চট্টগ্রামে সৈকতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিটি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও : বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন > ঢিলেঢালা অভিযানে ১১ জনকে জরিমানা

পরের সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পাহাড় কেটে সাবাড়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : কসবায় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় একের পর এক পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। এজন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন স্থানীয় লোকজন ও সচেতন মহল। পরিবেশ অধিদপ্তরে ফোন দিলেও ত্বরিত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযোগও রয়েছে। নির্বিঘেœ পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।
কিছু দিন ধরে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে পাহাড় কেটে ওই মাটি দিয়ে নিচু জমি ও জলাশয় ভরাট করার সময় স্থানীয়রা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুরুল আমিনকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার সময় ত্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন দিলে সেখান থেকে জরুরি মেসেজ পেয়ে কসবা থানা পুলিশ রাত ১১টায় ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থলেই একটি টিলার আড়ালে ভেকু মেশিনটি লুকিয়ে রাখে। আটটি ট্রাক্টরে রাতের আঁধারে এদিক-সেদিক ছুটে জড়িতরা পালিয়ে যায়। পুলিশ মাটি কাটায় জড়িত জয়নগর বাজারের জাহাঙ্গীর আলমের ফার্নিচার দোকানে গিয়ে মাটি কাটতে নিষেধ করে। এছাড়া ওই এলাকায় একাধিক চক্র পাহাড়ের মাটি কাটায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম মধুপুর এলাকায় কাতার প্রবাসী মাসুদ মিয়ার পাহাড় কেটে জয়নগর বাজারের পাশে নিচু জমি ভরাট করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম ও বোরহান উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে গত ৩-৪ দিন ধরে রাতের আঁধারে এই পাহাড়ের মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। মাটি দিয়ে নিচু ফসলি জমি ও জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা পাহাড় কাটা বন্ধের বিষয়ে কোনো ভূমিকা না রাখার অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা প্রভাবশালী মহলের লোকজনের পাহাড় কাটায় মদত রয়েছে বলে অভিযোগ আছে।
অভিযোগ পেয়ে গত রবিবার জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পরিদর্শক জুবায়ের হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু ওই রাতেই আবারো মাসুদ মিয়ার পাহাড়ের মাটি কেটে ৬টি ট্রাক্টর দিয়ে সরাতে থাকলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে তারা কসবা থানাকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে রাত সোয়া ২টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে শ্রমিকরা দ্রুত গা ঢাকা দেয়। পুলিশ চলে আসার পর রাতভর পাহাড়ের অবশিষ্ট অংশ কেটে মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর হোসেন ও বোরহান উদ্দিন জানান, প্রবাসী মাসুদ মিয়া তাদের আত্মীয় হওয়ায় রাতের আঁধারে পাহাড়ের মাটি কেটে নিয়ে তাদের নিজস্ব ফসলি জমি ভরাট করা হচ্ছে। তারা গত ১৪ ডিসেম্বর উপজেলা প্রশাসনের বরাবর আবেদন করে মাটি কেটেছেন বলে জানান।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কসবা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মুন্সি রুহুল আমিন টিটু বলেন, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। প্রশাসনের উদাসীনতাও এর জন্য দায়ী। কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাটি কাটায় জড়িতরা পালিয়ে যায়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জীব সরকার বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে আবেদন জানালেও কোনো অনুমতি দেইনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়