রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের আগুন, পুড়ল সহ¯্রাধিক ঘর

আগের সংবাদ

তিন জট থেকে মুক্তির প্রত্যাশা > নাসিক নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মতামত : জলজট, যানজট ও আবর্জনা জট নারায়ণগঞ্জবাসীর গলার কাঁটা

পরের সংবাদ

স্মরণসভায় বক্তারা : নারী আন্দোলনের রোল মডেল আয়শা খানম

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্ম ও বিকাশ প্রক্রিয়ায় আয়শা খানমের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে সমাজ পরিবর্তনের উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ৫০ বছরে বাংলাদেশে নারীদের উন্নয়নে, জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায়, নারীবান্ধব আইন প্রণয়নে যারা অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে আয়শা খানম অন্যতম। নারী আন্দোলনের রোল মডেল আয়শা খানম সব শ্রেণির নাগরিকের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সবাইকে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য প্রয়াস করে গেছেন।
গতকাল সোমবার ‘শ্রদ্ধায় স্মরণে আয়শা খানম’ শীর্ষক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। সংগঠনের সাবেক সভাপতি আয়শা খানমের প্রথম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে অনলাইনে এই স্মরণসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে সভার শুরুতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি। আরো বক্তব্য রাখেন- নাট্যজন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সুদীপ্ত মুখার্জি, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, মনি সিংহ-ফরহাদ ট্রাস্ট্রের সভাপতি শেখর দত্ত, নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, ব্লাস্ট্রের অনারারি নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কাউখালী শাখার সভাপতি সুনন্দা সমাদ্দার। সভার শুরুতে সংগীত পরিবেশন করেন সুষ্মিতা আহমেদ।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, আয়শা খানম বিরল মানুষের একজন- যিনি তারুণ্যে নেয়া সংকল্পকে পূর্ণ করতে আমৃত্যু কাজ করেছেন। নারীবান্ধব পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে যেসব মানুষ নিরলসভাবে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে তিনি একজন, তার মতামত তিনি কারো ওপর চাপিয়ে দেননি বরং এমনভাবে কাজ করতেন- যা সবাইকে অনুপ্রাণিত করত।
সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, আয়শা খানম একজন দৃঢ়চেতা, মানবিক গুণসম্পন্ন নেতৃত্বের অধিকারী ছিলেন। আজকে তার প্রয়াণ দিবসে আমরা শোক করব না, কর্মময় জীবনের উদযাপন করব। ৫০ বছরে বাংলাদেশে নারীদের উন্নয়নে, জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায়, নারীবান্ধব আইন প্রণয়নে যারা অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে আয়শা খানম অন্যতম। তিনি সরকারের সঙ্গে ইউএনডিপিকে নারীবান্ধব নানা কর্মকৌশল গ্রহণে তার মূল্যবান মতামত দিয়ে সবসময় সহযোগিতা করেছেন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সমাজ পরিবর্তনের উন্নয়নে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আয়শা খানম। নারী আন্দোলনের রোল মডেল হিসেবে তিনি আমাদের সবার কাছে পরিচিত, শুধু নারী আন্দোলন নয় সব শ্রেণির নাগরিকের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সবাইকে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য প্রয়াস চালিয়েছেন।
শেখর দত্ত বলেন, ৬০-এর দশকে জাতীয় জাগরণ যত অগ্রসর হয় তত নারী আন্দোলনও অগ্রসর হতে থাকে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন নারী অগ্রভাগে নেতৃত্ব দেন তাদের মধ্যে আয়শা ছিলেন অন্যতম। বিপ্লবী নারী আন্দোলনের সঙ্গে সংস্কার পরিবর্তনের ধারার আন্দোলনকে যুক্ত করে এগিয়ে নিতে এবং কেন্দ্র থেকে জেলার দলমতনির্বিশেষে নারীদের একত্রিত করে আন্দোলন চালিয়ে নিতে আয়শা খানমের অবদান অনস্বীকার্য।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, এমপি থাকাকালীন (১৯৯৬-২০০০) থেকে আয়শা খানমকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। যখন নারী ইস্যুতে কেউ এগিয়ে আসতে পারেনি তখন তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে এককভাবে জোরালো ভূমিকা রাখেন। নারীবান্ধব নানা আইন সংস্কারে সরকারের নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও তিনি আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। নারীর ক্ষমতায়ন ইস্যুতে আয়শা খানম একটি অনন্য নাম হয়ে থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আয়শা খানম যে দীপ জ্বালিয়ে গেছেন তা কীভাবে আরো প্রজ¦লিত করা যায় তা আলোচনার জন্য আজকের এই স্মরণসভা। যে ব্রত নিয়ে তিনি ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিকে আসেন, সেই একই ব্রত নিয়ে তিনি মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন। প্রতিটি আন্দোলনের সঙ্গে সমন্বয় করে নারী আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে যারা কাজ করেছেন তাদের মধ্যে আয়শা খানম অন্যতম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়