নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে রড মিস্ত্রির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ওমিক্রনে ঝুঁকি বাড়ছে শিশুদের : রোগী বেড়েছে ৫ থেকে ৬ গুণ, উপসর্গ নিয়েও হাসপাতালে ভিড় করছেন রোগীরা

পরের সংবাদ

সুজনের প্রশ্ন : ইসি আইন নিয়ে এত তাড়াহুড়ো কেন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশন আইন নিয়ে সরকারের এত তাড়াহুড়ো কেন, এতে মনে হচ্ছে ইসি আইন করা নিয়ে সরকারের উদ্দেশ্য ভালো নয় বলে মন্তব্য করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন।
গতকাল রবিবার এক অন লাইন সংবাদ সম্মেলনে সুজন বলেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইন করার মতো সময় এখন নেই। এটি তাড়াহুড়া করে করা যাবে না। এখন সরকার কোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা না করে হঠাৎ আইনের খসড়া সংসদে পাঠিয়েছে। এতে মনে হচ্ছে ইসি আইন নিয়ে সরকারের উদ্দেশ্য ভালো নয়। আগামী সংসদ নির্বাচনে জয়ের জন্য পছন্দের ইসি নিয়োগ করতে চায় সরকার।
গতকাল সন্ধ্যায় ‘সরকার প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন আইন এবং নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইসি নিয়োগে ২০১৭ সালের প্রজ্ঞাপন ও খসড়া আইনের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। খসড়া দেখে এটিকে ইসি নিয়োগ আইনের চেয়ে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন বেশি মনে হয়েছে। সব পক্ষের মতৈক্যের ভিত্তিতে যুগোপযোগী ও যথাযথ আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে সুজন।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার। তিনি বলেন, ইসির জন্য সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত নাম প্রকাশ ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি খসড়ায় নেই। এর মানে নিয়োগ নিয়ে জনগণ অন্ধকারেই থেকে যাবে।
সুজনের সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, সুজন খসড়া দিলে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, আইন করার মতো সময় নেই। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সংলাপের সময়ও তিনি একই কথা বলেছেন। হঠাৎ করে আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হলো, সংসদেও উঠে গেল। সরকারের এখানে অসৎ উদ্দেশ্য আছে, তারা আগের মতো নির্বাচন করতে চায়।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুল মতিন বলেন, ইসি গঠনের সাচিবিক দায়িত্ব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের হাতে থাকলে সার্চ কমিটির সদস্যদের কিছু করার থাকে না। সদস্যদের হাতে তালিকা ধরিয়ে দেয়া হয়। সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া রাষ্ট্রপতিকে সব কাজ করতে হয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে। তাই রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে সার্চ কমিটি বা ইসি গঠন করতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া ইসি নিয়োগের জন্য সংবিধান সংশোধন করে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতা দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, জনগণের সঙ্গে ছলচাতুরি করতে সরকার ইসি আইনকে বেছে নিয়েছে, এটা তো হতে পারে না। সরকার আগামী নির্বাচনে জয়ের জন্য এটি করেছে। সরকার মনোনীত সার্চ কমিটির মাধ্যমে সরকারের পছন্দের ইসি গঠন হবে। সারা বিশ্বেই কর্তৃত্ববাদী সরকার এমন একটা ব্যবস্থা করে, যাতে নির্বাচনে তারা জেতে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন সংসদে সার্চ কমিটিতে কারা আছেন তাদের নাম প্রকাশ ও তা নিয়ে আলোচনার ব্যবস্থা থাকা দরকার বলে জানান। তিনি বলেন, তাড়াহুড়ো করে গঠিত ইসি আইন নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে বিতর্কের সৃষ্টি হবে।
সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত সবার নাম প্রকাশ করতে হবে। তাহলে তাদের অতীত সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। বর্তমান সিইসি কে এম নুরুল হুদা বিএনপি সরকারের ভুক্তভোগী আর আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী ছিলেন। নিয়োগের আগে তার নাম প্রকাশ পেলে এগুলো সামনে আসত। নিজেদের মতো নির্বাচন করতে সরকার কারো সঙ্গে আলোচনা না করে ইসি আইন করেছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকারের মধ্যে একটা নার্ভাসনেস কাজ করছে। তাই ইসি আইন নিয়ে তাড়াহুড়ো করছে। জনগণের ভোটের অধিকার যদি বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে আইন বা সার্চ কমিটি কোনো কাজে আসবে না। নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করার মনোবৃত্তি এখনই পরিতাজ্য। ইসি নিয়োগের প্রক্রিয়া আরো অংশগ্রহণমূলক করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়