ক্ষমা চেয়েছেন চীনা নাগরিক, টাকা চাননি সার্জেন্ট

আগের সংবাদ

জাতীয় পুরুষ বেসবল শুরু

পরের সংবাদ

শাহজাদপুরে গোষ্ঠীগত সংঘর্ষ : বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে এক হাজার পরিবার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ীতে গোষ্ঠীগত দ্ব›েদ্বর জেরে গত বুধবারের সংঘর্ষে মোল্লা গোষ্ঠীর ইয়ারফিন (৩৫) নিহত হওয়ার পর ফকির পাড়া এখন জনশূন্য হয়ে পড়েছে। বুধবার সকাল থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে ফলাবিদ্ধ হয়ে শরিফুল ইসলাম ইয়ারফিন নিহত হয় এবং পুলিশসহ উভয় পক্ষের শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এ ঘটনার পর বাঘাবাড়ীর ফকিরপাড়ার প্রায় ১ হাজার পরিবার তাদের আসবাবপত্র, ধানচাল, গরু-ছাগল, হাঁস মুরগি নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এদের অনেকে পার্শ্ববর্তী চিনানারী, হাড়িয়া, মোনামারা, বহলবাড়ী, রাউতারা, চড়াচিথুলিয়া, সেলন্দাহ ও বড়পাথাইল হাট গ্রামে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। কয়েক দফা লুটপাটের পর ফের লুটপাট ও হামলা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ায় ফকিরপাড়া জনশূন্য হয়ে সুনসান অবস্থান বিরাজ করছে।
প্রামাণিক গোষ্ঠীর আব্দুল লতিফ অভিযোগ করে বলেন, মোল্লা গোষ্ঠীর আমিরুল মোল্লা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী ফকির গোষ্ঠী ও প্রামাণিক গোষ্ঠীর ওপর দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার নির্যাতন ও নারী ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। এর জের ধরে গত বুধবার ফকির গোষ্ঠী এবং প্রামাণিক গোষ্ঠীর ওপর মোল্লা গোষ্ঠী হামলা করলে এবং তার প্রতিবাদে এই ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে মোল্লা গোষ্ঠীর বাবু মোল্লা এবং খলিল মোল্লা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রামাণিক ও ফকির গোষ্ঠীর লোকেরা বিনা প্ররোচনায় আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা ও বাড়িঘর লুটপাট করে এবং আমাদের গোষ্ঠীর ইয়ারফিন নামের একজনকে হত্যা করে।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, নিহত ইয়ারফিনের স্ত্রী রিতা খাতুন (৩০) ৯১ জনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করে গত বৃহস্পতিবার একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার দিন পুলিশ ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ২২ জন ব্যক্তি ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না থাকার কথা জানান তাদের স্বজনরা। এদের আত্মীয় স্বজনরা থানায় ভিড় করছে। জানা যায়, বাঘাবাড়ীতে গোষ্ঠীগত দাঙ্গা দীর্ঘদিনের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোষ্ঠীগত দাঙ্গায় প্রায় ৩০-৪০ বছর আগে মোল্লা গোষ্ঠীর উকিল মোল্লা, মোবারক মোল্লা ও প্রামাণিক গোষ্ঠীর সামাদ প্রামাণিক নিহত হয়। সর্বশেষ গত বুধবার নিহত হয় মোল্লা গোষ্ঠীর ইয়ারফিন।
শাহজাদপুর থানার ওসি (তদন্ত) মঈনুল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা পুলিশের ওপরও আক্রমণ চালায়। এ সময় এসআই পীযুষ সাহা, এসআই ফারুক আহমেদ, এসআই আসাদুজ্জামান, কনস্টেবল ঝন্টু প্রামাণিক ও নিলয় হাসান আহত হয়।
উল্লেখ্য, বুধবার সকাল থেকে দিনভর ফকির গোষ্ঠী এবং মোল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও পুলিশসহ উভয়পক্ষের প্রায় শতাধিক লোক আহত হয় এবং এ ঘটনায় বাঘাবাড়ী এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়