কাগজ প্রতিবেদক : সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সেই সঙ্গে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। তবে এর মধ্যেও পাঁচ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
তবে শেষ দুই ঘণ্টায় বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়। এতে মূল্য সূচকের বড় উত্থান আটকে যায়। এমনকি প্রধান মূল্যসূচক ও বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে ইসলামী শরিয়াহ্ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ৭ হাজার ১০৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৬৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬০১ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৭৩৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১৩৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৬২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৪টির। আর ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে পাঁচটির শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে।
এই পাঁচ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- কেয়া কসমেটিকস, দেশবন্ধু পলিমার, গোল্ডেন সন, গেøাবাল হেভি কেমিক্যাল এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হলেও এক পর্যায়ে বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। এদিকে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৭১ কোটি ৪০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪১ কোটি ৩১ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সাইফ পাওয়ার টেক, এসিআই, জিপিএইচ ইস্পাত, পাওয়ার গ্রিড, অ্যাকটিভ ফাইন, লিন্ডে বিডি এবং এশিয়া ইন্স্যুরেন্স।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি ৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩০টির এবং ৫৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
৭ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ
ব্যাংকে : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাত কোম্পানির ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের ব্যাংক হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানি সাতটি হলো : স্কয়ার ফার্মা, স্কয়ার টেক্সটাইল, জেনেক্স ইনফোসিস, বিডি ল্যাম্পস, বেক্সিমকো ফার্মা, বেক্সিমকো এবং শাইনপুকুর সিরামিক। জানা গেছে, সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে স্কয়ার ফার্মা ৬০ শতাংশ নগদ, স্কয়ার টেক্সটাইল ২০ শতাংশ নগদ, জেনেক্স ইনফোসিস ১০ শতাংশ নগদ, বিডি ল্যাম্পস ২০ শতাংশ নগদ, বেক্সিমকো ফার্মা ৩৫ শতাংশ নগদ, বেক্সিমকো ৩৫ শতাংশ নগদ এবং শাইনপুকুর সিরামিকের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২.৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। যা কোম্পানিগুলোর বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদন করা হয়।
ডরিন পাওয়ারের মুনাফায় উন্নতি : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ডরিন পাওয়ারের চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ২৬ শতাংশ বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৪.৮৬ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ৩.৮৫ টাকা। এ হিসেবে কোম্পানিটির মুনাফা ১.০১ টাকা বা ২৬ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২.৩৩ টাকা। আগের অর্থবছর একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ২.০৫ টাকা। এ হিসেবে কোম্পানিটির মুনাফা ০.২৮ টাকা বা ১৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য পুনর্মূল্যায়নসহ দাঁড়িয়েছে ৪৭.৬৯ টাকায়।