অজিদের। নিরাপত্তা শঙ্কায় দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে পাকিস্তান সফর করেনি অস্ট্রেলিয়া। মাঝের সময়গুলোতে সিরিজগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। যে কারণে অজিদের এই পাকিস্তান সফরকে ঘিরে রয়েছে আলাদা আকর্ষণ। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ৩টি টেস্ট ৩টি আলাদা ভেন্যুতে হওয়ার কথা। ৩ মার্চ করাচি টেস্ট দিয়ে সিরিজটি শুরু হওয়ার পর দ্বিতীয় টেস্ট ১২ মার্চ রাওয়ালপিন্ডিতে ও তৃতীয় টেস্ট ২১ মার্চ থেকে লাহোরে হওয়ার কথা। সিরিজের ৩টি টেস্ট ম্যাচই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া সরকার বেশ সতর্ক। অস্ট্রেলিয়াতে সফর করতে যাওয়া দলগুলো সেটি খুব ভালোভাবে টের পেয়েছে। কঠোর নিয়মের মধ্যে থেকে তাদের শেষ করতে হয়েছে সফর। এরই মধ্যে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রণের সংক্রমণ পুরো বিশ্বেই নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে দেশের বাইরে খেলতে এসেও বরাবরের মতোই কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে বেশ সতর্ক অজিরা। অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়া থেকে জানা যায় বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় সফরে ভ্রমণ কমিয়ে আনতে একই ভেন্যুতে ৩টি টেস্ট আয়োজনের প্রস্তাব দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এ ব্যাপারে পিসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, টানা ১৯ দিন একই ভেন্যুতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন সম্ভব নয়। আলাদা ৩টি ভেন্যুতে ৩টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড সিরিজটি আয়োজনের জন্য বদ্ধপরিকর। অজিরা নিজেদের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়েই পাকিস্তান সফরে আসতে চলেছে এমনটাই আশা করছে পিসিবি। পিসিবি কর্মকর্তার থেকে আরো জানা যায়, ‘করাচি, রাওয়ালপিন্ডি এবং লাহোর ৩টি ভেন্যুতেই যতটা সম্ভব উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করার যথাযথ চেষ্টা করবে পিসিবি। মাঠে দর্শক প্রবেশের সিদ্ধান্ত পরে নেয়া হবে বলেও জানান।
খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে থাকায় দীর্ঘ সময় পাকিস্তানের মাঠে বন্ধ ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। নিজেদের মাটিতে সর্বশেষ আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল ১৯৯৬ সালে। ২০০৯ সালে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটারদের ওপর হামলার ঘটনার পর এখনো ক্রিকেটাররা পাকিস্তান যাওয়ার আগে নিরাপত্তা নিয়ে ভাবেন। ২০০৯ সালে ওই সন্ত্রাসী হামলার পর ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশে টেস্ট ক্রিকেট আয়োজন করতে পারেনি পিসিবি।
২০২১ সালেও নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে শেষ মুহূর্তে পাকিস্তান সফর বাতিল করে নিউজিল্যান্ড এবং পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ড দল পাকিস্তান সফর বাতিল করে একই অজুহাতে। এর পর ম্যাচের ঠিক আগে সফর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড সফর বাতিল করলেও অজিদের সফরের সিদ্ধান্ত পাকিস্তানে খেলতে আসার পক্ষেই থাকে। পাকিস্তানের নিরাপত্তা ইস্যু পর্যবেক্ষণ করেই তারা সফরটিতে আসতে চায়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের প্রতিবেদনে জানানো হয় সম্প্রতি সময়ে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা বেড়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অস্ট্রেলিয়া দলের কিছু ক্রিকেটার। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এক সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা যায় গত বছরের ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। সফরের বেশির ভাগ সময় পাকিস্তান দলের যে শহরে থাকার কথা সেই লাহোরের এক বাজারেই গত সপ্তাহে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন আহত ও তিনজন নিহত হয়। যা খেলোয়াড়দের মধ্যে দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করেছে। যে কারণে সিরিজটিকে ঘিরেও তৈরি হয়েছে শঙ্কা। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার দেয়া এক বিবৃতি থেকে জানা যায়, বর্তমানে তাদের বিবেচনায় খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা সবার আগে, সফরের পরিকল্পনা নিয়ে এবং অস্ট্রেলিয়া সরকারের এবং পিসিবির সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রেখে কাজ করে যাচ্ছে সিএ। অজিদের প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি জানিয়েছেন তার কাছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুব শক্তিশালী বলে মনে হয়েছে। দুই দেশের বোর্ড এ বিষয়টা নিয়ে কাজ করছে। আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতি পেলে তারা দল ঘোষণা করতে পারবে।
বর্তমানে দুটি দলই রয়েছে খুবই ভালো অবস্থানে। পরিস্থিতি ঠিক থেকে ২৪ বছর পর সফরটা হলে লড়াই জমে উঠবে দুই দলের মধ্যে। গত বছর টি-টোয়িন্টি বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়া দল দেশে ফিরেই অ্যাশেজে বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। টেস্টে দারুণ ফর্মে আছে দলটি। তবে তিন টেস্টের জন্য মূল দল থেকে বাদ পড়তে পারে ঝাই রিচার্ডসন। অন্যদিকে আইসিসির বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের ৪টি পুরস্কারের ৩টিই ঘরে তুলেছে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা পাকিস্তান দল। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বোলার শাহিন আফ্রিদি তো বছরের সেরা খেলোয়াড়ই নির্বাচিত হয়েছেন। ওয়ানডেতে অধিনায়ক বাবর আজম এবং টি-টোয়েন্টিতে বর্ষসেরা রিজওয়ান। টেস্ট সিরিজের পর ২৯ মার্চ থেকে লাহোরে শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ৩১ মার্চ ও ২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় ওয়ানডে। ম্যাচগুলো সব বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ। ৫ এপ্রিল লাহোরে একমাত্র টি-টোয়েন্টি খেলে পাকিস্তান পাকিস্তান সফর শেষ করবে অজিরা। সব কিছু ছাপিয়ে ২৪ বছর পর সফরটা হলে লড়াইটা দারুণ জমে উঠবে দুই দলের মধ্যে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়