রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের আগুন, পুড়ল সহ¯্রাধিক ঘর

আগের সংবাদ

তিন জট থেকে মুক্তির প্রত্যাশা > নাসিক নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মতামত : জলজট, যানজট ও আবর্জনা জট নারায়ণগঞ্জবাসীর গলার কাঁটা

পরের সংবাদ

কমিটি নিয়ে ব্যস্ত সিলেট বিএনপি : জেলা সম্মেলনের আগেই পদ-পদবীর লবিং

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহিদুল ইসলাম, সিলেট ব্যুরো : চলতি মাসেই সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা কমিটি গঠন করতে হবে- এমন গুঞ্জনে হঠাৎ প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে সিলেটের বিএনপি শিবিরে। প্রায় আড়াই বছর পর নড়েচড়ে বসেছে দ্রুত কমিটি নিশ্চিত করতে গঠন করা আহ্বায়ক কমিটিও। আর কমিটিতে পদ পেতে লবিং শুরু করেছেন পদ প্রত্যাশীরা।
৬ বছর আগে ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সভাপতি আবুল কাহের শামীম ও সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের সেই কমিটি ভেঙে যায় ২০১৯ সালের শেষ দিকে। এরপর থেকেই মূলত কামরুল হুদা জায়গীরদারের আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমেই চলছিল সিলেট বিএনপি। প্রেস রিলিজ আর ঘরোয়া বৈঠকে ব্যস্ত সিলেট বিএনপিকে কদাচিৎ রাজপথে দেখা যেত। তবে এ বছরের শুরু থেকেই হঠাৎ কর্মতৎপরতা বেড়ে গেছে আহ্বায়ক কমিটির। গত ১০ দিনে অন্তত ৬টি ইউনিটের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কাউন্সিল সম্পন্ন করেছেন তারা।
আগামী ২১ জানুয়ারির মধ্যে সিলেট বিএনপির ১৮ ইউনিটের সবগুলোরই কাউন্সিল শেষ করতে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হাসান জায়গীরদার। ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা বসে নেই। এ মাসের ভেতরেই আমাদের সব শেষ করতে হবে। এজন্য প্রতিদিন ৩-৪টি করে ইউনিয়ন ও একটি বা দুটি করে ইউনিট পর্যায়ে সম্মেলন করা হচ্ছে। আহ্বায়ক কমিটির বেশির ভাগ নেতাই কাজ করছেন। আর প্রতিটি ইউনিটে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে জেলা সম্মেলন কিংবা কমিটি গঠনের ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে নারাজ এই বিএনপি নেতা।
তবে আহ্বায়ক মুখ ফুটে কিছু না বললেও ইতিমধ্যে জেলা কমিটিতে পদ পেতে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন সিলেট বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। এর মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতারাও আছেন। বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, জেলা বিএনপির সভাপতি হতে জোর লবিং চালাচ্ছেন সিলেট বিএনপির বহুল আলোচিত তিন নেতা- জেলা বিএনপির বিগত কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীম, কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন- জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমরান আহমদ চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, জেলা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরুল হাসান শাহীন ও বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ। ইতোমধ্যেই কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন তারা।
সভাপতি পদে প্রার্থীদের মধ্যে তিনজনই সিলেট বিএনপিতে সমান জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা। সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম দায়িত্বে ছিলেন দলের দুঃসময়ে। প্রতিকূল পরিবেশেও তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন। এছাড়া, সিনিয়র নেতা হওয়ার কারণে দলের ভেতরে রয়েছে তার আলাদা গ্রহণযোগ্যতা। অপর দিকে কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক দলের ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত। সুবক্তা হিসেবে পরিচিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাককে সভাপতি হিসেবে দেখতে চাওয়া নেতাকর্মীর সংখ্যা কম নয়। আর আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী যুবদলের সহসভাপতি ছিলেন জোট সরকারের আমলে। প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন হওয়ার কারণে সিলেট বিএনপিতে শক্ত অবস্থান আছে তারও। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের ভোটব্যাংক বেশ শক্তিশালী। বিগত কমিটিতে তার ভূমিকা, নেতাকর্মীদের প্রতি আন্তরিকতার কারণে জনপ্রিয়তায় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে তিনি। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও সম্মেলন ও কাউন্সিলের আগেই আলী আহমদ দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন সিলেটের নেতারা।
আলী আহমদের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াইয়ে নামছেন সাবেক তিন ছাত্রনেতা। এদের মধ্যে এডভোকেট এমরান আহমদ ও আব্দুল আহাদ খান জামাল ছিলেন জেলা সভাপতি। আর কামরুল হাসান শাহীন ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি। বর্তমানে আব্দুল আহাদ খান জামাল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হওয়ায় আরেকটি পদে তাকে মূল্যায়ন করা হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও প্রচারণায় কমতি নেই তার। অপরদিকে তৃণমূলে জোর সমর্থন আছে এমরান ও শাহীনের।
এ ব্যাপারে কামরুল হাসান শাহীন ভোরের কাগজকে বলেন, আমি কাউন্সিলে আস্থা রাখি। গত কয়েক বছর সিলেটের বিএনপি রাজনীতিতে কার কী ভূমিকা তা সবাই জানে। তাই কাউন্সিলররা যাকে ভোট দিয়ে নেতা বানাবেন তিনিই নেতা, আর বাকি সবাই কর্মী। আশা করছি কাউন্সিলররা তাদের যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজে বের করার সুযোগ পাবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়